কলকাতা, 12 সেপ্টেম্বর : দুর্ঘটনার জেরে ডান চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছিলেন এক যুবক । সাকুল শেখ নামে ওই যুবকের বাঁ চোখের দৃষ্টিশক্তিও হারিয়ে যাচ্ছিল । এমনকী, মস্তিষ্কে সংক্রমণে প্রাণহানির আশঙ্কা দেখা দেয় । কিন্তু 21 বছরের সাকুলের জীবন রক্ষা করলেন কলকাতা মেডিকেলের চিকিৎসকরা । বাঁ চোখের দৃষ্টিশক্তি বাঁচালেন তাঁরা ।
দুর্ঘটনায় নষ্ট ডান চোখ, বাঁ চোখের দৃষ্টি বাঁচাল কলকাতা মেডিকেল
দুর্ঘটনায় জেরে ডান চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছিলেন যুবক । অস্ত্রোপচারে বাঁ চোখের দৃষ্টি বাঁচালেন চিকিৎসকরা ।
মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা সাকুল শেখ । গ্রিল তৈরির একটি কারখানায় তিনি কাজ করেন । 28 অগাস্ট দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি । গ্রিল কাটার ধারাল ব্লেডের অংশ ছিটকে এসে তাঁর বাঁ চোখ এবং নাকের সংযোগস্থান দিয়ে ভিতরে ঢুকে যায় । প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ শুরু হয় । বাঁ চোখ দিয়ে ব্লেডের অংশ প্রবেশ করলেও, সাকুলের ডান চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন সাকুল । তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে । সেখানে তাঁকে দু’দিন ভরতি রেখে রক্তক্ষরণ বন্ধ করা হয় । ক্ষতস্থান সেলাই করে দেওয়া হয় ।
31অগাস্ট আহত যুবককে স্থানান্তর করা হয় কলকাতার রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ অফথ্যালমলোজি (RIO)-তে । চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেন, সাকুলের বাঁ চোখে ক্ষীণ দৃষ্টিশক্তি রয়েছে । যাতে কোনওভাবে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়, তার জন্য তাঁর ডান চোখ ঠিক করার চেষ্টা করেন RIO-র চিকিৎসকরা । কিন্তু তা আর সম্ভব হয়নি । যুবকের সিটি স্ক্যান করে দেখা যায়, তাঁর বাঁ চোখ এবং নাকের মধ্যে ধারাল ব্লেডের একটি অংশটি রয়ে গিয়েছে । এই জন্য সাকুলের বাঁ চোখের দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসছে । শরীরের মধ্যে ফরেন বডি থাকার কারণে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে । 8 সেপ্টেম্বর কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ENT বিভাগের আউটডোরে পাঠানো হয় তাঁকে ।
সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট দেখে কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ENT বিভাগে সাকুলকে ভরতি নেওয়া হয় । চিকিৎসকরা জানান, তাঁর অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন । ওই দিন তাঁর COVID-19 পরীক্ষা হয় । 9 সেপ্টেম্বর নেগেটিভ রিপোর্ট আসে । 10 সেপ্টেম্বর সাকুলের অস্ত্রোপচার করা হয় । অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসক এস এন বন্দ্যোপাধ্যায়, দীপ্তাংশু মুখোপাধ্যায়, রাহুল সরকার এবং বাণী দাস । দীপ্তাংশু মুখোপাধ্যায় বলেন, "আড়াই ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার চলেছে । এন্ডোস্কপি এবং বাইরের দিক দিয়ে কেটে ধারাল ব্লেডের ওই অংশটি বের করা হয় । রোগীর বাঁ চোখে এখন দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে ফিরে আসছে ।"
কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ENT বিভাগের চিকিৎসকরা আশা করছেন, সাকুলের বাঁ চোখের দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে ফিরে আসবে । অস্ত্রোপচার না হলে সংক্রমণ তাঁর মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ত । সেক্ষেত্রে তাঁর মৃত্যু হতে পারত । সাকুল ভালো আছেন । হাসপাতালে তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে ।