হায়দরাবাদ, 10 এপ্রিল:জাতপাত তুলে অপমানের জেরে আত্মঘাতী দলীত যুবক ৷ অভিযোগ, স্ত্রীর পরিবারের লোকাদের গঞ্জনার পাশাপাশি লাগাতার জাত তুলে অপমানের জেরেই আত্মঘাতী হয়েছেন ওই যুবক ৷ জানা গিয়েছে, শনিবার বিকালে নিজের বাড়িতেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হন তিনি ৷ ঘটনা ঘটেছে হায়দরাবাদের বনস্থলিপুরম থানা এলাকায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ৷
পুলিশ এবং নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদের দেওয়া তথ্য় অনুযায়ী, ইয়াদাদ্রিভুবনগিরি জেলা থেকে কেলোথু জাগরুনায়ক এবং বিজয়লক্ষ্মী নামে দম্পতি বেশ কয়েক মাস আগে এই শহরে আসেন ৷ গুররাঙ্গুডার কাছে এক টিফিন সেন্টার চালিয়েই জীবিকা নির্বাহ করছিলেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, দম্পতির দুই ছেলের মধ্য়ে 2018 সালে বড় ছেলে গোপিনায়ক (26)-এর সঙ্গে গুররাঙ্গুডার রাজিরেড্ডি কলোনির এক যুবতীর (21) সঙ্গে আলাপ হয় ৷ ক্রমে তাঁদের সম্পর্ক গভীর হয়। যদিও এর মাঝেই 2019-এ উচ্চশিক্ষার জন্য লন্ডনে চলে যান ওই যুবক। তবে মৃত যুবকের পরিবারের দাবি, এরপরও তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক অটুট থাকে ৷ বিদেশে থাকাকালীনও যুবকের সঙ্গে তরুণীর নিয়মিত কথা চলত বলেও দাবি করেছেন ওই যুবকের পরিবারের লোকেরা ৷
পুলিশ সূত্রে খবর, মাঝপথে পড়া ছেড়ে এক বছর আগেই লন্ডন থেকে শহরে ফিরে আসেন গোপিনায়ক। কিছুদিন আগে এখানে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিও শুরু করেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসছয়েক আগে বাড়িতে না জানিয়ে মন্দিরে গোপনে বিয়ে করেন দু'জনে। এরপর তারা নিজেদের বাড়িতেই ছিলেন। চারমাস আগে একদিন ওই যুবকের বাড়িতে চলে আসেন তরুণী। ঝামেলার সূত্রপাত সেই থেকে ৷
আরও পড়ুন: প্রতিবেশীর অনুষ্ঠানে গুলিবিদ্ধ অন্তঃসত্ত্বা, গর্ভপাতের পর প্রাণ গেল বধূরও
জানা গিয়েছে, আচমকা ওই তরুণী বাড়ি চলে আসায় গোপিনায়েকের পরিবারের সদস্যরা তীব্র প্রতিবাদ করে ৷ অভিযোগ, তারা বিবাহিত শুনেও যুবকের পরিবারের সদস্যরা তরুণীকে হেনস্থা করে ৷ কাটাকাটির পর তরুণীকে অবশ্য তাঁর নিজের বাড়িতে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি জানতে পারে তরুণীর পরিবারের লোকেরাও। অভিযোগ, এরপর থেকেই তরুণীর বাবা-মা এবং যুবকের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে নিয়মিত অশান্তি লেগেই থাকে ৷ এমনকি তরুণীর পরিবারের সদস্য়রা গোপিনায়ককে জাতপাতের নামেও অপমান করতে থাকে। এরপর শনিবার সন্ধ্যায় বাড়িতে কেউ না-থাকার সুযোগে ফ্যানের সঙ্গে শাড়ির ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়। অন্যদিকে, বিচারের দাবিতে রবিবার থানার সামনে ধরণা দেয় নিহতের পরিবারের সদস্যরা। যুবকের বাবার অভিযোগ অনুযায়ী এসসি, এসটি আইনে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।