কলকাতা, 8 জুন : পায়ে পায়ে পনেরো বছর আন্তর্জাতিক আঙিনায় খেলা হয়ে গেল সুনীল ছেত্রীর । ভারতীয় ফুটবলের নিরিখে নিঃসন্দেহে মাইলফলক। 35 বছর বয়সি সুনীল ছেত্রী আজও ভারতীয় ফুটবলে অপ্রতিদ্বন্দ্বী।
বেঙ্গালুরু FC-র অধিনায়ক ইতিমধ্যে ক্লাবস্তরের সব টুর্নামেন্ট জিতেছেন । আন্তর্জাতিক ফুটবলেও ভারতের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোল করার কৃতিত্ব সুনীল ছেত্রীর দখলে । ঝলমলে ফুটবল কেরিয়ার সত্ত্বেও কিবু ভিকুনার মত বিদেশি কোচ সুনীলকে ভালো ফুটবলার বললেও গ্রেট বলতে রাজি নন । যা নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত।
মোহনবাগানের কোচ হিসেবে আই লিগ জয়ের কৃতিত্ব অর্জন করা স্প্যানিশ কোচের এই মন্তব্য সুনীলের বর্নময় ফুটবল যাত্রাকে খাটো করতে পারছে না। বরং দেশের প্রাক্তন ফুটবলাররা সুনীলের উত্থানের কাহিনীতে উচ্ছ্বসিত। শুরুর দিনে সুনীল ছেত্রীকে কোচিং করানো কিংবা ব্যক্তিগত জীবনে পারিবারিক সম্পর্কের কারণে সুনীলকে কাছ থেকে দেখা প্রাক্তন ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্য বলছেন," প্রথম দিনই নজর টেনেছিল।"
17 বছর আগে মোহনবাগানের ট্রায়ালে অনেক ছেলের ভিড়ে ছিলেন সুনীল। সুযোগ পাওয়ার আশায় ফুটবলারদের ভিড় করার মধ্যে কোনও নতুনত্ব খুজে পাননি সেদিনের মোহনবাগান কোচ সুব্রত ভট্টাচার্য । তবে কোচ হিসেবে ট্রায়ালে দেখতেই হয়। সেই সময় ফুটবলারদের দেখতে গিয়েই দুজন ছেলেকে ভালো লেগেছিল অর্জুন পুরস্কার পাওয়া কোচের। সেই দুই ফুটবলার হলেন সুনীল ছেত্রী এবং সুব্রত পাল।
"সুনীল সেদিন বুঝিয়ে ছিল ভালো স্ট্রাইকার হওয়ার সবগুন তার মধ্যে রয়েছে। দ্রুত গতি,জোরালো শুটিংএ নজর কেড়েছিলেন। নিজেকে চেনানোর একটা বাড়তি তাগিদ ছিল ওর মধ্যে," বলছিলেন দুবার আই লিগ জয়ী কোচ।
মাত্র পাঁচ ফুট সাত ইঞ্চি লম্বা বর্তমান ভারতীয় দলের অধিনায়ক। ফলে দীর্ঘদেহী ডিফেন্ডারদের টপকে গোল করতে পারে সুনীল, তা ভাবা কঠিন। কিন্তু সুব্রত ভট্টাচার্য বলছেন," সুনীলের গেম রিডিং খুব ভালো।বলের জন্য সবসময় ছুটে বেড়ায়। বল তাকে দেওয়ার জন্য সবসময় চিৎকার করে।সেটপিসের সঠিক জায়গা নিয়ে দীর্ঘদেহী ডিফেন্ডারদের টেক্কা দেয়। বল এবং গোল পাওয়ার ক্ষেত্রে মরিয়া মনোভাব যেকোনও কোচের ভালো লাগার পক্ষে যথেষ্ট।" তবে সুনীলকে ভালো ড্রিবলার বলতে রাজি নন প্রাক্তন কোচ । তাঁর চোখে এটাই বর্তমান ভারতীয় দলের অধিনায়কের খামতি।
তবে ফুটবলে খামতি এড়িয়ে ফুটবলাররা এগিয়ে যান। সুনীল সেই কাজটা দারুনভাবে করেছেন বলে জানালেন তিনি। বাড়তি অনুশীলন করে নিজেকে আরও ক্ষুরধার করার ইচ্ছে সুনীলকে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে বলে বিশ্বাস করেন । নেতা সুনীল সবসময় দলের কাছে উদাহরণ মেলে ধরতে চায়। প্র্যাকটিসে বাড়তি পরিশ্রম করে। তবে ম্যাচের সময় কোচের অনুগত। তাই সকলের প্রিয় সুনীল ছেত্রী।
ফুটবলার সুনীলকে কাছ থেকে বেড়ে উঠতে দেখেছেন। প্রতিপক্ষ ডাগ আউটে বসে তাঁকে থামানোর অঙ্ক কষেছেন। আবার পারিবারিক জীবনে জামাই সুনীল ছেত্রীকে ঘরোয়া ভাবে চিনেছেন। যত দেখছেন ততই মুগ্ধ হচ্ছেন সুব্রত ভট্টাচার্য।