কলম্বো, 28 এপ্রিল : 2008 সালের 26 নভেম্বর । জঙ্গি হামলায় কেঁপে উঠেছিল মুম্বই । তিনদিন পর জঙ্গি মুক্ত হয়েছিল তাজ হোটেল । মারা গেছিলেন প্রায় 166 জন । সেই রক্তক্ষয়ী কয়েকটা দিন একেবারে সামনে থেকে দেখেছিলেন অভিনব চারি । দুবাইতে বড় হওয়া অভিনব মেডিসিন বিষয়ে একটি কোর্স করতে তখন মুম্বইতে ছিলেন । তারপর পার হয়ে গেছে 11 বছর । মুম্বই হামলার ধাক্কা সামলে উঠেছিলেন । কিন্তু, গত ইস্টার রবিবারে কলম্বোয় গিয়ে ফের একই ঘটনার সাক্ষী থাকলেন অভিনব । এবার আরও কাছ থেকে মৃত্যুকে প্রত্যক্ষ করলেন ।
21 এপ্রিল গির্জায় ইস্টারের প্রার্থনা চলাকালীন ধারাবাহিক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কলম্বো । উত্তর অংশের কোচ্চিকাড়, কাটুওয়াপিটিয়া ও বাট্টিকালোর চার্চে বিস্ফোরণ হয় । শাংরি লা, সিনামন গ্র্যান্ড ও কিংসবারি হোটেলও বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে । তার ঘণ্টাখানেক পরই আরও দুটি বিস্ফোরণ হয় । ঘটনায় 253 জনের মৃত্যু হয় ।
কয়েকদিন আগেই ব্যবসায়িক কাজে শ্রীলঙ্কায় এসেছিলেন অভিনব ও তাঁর স্ত্রী নভরূপ । দুবাইয়ের বাসিন্দা ওই দম্পতি সিনামন গ্র্যান্ড হোটেলে ছিলেন । আর পাঁচটা ইস্টারের মতো সেই অভিশপ্ত সকালেও প্রার্থনার জন্য স্ত্রীর সঙ্গে চার্চে গেছিলেন অভিনব । তাঁর কথায়, "প্রার্থনা চলাকালীন ফাদার একটি ঘোষণা করেন । চার্চের ভিতর থেকে সবাইকে বাইরে যাওয়ার অনুরোধ করেন । " সেইমতো দুজনে চার্চ থেকে বেরিয়ে আসনে । সেই সময় রাস্তায় জটলা চোখে পড়ায় অভিনব ও তাঁর স্ত্রী হোটেলে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ।
অভিনব বলেন, "হোটেলে ফিরে দেখি সবাই লনে বেরিয়ে পড়েছেন । প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছিল, নিরাপত্তা প্রটোকল হিসেবে এরকম করা হচ্ছে । " কিন্তু, তারপরই ভুলটা ভাঙে । জানতে পারেন, তাঁদের হোটেলের ব্রেকফাস্ট বুফেতে বিস্ফোরণ হয়েছে । পাশাপাশি, আরও দুটি হোটেল ও তিনটি চার্চ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছে । নভরূপ বলেন, "আমার সামনে কী হচ্ছিল, তা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না । মনে হচ্ছিল, এটা যেন একটা সিনেমা । " আর অভিনবের কথায়, "আমি দু'বার সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর বাইরে পা রেখেছি । একবার মুম্বইয়ে গেছিলাম । আর এবার কলম্বোতে এসেছিলাম । আর দু'বারই এরকম ভয়াবহ জঙ্গি হামলার সাক্ষী হলাম । "