মালদা,25 জুলাই : জেলার প্রথম কোরোনা সংক্রমিত এখন কোভিড যোদ্ধা ৷ দীর্ঘ চিকিৎসায় সুস্থ হওয়ার পর এখন পুরাতন মালদার নারায়ণপুর কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের মানসিকভাবে উদ্বুদ্ধ করে চলেছেন তিনি ৷ তাঁকে দেখে উৎসাহ পাচ্ছেন চিকিৎসাধীন কোরোনা সংক্রমিতরাও ৷
আক্রান্তদের মনোবল বাড়াতে কোভিড যোদ্ধার ভূমিকায় মালদার প্রথম সংক্রমিত - কোরোনা রোগী
মালদায় প্রথম কোরোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন তিনি ৷ সুস্থ হওয়ার পর কোভিড যোদ্ধা হিসাবে হাসপাতালে রোগীদের সাহস জুগিয়ে চলেছেন মানিকচকের পরিযায়ী শ্রমিক৷ ওই কোভিড যোদ্ধা বলেন,এই রোগকে জয় করার অন্যতম হল মানসিক শক্তি৷ কেউ মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়লেই রোগ আরও বেশি থাবা গেড়ে বসে৷ আমি চাই, এই রোগে আক্রান্ত হয়ে একজনও যেন না মারা যায়৷ প্রশাসনের পক্ষ থেকে যেদিন আমাকে কোরোনা যোদ্ধা হিসাবে কাজ করার কথা বলা হয়, আমি একবাক্যে রাজি হয়ে যাই৷ "
গত 27 এপ্রিল মালদা জেলায় প্রথম কোরোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে৷ সংক্রমিত হন মানিকচক ব্লকের নারিদিয়ারা গ্রামের নতুনটোলার এক পরিযায়ী শ্রমিক ৷ তিনি উত্তর 24 পরগণার বারাসতে নির্মাণ কাজ করতে গিয়েছিলেন৷ দেশে লকডাউন ঘোষণার পর এলাকার আরও তিন শ্রমিকের সঙ্গে তিনি 21 এপ্রিল বাড়ি ফিরে আসেন৷ তাঁরা কেউ প্রথমে কোয়ারাইনটিন সেন্টারে যাননি৷ গ্রামবাসীদের চাপে 23 এপ্রিল তাঁরা মানিকচক কলেজের কোয়ারাইনটিন সেন্টারে যান৷ সেখানে তাঁদের সবার লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়৷ তাতেই ওই শ্রমিকের কোরোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে৷ এরপর সংক্রমিত শ্রমিককে পাঠানো হয় শিলিগুড়ির কোভিড হাসপাতালে৷ দীর্ঘ চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে জেলায় ফেরেন তিনি৷ সম্প্রতি রাজ্য সরকার প্রতিটি জেলায় সুস্থ হওয়া রোগীদের নিয়ে তৈরি করে কোভিড যোদ্ধা ক্লাব৷ সেই ক্লাবের একজন সদস্য হিসাবে এখন কাজ করে চলেছেন 47 বছর বয়সী জেলার প্রথম কোরোনা সংক্রমিত ৷
ওই কোভিড যোদ্ধা বলেন, “জেলায় আমিই প্রথম কোরোনা সংক্রমিত হয়েছিলাম৷ সেই সময় আমাকে যেসব সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছিল, তা এখনও ভুলতে পারি না৷ কাছের মানুষগুলোও কেমন যেন অচেনা হয়ে গিয়েছিল৷ তারপর অনেক লড়াই করে শেষ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছি৷ শিলিগুড়িতে চিকিৎসাধীন থাকার সময় বুঝতে পেরেছিলাম, এই রোগকে জয় করার অন্যতম হল মানসিক শক্তি৷ কেউ মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়লেই রোগ আরও বেশি থাবা গেড়ে বসে৷ আমি চাই, এই রোগে আক্রান্ত হয়ে একজনও যেন না মারা যায়৷ প্রশাসনের পক্ষ থেকে যেদিন আমাকে কোরোনা যোদ্ধা হিসাবে কাজ করার কথা বলা হয়, আমি একবাক্যে রাজি হয়ে যাই৷ এই ভাইরাসে সংক্রমিতদের মনে সাহস জোগাতে কোভিড হাসপাতালে কাজ করে চলেছি৷ সবাইকে বলছি, আমি যদি এত লড়াই করে সুস্থ হতে পারি, তবে সবাই কোরোনাকে জয় করতে পারবে৷ যতদিন পারব, আমি সংক্রমিতদের সাহস জুগিয়ে যাব৷”