কলকাতা 7 জুলাই : ফিজিক্যাল কোর্টে অর্থাৎ আদালতকক্ষে দু'পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানির ক্ষেত্রে সম্মতি দিয়েছিলেন আইনজীবীরা। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের 32 টি আদালত কক্ষের মধ্যে শুনানি হল মাত্র 6টি-তে, তাও ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে । আজ চারটি ডিভিশন বেঞ্চে ও দুটি সিঙ্গেল বেঞ্চে বিভিন্ন মামলার শুনানি হয় ।
দীর্ঘদিন ধরে আইনজীবীরা আদালতকক্ষে হাজির হয়ে শুনানির ব্যাপারে সম্মতি না দেওয়ায় আদালতের কাজকর্মে বিলম্ব হচ্ছিল । 2 জুলাই আইনজীবীদের বিভিন্ন সংগঠন বৈঠকের পর সহমত হয়ে 6 জুলাই থেকে ফিজিক্যাল কোর্টে অংশগ্রহণের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়। ইতিমধ্যে গত শুক্রবার বিচারপতি প্রতীক প্রকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অকালপ্রয়াণ ঘটে। গতকাল শোকজ্ঞাপন অনুষ্ঠানের জন্য হাইকোর্টের সমস্ত কাজকর্ম বাতিল ছিল। ফলে আজ থেকে স্বাভাবিকভাবে আদালতের কাজকর্ম শুরু হওয়ার কথা ছিল । কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল আদালতের কাজে কোনও গতিই আসেনি আজ।
আইনজীবীদের একাংশের বক্তব্য ,সেই যখন ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমেই সব শুনানি হচ্ছে ,তাহলে আদালত কক্ষ খুলে রাখার কোন দরকার ছিল না । শুধু শুধু লাইট, AC চালু রেখে খরচ বাড়িয়ে কী লাভ!
দীর্ঘ টালবাহানার পর 3 জুলাই আইনজীবীরা আদালতকক্ষে হাজির হয়ে শুনানির ব্যাপারে সম্মতি জানায়। এর আগে হাইকোর্টের তরফে 11 জুন থেকে আদালত কক্ষে দুই পক্ষের উপস্থিতিতে মামলার শুনানি করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া। কিন্তু হাইকোর্টের আইনজীবীদের তিনটি সংগঠন তাতে সম্মতি জানায়নি। আদালত কক্ষে উপস্থিত হয়ে শুনানির বিরোধিতা করে তারা। যুক্তি ছিল কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে । এই পরিস্থিতিতে এটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে। বাধ্য হয়ে 17 জুন হাইকোর্টের তরফে জানানো হয় সব রকম ভাবেই শুনানিতে অংশ নিতে পারবেন আইনজীবীরা। কেউ চাইলে আদালত কক্ষে উপস্থিত থেকে মামলার শুনানি করতে পারবেন। আবার ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমেও শুনানিতে অংশ নিতে পারবেন। 3 জুলাই পর্যন্ত শারীরিকভাবে আদালতে উপস্থিত হবেন না বলে জানিয়েছিলেন আইনজীবীরা । এরপর 3 জুলাই আইনজীবিদের বিভিন্ন সংগঠনের বৈঠকে বেশিরভাগ আইনজীবী 6 জুলাই থেকে ফিজিকাল কোর্টে অংশগ্রহণ করার পক্ষে মত দিয়েছেন বলে জানায় হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন। পাশাপাশি হাইকোর্ট বার লাইব্রেরির সম্পাদক প্রমিত রায় জানান, যদি কোনও পক্ষ অনুপস্থিত থাকে তাহলে কোনও মামলার রায়দান যেন স্থগিত রাখা হয়। আর আদালত ফিজিক্যাল, ভার্চুয়াল যে কোনওভাবেই মামলার শুনানি করতে পারে, তাঁদের কোনও আপত্তি নেই। ফলে স্পষ্ট হয়ে যায় 6 জুলাই থেকে সব আইনজীবীরাই আদালত কক্ষের শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক।
আইনজীবী, সাধারণ মামলাকারী থেকে শুরু করে অন্য সব পক্ষই মনে করেছিল 6 জুলায়ের পর গতি আসবে আদালতের কাজকর্মে। কিন্তু আজ মাত্র ছ'টি বেঞ্চে তাও ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন আইনজীবীদের একাংশ ।