কলকাতা, 26জুন : কোরোনা রোগীকে ভরতি করতেঅস্বীকার এবং রোগী ও তার পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠল সল্টলেকের একটিবেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। হাসপাতালের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা ও আর্থিকক্ষতিপূরণের দাবিতে ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এসটাব্লিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশনেঅভিযোগ জানালেন আক্রান্তের পরিবারের সদস্যরা।
রাজারহাটের67বছরেরএক প্রৌঢ় কোরোনা আক্রান্ত হন। তিনি মানবাধিকার সংগঠনের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীরসদস্য। জানা গিয়েছে,গত22জুন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরই ওই প্রৌঢ়অসুস্থ বোধ করেন। জ্বর ও গলা ব্যথা হওয়ায় তিনি সেই দিন দুপুরেই সল্টলেকের একটিবেসরকারিCOVIDহাসপাতালে চিকিৎসা করাতে যান। সেখানেতার সোয়াব নমুনা সংগ্রহ করে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিকেলে হাসপাতালের চিকিৎসকফোন করে জানান তিনি কোরোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
ওইপ্রৌঢ়ের ছেলের অফিসের সঙ্গে হাসপাতালের টাই - আপ থাকায় সেখানেই ভরতি হওয়ারসিদ্ধান্ত নেন তিনি। এরপর হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য যোগাযোগ করা হলেহাসপাতালের তরফে বলা হয়,অ্যাম্বুলেন্সনেই। অন্যত্রও অ্যাম্বুলেন্সের খোঁজ করে না মেলায় রোগী নিজেই গাড়ি চালিয়েহাসপাতালে পৌঁছান। তবে সেই হাসপাতলে নয়,মাঝরাতে বেলেঘাটারID&BGহাসপাতালে ভরতি হন ওই প্রৌঢ়।
রোগীরপরিবারের অভিযোগ,সল্টলেকেরওই বেসরকারি হাসপাতালে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বাইরে থেকেই বলা হয়,বেড নেই। এ দিকে তখনও পর্যন্ত এইরোগীর সোয়াবের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট ওই হাসপাতালেই রয়েছে। রোগী হাসপাতালেরচিকিৎসক তাঁকে ভরতি হতে বলার কথা জানালে বাউন্সারের মতো কয়েকজন লোক হাসপাতালেরসামনে সিঁড়ির উপর দাঁড়িয়ে কথা বলে জানান,এই হাসপাতালে বেড নেই। রোগীর নমুনাপরীক্ষা রিপোর্ট দিয়ে দেওয়া হয়। এর পরে অন্য কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে খোঁজনিয়ে দেখা যায়,কোথাওবেড নেই।
অবশেষেরাত আটটা নাগাদ বেলেঘাটারID&BGহাসপাতালে এই রোগীকে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু বেলেঘাটারহাসপাতালের তরফেও প্রথমে এই রোগীকে ভরতি নেওয়া হয়নি । রোগীর পরিবারকে বলা হয়,স্বাস্থ্যভবন থেকে বলা না হলে ভরতিনেওয়া হবে না। স্বাস্থ্যভবনের অনুমতি নিয়ে আসার জন্য রোগীর এক আত্মীয় রওনা দেন।স্বাস্থ্যভবনে পৌঁছে তিনি জানতে পারেন,ওই প্রৌঢ় যে কোরোনা আক্রান্ত হয়েছেন,তার রিপোর্টICMR-এর ওয়েবসাইটে আপলোড হয়নি। বেসরকারিওই হাসপাতালে গিয়ে এই রিপোর্ট আপলোড করার কথা বলা হয়,তার পরে স্বাস্থ্য ভবনের যোগাযোগ করতেবলা হয়। তখন ঘড়িতে রাত প্রায় সাড়ে নটা। এদিকে,বেলেঘাটার ওই হাসপাতালে ভরতির জন্যগাড়িতেই অপেক্ষা করতে থাকেন রোগী। সেই সময়ে হাসপাতালে দুই জন চিকিৎসক উদ্যোগীহয়ে এই রোগীকে ভরতির ব্যবস্থা করেন। অবশেষে রাত প্রায় দশটা নাগাদ এই রোগীকে ভরতিনেওয়া হয় বেলেঘাটার ওই হাসপাতালে।
এইঘটনায় এই রোগীর ব্যক্তিগত বন্ধু এবং মানবাধিকার ওই সংগঠনের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীরসদস্য রঞ্জিত শূর বলেন, "গত24জুনওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এসটাব্লিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশনে আমি অভিযোগজানিয়েছি। অভিযোগ পত্রে জানানো হয়েছে,একজনCOVID-19রোগীকে সল্টলেকের ওই বেসরকারিহাসপাতাল ভরতি নিতে অস্বীকার করেছে । মোটা অংকের টাকায়COVID-19পরীক্ষাকরানো হয়েছে। বাউন্সার মতো লোকজনেরা রোগী এবং আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারকরেছেন।"
এই বিষয়ে বেসরকারি ওই হাসপাতালকর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে,এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। হাসপাতালে যে বেড নেই,তা রোগী এবং তাঁর সঙ্গে যাঁরা ছিলেন,তাঁদেরকে বার বার বলা হয়েছিল। এই হাসপাতালের বেডখালি রয়েছে কিনা,তা যে কেউ স্বাস্থ্যদপ্তরের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখে নিতে পারেন।