পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / briefs

ইন্টারভিউ নিলেও বেরোবে না রেজ়াল্ট; হাইকোর্টের নির্দেশে হতাশ আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীরা

ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী প্যানেল প্রকাশ করার কথা স্কুল সার্ভিস কমিশনের । তাই হাইকোর্টের এই নির্দেশ বহাল থাকলে সেই প্যানেল প্রকাশ করতে পারবে না SSC । ফলে, স্বাভাবিকভাবেই আবার থমকে যেতে পারে নিয়োগ প্রক্রিয়া । এই আশঙ্কায় হতাশ আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীরা ।

হাইকোর্ট

By

Published : Jul 2, 2019, 5:52 AM IST


কলকাতা, 2 জুলাই : বহুদিন পর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় গতি এলেও কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে আবার বাধার সম্মুখীন আপার প্রাইমারির নিয়োগ প্রক্রিয়া । কেউ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, আবার কারও কাছে 'কেস' শব্দটাই বিভীষিকা হয়ে উঠেছে । আবার কেউ দুষছেন স্কুল সার্ভিস কমিশনকেই । সবমিলিয়ে আপার প্রাইমারির ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শুরু হলেও হাইকোর্টের নির্দেশে আপার প্রাইমারির সহকারি শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন চাকরিপ্রার্থীরা।

আজ থেকে শুরু হবে আপার প্রাইমারির ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া । কিন্তু, মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ইন্টারভিউ নিলেও স্কুল সার্ভিস কমিশন এদের রেজ়াল্ট বের করতে পারবে না । গতকাল একটি মামলায় এই নির্দেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্য। চলতি বছরের মার্চ মাসে একটি মামলা করেন কয়েকশো আপার প্রাইমারি প্রার্থী। তাঁদের মূল দাবি ছিল, প্রশিক্ষিতদের ডাকা হচ্ছে না । কিন্ত, অপ্রশিক্ষিতরা ডাক পাচ্ছে । সেই মামলায় হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদেরকে আগে সুযোগ দিতে হবে । কিন্তু, আয়েশা খাতুন নামে এক প্রশিক্ষণহীন প্রার্থীকে 10 জুলাই ইন্টারভিউর জন্য ডাকা হয়েছে । অথচ, এখনও বহু প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রার্থী রয়েছে । এই মর্মে করা আর একটি মামলায় গতকাল এই নির্দেশ দিল হাইকোর্ট । যদিও, আজ এই মামলার ফের শুনানি হবে।

ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী প্যানেল প্রকাশ করার কথা স্কুল সার্ভিস কমিশনের । তাই হাইকোর্টের এই নির্দেশ বহাল থাকলে সেই প্যানেল প্রকাশ করতে পারবে না SSC । ফলে, স্বাভাবিকভাবেই আবার থমকে যেতে পারে নিয়োগ প্রক্রিয়া । এই আশঙ্কায় হতাশ আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীরা ।

। ইন্টারভিউতে ডাক পাওয়া প্রার্থী অতনু ঘোষ বলেন, "আমরা হতাশায় ভুগছি। আমরা চাইছিলাম কমিশন স্বচ্ছভাবে ও দ্রুত নিয়োগ করুক । কোর্টের এই নির্দেশে ফলে নিয়োগ পিছিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছি । 2015 সাল থেকে আমরা অপেক্ষা করছি । কিন্তু, এখনও আমাদের নিয়োগ সম্পূর্ণ হল না । তার মধ্যে হাইকোর্টের নির্দেশে নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে ।" বায়ো সায়েন্সের এক প্রার্থী বলেন, "2015-তে আমরা পরীক্ষা দিয়েছি। 2016-র শেষের দিকে প্রায় দেড় বছর পর রেজাল্ট বের হয় । এতদিন পর মনে হচ্ছিল, চাকরি পাই না পাই যা করে হোক নিয়োগ প্রক্রিয়াটা শেষ হোক। আমরা পাশ করেছি প্রায় 7-8 বছর আগে। আমাদের 7-8 খানা SSC দেওয়ার কথা ছিল । সেখানে একটাই কমপ্লিট করতে পারছি না আমরা । এটা শেষ হলে অ্যাটলিস্ট আমরা পরেরটাতে অ্যাপ্লাই করতে পারতাম ।"

বায়োলজির প্রার্থী অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, "SSC-র এব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। যাতে তাড়াতাড়ি নিয়োগটা সম্পূর্ণ হয়। 2015 সালে পরীক্ষা দেওয়ার পর 2016 সালে রেজাল্ট বের হয়েছিল। তারপর থেকে তো এর কোনও প্রোগ্রেস হয়নি। এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার জন্য কমিশন সঠিক পদক্ষেপ নিলে আমরা আমরা চাকরিপ্রার্থীরা খুব খুশি হব।"

অনেক প্রার্থীরাই এই নির্দেশের জন্য SSC-র দোষ দেখছেন। কিশোর সরকার নামের এক প্রার্থী বলেন, "আমরা কমিশনকে বার বার বলেছিলাম প্রশিক্ষণরত প্রার্থীরা থাকতে যেন অপ্রশিক্ষণরত প্রার্থীরা ডাক না পায় । ইন্টারভিউতে যখন ডাকে আমাদের প্রথমে মনে হয়েছিল সত্যিই হয়তো অপ্রশিক্ষণরত প্রার্থীরা ডাক পায়নি। আজকে দেখা গেছে, কোর্টে একজন প্রমাণ দেখাতে পেরেছেন যে অপ্রশিক্ষণরত প্রার্থী ডাক পেয়েছে । আমাদের অবশ্যই একটা হতাশার জায়গা এসেছে। কারণ, আমরা আগেই এই বিষয়ে SSC-কে সচেতন করেছিলাম। সেক্ষেত্রে SSC যখন তাঁদের কাজের মধ্যে একটা ত্রুটি রেখে দিল বা তাঁরা ইচ্ছাকৃতভাবে SSC এটা করল তাতে সাধারণ প্রার্থী হিসাবে আমরা দুঃখিত।" ইতিমধ্যেই SSC ইন্টারভিউতে ডাক পাওয়া প্রার্থীদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। যদিও, বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে দু'পক্ষের কথায় অসঙ্গতি থাকায় আজ স্কুল সার্ভিস কমিশনকে সব নথিপত্র নিয়ে যেতে বলেছে বিচারপতি।

ABOUT THE AUTHOR

...view details