8 এপ্রিল, কলকাতা : ফুসফুসের ক্যান্সারে দেশের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে কলকাতা। অন্যদিকে গোটা পৃথিবীর মধ্যে ভারতবর্ষে উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা। গতকাল একথা জানান পরিবেশ গবেষক সোমেন্দ্রমোহন ঘোষ। দেশে প্রতি বছর ১২ লাখ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে কেবলমাত্র বায়ু দূষণের জন্য। লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে বায়ুদূষণ। বাতাসে নেই পর্যাপ্ত অক্সিজ়েন। ক্ষতিকারক রাসায়নিক এবং ক্ষতিকারক পদার্থ বায়ুর সঙ্গে মিশছে শহর কলকাতা এবং তার আশপাশের অঞ্চলে। সমীক্ষায় দেখা গেছে গোটা দেশে বিশুদ্ধ অক্সিজেন এবং ঠান্ডা বায়ুর অভাবে বছরে ১২ লাখ মানুষের মৃ্ত্যু হচ্ছে।
সোমেন্দ্রমোহনবাবু বলেন, "কলকাতায় বায়ুদূষণ ব্যাপক হারে বেড়ে চলেছে। যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে প্রতি ঘনমিটারে বায়ুদূষণের মাত্রা 10 মিলিগ্রাম থাকা স্বাভাবিক। সেখানে শুক্রবার এবং রবিবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল চত্বরে প্রতি ঘনমিটারে বায়ু দূষণের মাত্রা ছিল 135 মিলিগ্রাম। যা সাংঘাতিক। বৃষ্টি এবং ঝড়ের পর প্রকৃতি কিছুটা ঠান্ডা হলেও দূষণের পরিমাণ কিন্তু কমেনি।"
তিনি জানান, শহরের এই অবস্থা হলে শিশু এবং বৃদ্ধরা ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়বে। সুস্থ শিশুর জন্ম হওয়া অস্বাভাবিক হয়ে দাঁড়াবে এই শহরে। জন্মের পরই দেখা যাবে সদ্যোজাত নানা ধরনের দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। বিশেষ করে ফুসফুস এবং হৃদরোগের সমস্যা প্রকটভাবে দেখা দেবে সদ্যোজাতদের ক্ষেত্রে। ক্যান্সার রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষণা অনুযায়ী কলকাতায় ৬০ শতাংশ শিশু শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছে। ফুসফুস সহ নানারকম রোগের উপসর্গ দেখা দিয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে গবেষণাপত্রে।
একটি চিকিৎসক ফোরামের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন সোমেন্দ্রমোহনবাবু। সেই চিকিৎসক ফোরামের অভিজ্ঞতা মোটেই ভালো নয়। এভাবে চলতে থাকলে 10 বছর পর এই শহরে জীবকূলের অস্তিত্ব সংকট হতে পারে বলে মত তাদের। তাদের বক্তব্য, শহর এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় দূষণের মাত্রা দীর্ঘদিন ধরে বেড়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়ছেন শহরের বাসিন্দারা। শীতকালে প্রতি ঘন মিটারে 400 মিলি গ্রাম ছাড়িয়ে যাচ্ছে বাতাসে দূষণের পরিমাণ। গতকাল বাতাসে দূষণের পরিমাণ ছিল 135 মিলিগ্রাম প্রতি ঘনমিটারে। যা অত্যন্ত আশঙ্কার বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা। সেই কারণেই বৃদ্ধ এবং শিশুদের নানারকমের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা বেড়ে চলেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বায়ুদূষণের জন্য হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এভাবে চলতে থাকলে কলকাতা ও পার্শবর্তী এলাকায় মানুষের আয়ু 6 বছর করে কমে যাবে।