কলকাতা, 20জুন : শিশু অধিকার রক্ষা ও যৌন হেনস্থা ঠেকাতে কলকাতা হাইকোর্টের দায়ের করা স্বত:প্রণোদিত মামলায় রাজ্যের বিভিন্ন দপ্তরের দেওয়া হলফনামায় ত্রুটি ও গরমিলে অসন্তুষ্ট আদালত। স্বরাষ্ট্র সচিবের দেওয়া হলফনামাতেও ত্রুটি থাকায় বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ অসন্তোষ প্রকাশ করে আগামী 23 জুনের মধ্যে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনেরালকে ফের বিস্তারিত রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিলেন।
লকডাউনে পারিবারিক হিংসার ঘটনা বৃদ্ধির পাশাপাশি শিশুদের উপর যৌন নির্যাতনের ঘটনাও বৃদ্ধি পেয়েছে । এই ঘটনা স্বীকার করেছেন স্বয়ং রাজ্যের মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনও । কলকাতা হাইকোর্ট সেই বিষয়ে রাজ্যের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছিল। কিন্তু রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল যে রিপোর্ট পেশ করেছেন, তাতে রাজ্যের সমস্ত জেলার তথ্য না থাকায় আজ কলকাতা হাইকোর্ট পুনরায় 23 জুনের মধ্যে রাজ্যকে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিল।
জেলার তরফে জেলা আইনি সহায়তা কর্তৃপক্ষ যে রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে দেখা যায় বাঁকুড়া জেলায় প্রায় 32টি বাল্যবিবাহ আটকানো গিয়েছে ।পাশাপাশি POCSO আইনেও বেশকিছু বিবাহের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। কিন্তু যে হলফনামা দেওয়া হয়েছে, তাতে গোটা রাজ্যের সামগ্রিক ছবিটি পরিষ্কার নয়। এপ্রিল মাস অবধি রিপোর্ট জমা করা হলেও মে ও জুন মাসের নথির কোনও উল্লেখ নেই।
ডিভিশন বেঞ্চ তাদের পর্যবেক্ষণে জানায়,রাজ্যের হলফনামায় দেখা গিয়েছে 2020 সালে প্রায় 199 টি শিশু অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে এবং লকডাউনের সময় এই প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে । কিন্তু সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের তরফে তদন্ত বা কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, তা পরিষ্কার করে জানানো হয়নি। সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে তুলে ধরে ফের হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিল আদালত।
শিশু ও সমাজ কল্যাণ দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছিল, লকডাউন পরিস্থিতিতে প্রত্যেক পরিবারে শিশুদের খাদ্য ও পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থার দিকে নজর রাখা হচ্ছে। শিশু ও সমাজ কল্যাণ দপ্তরের এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেন ডিভিশন বেঞ্চ।