কলকাতা, 29 জুন : রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থা ও নিজের পদমর্যাদা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। মুখ্যমন্ত্রী কে দেওয়া চিঠিতে তিনি উচ্চশিক্ষা পর্ষদকে সরাসরি আক্রমণ করে লেখেন, "আচার্যের দপ্তরকে নিষ্ক্রিয় করার লক্ষ্যে কাজ করছে উচ্চশিক্ষা দপ্তর। "
উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার বিভিন্ন দিক নিয়ে প্রশ্ন ও দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি রাজ্যপাল তথা আচার্যের কাছে জমা দিয়েছিল একাধিক ছাত্র সংগঠন। তার প্রেক্ষিতেই পড়ুয়া ও শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করার লক্ষ্যে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের সঙ্গে ভার্চুয়াল কনফারেন্স করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। গত 15 জুন উচ্চশিক্ষা দপ্তরকে ভার্চুয়াল বৈঠকের আয়োজন করতে বলেছিলেন আচার্য জগদীপ ধনকড়।
রাজ্যপালের সচিবের তরফে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের প্রধান সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করে বৈঠককে অগ্রাধিকার দিয়ে সাতদিনের মধ্যে এই ভার্চুয়াল কনফারেন্সের ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু, ভার্চুয়াল বৈঠকের ব্যবস্থা তো দূরস্থান। উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের তরফে জানানো হয়, নতুন বিধিতে উপাচার্যদের সঙ্গে ভার্চুয়াল কনফারেন্স করার কোনও নিয়ম নেই।
15 জানুয়ারিতে মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠি। মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে রাজ্যপাল বলেন, "দুঃখজনকভাবে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অসঙ্গত অবস্থানের কারণে আচার্যের কার্যক্রমে ভার্চুয়াল প্যারালিসিস তৈরি হয়েছে। উচ্চশিক্ষা দপ্তরের সব কাজ যেন আচার্যের দপ্তরকে নিষ্ক্রিয় করার লক্ষ্যেই করা হচ্ছে। "
তিনি চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকের ডাক দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে চিঠিতে বলেন, "আমি 13 জানুয়ারি উপাচার্যদের সঙ্গে একটি বৈঠক ডাকি । কিন্তু উচ্চশিক্ষা দপ্তরের মাননীয় মন্ত্রী তা অপ্রয়োজনীয় বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। " সেই সময়ও মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন আচার্য। আজকের চিঠিতে তিনি বলেন, 15 জানুয়ারিতে মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠির উত্তরের জন্য তিনি এখনও অপেক্ষা করছেন ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্যপালের লেখা চিঠি চিঠিতে আচার্য আরও জানান, "পড়ুয়াদের বেশকিছু সমস্যা নিয়ে আমার কাছে একাধিক ছাত্র প্রতিনিধিদল এসেছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমি রাজ্যের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে ভার্চুয়াল কনফারেন্স আয়োজন করার নির্দেশ দিই । উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের তরফ থেকে উত্তর আসে, 'বিধিতে উপাচার্যদের সঙ্গে ভার্চুয়াল কনফারেন্স করার কোনও প্রভিশন নেই'। "
মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি আবেদন জানিয়ে বলেন, "অসাংবিধানিক ধারা প্রতিরোধে আমাদের মধ্যে একটা সংযোগ প্রয়োজন এবং আশা করি আপনি এটাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন। " আজকের চিঠির সঙ্গে 15 জানুয়ারি তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে যে চিঠিটি দিয়েছিলেন, সেটিও যুক্ত করে পাঠান আচার্য তথা রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ।