পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / briefs

ওয়ার্ল্ড হার্ট ডে, হৃদয়ের যত্ন নেওয়ার দিন - CVD

আজ ওয়ার্ল্ড হার্ট ডে। হৃদপিণ্ড জনিত বিভিন্ন রোগ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিই দিনটি পালন করার উদ্দেশ্য ।

World heart day
World heart day

By

Published : Sep 29, 2020, 4:00 PM IST

আজ নিজেকে ভালোবাসার দিন। হৃদয়ের যত্ন নেওয়ার দিন । আজ ওয়ার্ল্ড হার্ট ডে। প্রতিবছর সেপ্টেম্বরের 29 তারিখ ওয়ার্ল্ড হার্ট ডে পালন করা হয় । হৃদপিণ্ড জনিত বিভিন্ন রোগ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিই দিনটি পালন করার উদ্দেশ্য । প্রতিবছর ওয়ার্ল্ড হার্ট ফেডারেশন (WHF) এই দিন আন্তর্জাতিক ক্যাম্পেইন করে থাকে ।

অর্ধেকের বেশি নন কমিউনিকেবল রোগের জন্য দায়ি স্ট্রোকসহ কার্ডিওভাসকুলার ডিজ়িজ়েস (CVD) ।

ইতিহাস এবং গুরুত্ব :

ওয়ার্ল্ড হার্ট ফেডারেশন (WHF) ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের সঙ্গে মিলিতভাবে 1999 সাল থেকে ওয়ার্ল্ড হার্ট ডে উদযাপন শুরু করে । 1997-99 সালে ওয়ার্ল্ড হার্ট ডে-র ধারণাটি প্রথম দিয়েছিলেন তৎকালীন ওয়ার্ল্ড হার্ট ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অ্যান্টনি বায়েস ডি লুনা । আগে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ রবিবার এই দিনটি উদযাপন করা হত । 2011 পর্যন্ত এটা চলে । প্রথম উদযাপন করা হয় 2000 সালের 24 সেপ্টেম্বর ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতিবছর 17.9 মিলিয়ন মানুষ কার্ডিওভাসকুলার অসুখের কারণে মারা যান । অর্থাৎ প্রতিবছর প্রায় 41 শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয় হৃদপিণ্ডে জনিত অসুখের কারণে । যার মধ্যে তিন ভাগের এক ভাগ প্রি-ম্যাচিওর (70 বছরের নিচে) । কার্ডিওভাসকুলার অসুখের প্রায় 80 শতাংশই হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ।

ওয়ার্ল্ড হার্ট ডে-র এ বছরের থিম :

#UseHeart to beat cardiovascular disease অর্থাৎ কার্ডিওভাসকুলার অসুখকে পরাজিত করতে হার্টের ব্যবহার ।

CVDs এবং তার কারণ :

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে কার্ডিওভাসকুলার ডিজ়িজ়েস হৃৎপিণ্ড এবং রক্তনালীগুলির একধরণের ডিসঅর্ডার । করোনারি হার্ট ডিজ়িজ়, সেরিব্রোভাসকুলার ডিজ়িজ়, রুহম্যাটিক হার্ট ডিজ়িজ়, কংগেনিটাল হার্ট ডিজ়িজ় এর মধ্যে পড়ে ।

2016 সালে প্রায় 17.9 মিলিয়ন মানুষ মারা গিয়েছিল কার্ডিওভাসকুলার ডিজ়িজ়ের কারণে । যার মধ্যে 85 শতাংশ মানুষের মারা গেছে স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকে ।

অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা, তামাকের ব্যবহার, অ্যালকোহলের অত্যধিক ব্যবহার মূলত দায়ি বিভিন্ন ধরনের কার্ডিওভাসকুলার অসুখের জন্য । কারণ এই ধরনের জীবনযাপন শরীরে রক্তচাপের মাত্রা বাড়ায়, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়ায়, শরীরের স্থূলতা বৃদ্ধি পায় । যার ফলে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের সম্ভাবনা বহুগুণ বেড়ে যায় ।

ভারতে হৃদপিণ্ডের অসুখে মৃত্যুর পরিসংখ্যান :

1990 থেকে 2016 পর্যন্ত দেশে হৃদপিণ্ডের অসুখের কারণে মৃত্যু হার 34 শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে । পরিসংখ্যান বলছে দেশে এক লাখে 1 জনের মৃত্যু হয়েছে হার্ট অ্যাটাকে ।

পঞ্জাব, কেরালা এবং তামিলনাড়ুতে প্রতি একলাখে পাঁচ হাজার মানুষ কার্ডিওভাসকুলার অসুখের শিকার । দেশের মধ্যে মিজোরাম এবং অরুণাচল প্রদেশ এই দুই রাজ্যে প্রতি একলাখে তিন হাজারেরও কম মানুষ হৃদপিণ্ড জনিত অসুখের শিকার ।

কী কারণে ভারতে কার্ডিওভাসকুলার অসুখ দিন দিন বাড়ছে :

এর পিছনে রয়েছে জেনেটিক ফ্যাক্টর, ফিটাল প্রোগ্রামিং এবং অন্য কিছু ফ্যাক্টর । এর মধ্যে কিছু সামাজিক ফ্যাক্টরও রয়েছে যেমন, দ্রুত মহামারী সংক্রান্ত স্থানান্তর, জনসংখ্যার বার্ধক্য এবং সম্পর্কিত জনসংখ্যার পরিবর্তন, দ্রুত এবং অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং ফলস্বরূপ নিম্নমানের জীবনযাপন এবং অবশেষে অর্থনৈতিক বিকাশের ফলে পরিবর্তিত জীবনযাত্রা ।

পাশাপাশি ভারতীয় খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনও এর জন্য দায়ি । তাজা খাবারের পরিবর্তে প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন পলিশড চাল, আটা যার মধ্যে রয়েছে উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (খাবার থেকে গ্লুকোজের দ্রুত শোষণ) বেশি পরিমাণ খাওয়া । ফাইবার কম খাওয়ার ফলে শক্তি থেকে বঞ্চিত হওয়া । বেশি ভাজা খাবার খাওয়ার ফলে ট্রান্সফ্যাট (যা চর্বি অত্যন্ত ক্ষতিকারক রূপ ) বেড়ে যাওয়া । এবং কম প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়া । বিগত 50 বছরে মানুষের শারীরিক কার্যকলাপও অনেক কমে গেছে । শারীরিক কার্যকলাপ হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে ।

গত 30 বছরে দেশে কনভেনশনাল রিস্ক ফ্যাক্টর যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে । ভারতে 73 মিলিয়নের বেশি মানুষের হয় উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে । তামাকজাত সামগ্রীর বিক্রি ও ব্যবহার বেড়েছে । প্রতিবছর দেশে প্রায় 10 লাখ মানুষের মৃত্যু হয় তামাকজাত অসুখের কারণে । বেশ কিছু রাজ্যে অ্যালকোহলের ব্যবহার বেড়েছে । এছাড়া বায়ু দূষণ, পরিবেশ দূষণের কারণে কার্ডিওভাসকুলার অসুখের প্রবণতা বাড়ছে ।

WHO কী বলছে :

2013 সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বে 194 টি সদস্য দেশ সম্মিলিতভাবে NCD বোঝা এড়ানো যায় এমন গ্লোবাল মেকানিজমে সায় দিয়েছে । এরমধ্যে রয়েছে একটি গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যান । লক্ষ্য, 2025 সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে কার্ডিওভাসকুলার অসুখের কারণে হওয়া প্রি-ম্যাচিওর মৃত্যুর হার 25 শতাংশ কমানো ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details