পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / briefs

যুবতির মৃতদেহ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগ, ধৃত শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা

বছর খানেক আগে অর্পিতার বিয়ে হয়। সুখে সংসার করবে বলে ভেবেছিল। কিন্তু, তা আর হল না। অভিযোগ, পণের জন্য অত্যাচার সহ্য করতে হত অর্পিতাকে। আজ সকালেও মারধর করা হয় তাকে।

অর্পিতা ও সঞ্জয়

By

Published : Apr 14, 2019, 4:18 AM IST

নরেন্দ্রপুর, 14 এপ্রিল: 2 লাখ টাকা পণ না পেয়ে যুবতিকে খুন ও তার দেহ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগ শ্বশুরবাড়ির লোকদের বিরুদ্ধে। মৃতার নাম অর্পিতা সেন (১৯)। ঘটনাটি নরেন্দ্রপুর থানা এলাকায় রেনিয়ার প্রভাতপল্লির। ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে স্বামী, ননদ ও নন্দাই। উত্তেজিত মানুষজন অর্পিতার শ্বশুরবাড়িতে ভাঙচুর চলায়। একটি বাইকে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়। নরেন্দ্রপুর থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ধৃতদের আজ বারুইপুর আদালতে তোলা হবে।

বছর খানেক আগে অর্পিতার সঙ্গে বিয়ে হয় সঞ্জয় সেনের (৩৩)। সঞ্জয় একটি বেসরকারি মোবাইল কম্পানিতে চাকরি করে। বিয়ে হয়েছিল দেখাশোনা করেই। অর্পিতার বাবার বাড়ি জয়নগরে। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পণের জন্য চাপ দেওয়া হত অর্পিতাকে। চলত মারধর। স্বামী ছাড়াও ননদ সাবিয়া ও নন্দাই সানোয়ার অত্যাচার চালাত বলেও অভিযোগ। অর্পিতার বাবা পার্থসারথি হালদার জানিয়েছেন, বিয়ের সময় পণ দেওয়া হয়েছিল। নগদ ৬০ হাজার টাকা ও গয়না দিয়েছিলেন। ফের ২ লাখ টাকা চেয়ে বসে সঞ্জয়রা।

চৈত্র সংক্রান্তিতে বাবার বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল অর্পিতার। মেয়ের মুখ চেয়ে সাধ্যমতো টাকা জোগাড়ের চেষ্টাও করেছিলেন, জানিয়েছেন পার্থসারথিবাবু। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গতকাল থেকে অর্পিতার উপর অত্যাচার শুরু হয়। মারধর করা হয়। তাঁরা তখনকার মতো বিষয়টি মিটিয়ে দেন।

পার্থসারথিবাবুর অভিযোগ, প্রতিবেশীরা চলে গেলে শুরু হয় ফের অত্যাচার। খুন করা হয়। বিকেলের দিকে তাঁর মেয়ের মৃতদেহ পাচারের চেষ্টা করা হয়। এলাকার বাসিন্দারা দেখেন, একটি ভ্যানে করে অর্পিতার দেহ তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিষয়টি দেখে সন্দেহ হয় তাদের। বাধা দেন। অর্পিতার শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় MR বাঙুর হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা অর্পিতাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপরেই খবর দেওয়া হয় নরেন্দ্রপুর থানায়। ঘটনায় সঞ্জয়ের বাড়ি ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা। বাইকে আগুন লাগিয়েও দেওয়া হয়। আগামীকাল মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে।

পার্থসারথিবাবুর বক্তব্য, "গত বছর ফাল্গুন মাসে মেয়ের বিয়ে দিই। তখন চারটে জিনিস দিয়েছিলাম। ছেলর আংটি, চেন। মেয়ের চুড়ি ও কানের দুল। এছাড়াও দান সামগ্রী। এছাড়াও নগদ ৬০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম।" তিনি আরও বলেন, "মেয়ের স্বামীর মামারবাড়ি আমার বাড়ির পাশেই। প্রতিবেশী। তাদের উপর বিশ্বাস করে বিয়ে দিয়েছিলাম। আজ সকালে একটা ফোন আসে। বলা হয় অর্পিতা আর বেঁচে নেই। বাঙুর হাসপাতালে যেতে বলা হয়। আমি আবার ফোন করি। বিষয়টি জানতে। তখন বলা হয় অর্পিতার মৃত্যু হয়েছে। গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এরপর আমরা অর্পিতার শ্বশুরবাড়িতে যাই। পাড়ার লোকজন বলে, অর্পিতার উপর অত্যাচার করা হত। আজ দেহ পাচারের চেষ্টা করা হচ্ছিল বলে জানতে পারি। শ্বশুরবাড়ির লোকেরা দাবি করছিল ও গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু ওকে খুনই করা হয়েছে।"

For All Latest Updates

ABOUT THE AUTHOR

...view details