পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / briefs

মমতার সরকার গুলি, বোমা আর বারুদ দিচ্ছে : রাজনাথ

রাজনাথ বলেন, "এখানে মা, মাটি কিংবা মানুষ, কেউই সুরক্ষিত নয়। এখানে তৃণমূল সরকার ভীত হয়ে পড়েছে। তাদের পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে। এখানে বিধির লিখন হয়ে গেছে। তৃণমূল বিদায় নিচ্ছে, আর BJP পুরো শক্তি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে আসছে। এখানে প্রচুর অনুপ্রবেশকারী রয়েছে। কিন্তু একজন অনুপ্রবেশকারীকেও থাকতে দেওয়া হবে না।"

রাজনাথ সিং

By

Published : Apr 18, 2019, 7:14 PM IST

মালদা, 18 এপ্রিল : নির্বাচনী প্রচারে এসে মালদায় রাজ্য সরকারকে নিশানা করলেন BJP নেতা রাজনাথ সিং। আজ বিকেলে মালদা শহরের জেলা ক্রীড়া সংস্থার ময়দানে দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরির সমর্থনে জনসভা করেন তিনি।

বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজনাথ বলেন, "আজ দ্বিতীয় দফার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত আমার কাছে খবর আছে, দেশজুড়ে BJP-র পক্ষে ভীষণ ভালো ভোট হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গেও প্রচুর ভোট পড়ছে। কিন্তু সব জায়গায় অবাধে ভোট হওয়া উচিত। এই জন্য পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রয়োজন। আমরা এনিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন জানিয়েছি। এখানে তৃণমূল সরকার মা, মাটি আর মানুষের কথা বলে। তারা এই তিনটি ক্ষেত্রে সুরক্ষার কথা বলে। কিন্তু আমরা দেখছি, এখানে মা, মাটি কিংবা মানুষ, কেউই সুরক্ষিত নয়। এখানে তৃণমূল সরকার ভীত হয়ে পড়েছে। তাদের পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে। এখানে বিধির লিখন হয়ে গেছে। তৃণমূল বিদায় নিচ্ছে, আর BJP পুরো শক্তি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে আসছে। এখানে প্রচুর অনুপ্রবেশকারী রয়েছে। কিন্তু একজন অনুপ্রবেশকারীকেও থাকতে দেওয়া হবে না। আর তৃণমূল বাংলাদেশ থেকে ফিরদৌসকে প্রচারে নিয়ে আসছে।"

তিনি রাজ্য সরকারের কাজকর্ম নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, "তৃণমূল বলেছিল ক্ষমতায় এলে তারা ৫৫ হাজার বন্ধ থাকা শিল্পকে ফের খুলে দেবে। সেকথা তারা কি রেখেছে? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশবাসীর জন্য প্রচুর প্রকল্প চালু করেছেন। আর এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সেই সব প্রকল্পগুলি নিজের নামে চালাচ্ছেন। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার আয়ুষ্মান ভারতের মতো প্রকল্পকে এই রাজ্যে চালু হতে দেয়নি। এই প্রকল্পে গরিব মানুষ ৫ লাখ টাকার চিকিৎসা পরিষেবা পেতে পারতেন। আমরা এই রাজ্যে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু করবই। এখন গোটা দুনিয়া স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে, ভারত অত্যন্ত দ্রুতগতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এদেশের আর্থিক ব্যবস্থাও দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে। ২০১৪ সালে ভারত আর্থিক বিকাশের ক্ষেত্রে পৃথিবীর ১০ টি দেশের মধ্যে নবম স্থানে ছিল। এখন সেই ভারত ষষ্ঠ স্থানে। খুব তাড়াতাড়ি পঞ্চম স্থানে চলে আসবে। অগ্রগতির এই ধারা বজায় থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত গোটা বিশ্বে তৃতীয় স্থান লাভ করবে। অ্যামেরিকা, রাশিয়া ও চিনের মতো দেশকেও ভারত পিছনে ফেলে দেবে। ২০০৮ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কংগ্রেস সরকার প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ২৫ লাখ বাড়ি তৈরি করেছিল। আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে দেশে ১ কোটি ৩০ লাখ বাড়ি বানিয়েছেন। এটাই স্থায়ী সরকারের বিশেষত্ব। গত ৫ বছরে দেশে ১৩ কোটি মানুষের রান্নাঘরে গ্যাস সংযোগ হয়েছে। এসবের জন্যই ভারত আজ দ্রুতগতিতে সামনের দিকে এগোচ্ছে। দেশে দুর্নীতিতেও লাগাম লেগে গেছে। ২০১৪ সালের আগে এদেশের মাত্র ৫০ শতাংশ মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছিল। কিন্তু এখন ১০০ শতাংশ ভারতবাসীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, প্রত্যেকের অ্যাকাউন্ট খুলে কী হবে? কিন্তু বিভিন্ন ভাতা, পড়ুয়াদের স্কলারশিপের টাকা এখন সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে আসে। ফলে কাউকে দালালদের আর টাকা দিতে হয় না। মোদিজি কৃষকদের অ্যাকাউন্টে ৬ হাজার টাকা করে পাঠিয়েছেন। আসলে এখানকার সরকার কৃষকদের তালিকা দিল্লিতে দেয়নি। ভোটের পর এনিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কৃষকদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকবে। এখানে কৃষকদের কিষাণ ক্রেডিট কার্ড না করে রাজ্য সরকার বরবাদ করে দিয়েছে। দেশের কৃষকরা এই কার্ডের সুবিধে পাচ্ছে। ওই কার্ড থাকলে এক কৃষক ১ লাখ টাকা ঋণ পাবেন। সেই ঋণ শোধ করার ক্ষেত্রে ৫ বছর তাঁকে কোনও সুদ দিতে হবে না। এখানে সরকার শুধু গুলি, বোমা আর বারুদ দিচ্ছে।"

রাজনাথ আরও বলেন, "কংগ্রেস বার বার বলে, গরিবি হঠাও, দেশ বাঁচাও। কিন্তু এই গরিবদেরই কংগ্রেস বার বার ভোটে ব্যবহার করে। গরিবি বন্ধ হয়নি। আজ আমি বলছি, ভারত কংগ্রেসমুক্ত হলেই গরিবমুক্ত হবে। সুরক্ষা ক্ষেত্রেও ভারত গত ৫ বছরে প্রভূত উন্নতি করেছে। ভারতকে শক্তিশালী করাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা কাউকে উত্যক্ত করি না। কিন্তু কোনও দেশ আমাদের উত্যক্ত করলে আমরা ছেড়ে কথা বলব না। পাকিস্তানকে একাধিকবার সাদা পতাকা দেখানো হয়েছে। কিন্তু শান্তির বার্তা আসেনি। তাই আমরা পাকিস্তানকে সাদা পতাকা দেখানো বন্ধ করেছি। CRPF কনভয়ে হামলার পর প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেন, পাকিস্তানে ঢুকে তাদের শিক্ষা দিতে হবে। সেটাই করা হয়েছে। কংগ্রেস আর তৃণমূল প্রশ্ন তোলে, কতজনকে মারা হয়েছে? এমন অবস্থায় কেউ কি মৃতদেহ গোনার জন্য বসে থাকে? এত মৃতদেহ কীভাবে গোনা যাবে! এরা আমাদের সেনার বীরত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। ৩০ বছরের কংগ্রেস শাসনে সেনাকে উন্নত ফাইটার প্লেন কেনার সম্মতি দেওয়া হয়নি। যদি রাফাল আগেই কেনা হত, তাহলে আর পাকিস্তানে ঢুকে সন্ত্রাসবাদীদের মারতে হত না। ঘরে বসেই সেই কাজ করা যেত।

ABOUT THE AUTHOR

...view details