বিধাননগর, 20 মে : "শেরপাদের কম দক্ষতাও আমাদের সমস্যার একটা কারণ।" আজ নেতাজি সুভাষ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমের সামনে একথা বলেন পর্বতারোহী রমেশ রায় ।
বিপদের সময় শেরপা ছেড়ে চলে গিয়েছিল : রুদ্রপ্রসাদ - sherpa
আজ কলকাতায় ফেরেন কাঞ্চনজঙ্ঘা জয়ী রমেশ রায় ও রুদ্রপ্রসাদ হালদার । তাঁরা বলেন, শেরপাদের অদক্ষতার জন্য এই অভিযানে তাঁদের একটু সমস্যায় পড়তে হয়েছে ।
রমেশ বলেন, "শেরপা বন্ধুদের দক্ষতা একটু কম ছিল । তাদের সবসময় আমাদের সঙ্গে থাকার কথা । কিন্তু আমাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছিল । শেরপা বন্ধুরা যথাযথ সময়ে আমাদের অক্সিজেন দিতে পারেনি । আমাদের বন্ধু বিপ্লব বা কুন্তলকে হারানোর অন্যতম কারণ অক্সিজেন ঠিক সময়ে না পাওয়া ।" পর্বতারোহী রুদ্রপ্রসাদ হালদার বলেন, "কুন্তলকে বেশ কয়েকজন সহ-পর্বতারোহীরা বুঝিয়েছিল নেমে যাওয়ার জন্য । কিন্তু ও নামেনি । পর্বতারোহণে ভুলের কোনও ক্ষমা নেই । এটা ফুটবল ম্যাচ নয় যে লাল কার্ড দেখালে সেই ম্যাচ বাদ দিয়ে পরের ম্যাচ থেকে আবার খেলবে । এখানে লাল কার্ড মানে জীবন থেকে বাদ যাওয়া । সামিট থেকে নামার সময় আমার কাছে অক্সিজেন ছিল না । আমি 200 মিটার অক্সিজেন ছাড়া আসতে বাধ্য হই । নিচে নামার সময় আমি দেখতে পাই কুন্তল বসে আছে ওর মাস্ক নেই । ও প্রায় নিস্তেজ হয়ে পড়েছিল । আমার শেরপার সাহায্যে ওকে প্রায় 100 থেকে 150 মিটার নিচে নামিয়েছিলাম । নামানোর সময় আমার পায়ের কাটা জুতো খুলে যায় । আমি আমার শেরপাকে সেটা বেঁধে দিতে বলি । তখন শেরপা প্রায় বিরক্তি প্রকাশ করে বলে, তুমি নিজেও মরবে, আমাকেও মারবে ও তো মরবেই । তারপর আবার সে আমাকে ছেড়ে চলে যায় । কুন্তল এরপর বারবার শুয়ে পড়ছিল । আমি ওকে চড়-থাপ্পড় মেরে জাগিয়ে রাখার চেষ্টা করছিলাম । আমি একা ছিলাম কুন্তলের সঙ্গে । আমার অক্সিজেন শেষ হয়ে আসছিল । এরপর আমিও বুঝতে পারছিলাম আমি এই মুহূর্তে নিচে না নামলে আমি মারা যাব । এরপর আমি একা অসহায় অবস্থায় ফিরে আসি ।"
তবুও বিপদকে তোয়াক্কা না করে রমেশ বলেন , "অ্যাডভেঞ্চার মানে তো এই বিপদ থাকবেই । বিপদ যদি বাদ দিই তাহলে এই অ্যাডভেঞ্চার আর অ্যাডভেঞ্চার থাকবে না । এর মধ্যে আনন্দ পাই । নতুন কিছু খুঁজে পাই । তাই সুযোগ পেলে আবার যাব ।"