পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

নতুন নিয়মে কি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হবে? - R K Singh

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটলে তা আগেভাগে গ্রাহককে জানাতে হবে । কোথায় বিঘ্ন ঘটছে, কেন ঘটছে, আর কতক্ষণে বিদ্যুৎ ফিরবে, তা এসএমএস-এর মাধ্যমে জানাতে হবে । এছাড়াও ঠিক সময়ে নতুন সংযোগের অনুমতি দেওয়া, আর দ্রুত খারাপ মিটার সরিয়ে নতুন মিটার বসানোতেও জোর দেওয়া হয়েছে ।

Will the new rules ensure uninterrupted power supply
নতুন নিয়মে কি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব

By

Published : Dec 25, 2020, 4:22 PM IST

কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী আর কে সিং বছর দুয়েক আগে বলেছিলেন, বিদ্যুৎ এখন শ্বাসপ্রশ্বাসের মতোই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে । বছরের পর বছর ধরে আমাদের নেতারা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান, যা অধরাই থেকে যায় । গ্রাহকদের স্বার্থরক্ষায় নতুন দিশা তৈরি করে, কেন্দ্র নতুন বিদ্যুৎ নিয়ে কিছু বিধি তৈরি করেছে (গ্রাহকদের অধিকার), যাতে উন্নতমানের পরিষেবা দেওয়া যায় । মন্ত্রী বলেছেন, বিদ্যুৎবণ্টন সংস্থাগুলোর (ডিসকমস) উচিত রাজ্যগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে অবিলম্বে এই নিয়মগুলো অনুসরণ করা । তিনি জানিয়েছেন, পরিষেবায় ঘাটতি থাকলে জরিমানা নির্দিষ্ট করবে বিদ্যুৎ কমিশন ।

বারবার বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার অসুবিধার মুখে গোটা দেশের মানুষকেই পড়তে হয় । সাব-স্টেশন ও বিদ্যুতের লাইনের অপর্যাপ্ত রক্ষণাবেক্ষণ, ভোল্টেজ ওঠানামার জেরে মোটর ট্রিপ করে যাওয়া, বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরতে দেরি এবং তার জেরে বিশৃঙ্খলা, এসবই মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অংশ ।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটলে তা আগেভাগে গ্রাহককে জানাতে হবে । কোথায় বিঘ্ন ঘটছে, কেন ঘটছে, আর কতক্ষণে বিদ্যুৎ ফিরবে, তা এসএমএস-এর মাধ্যমে জানাতে হবে । এছাড়াও ঠিক সময়ে নতুন সংযোগের অনুমতি দেওয়া, আর দ্রুত খারাপ মিটার সরিয়ে নতুন মিটার বসানোতেও জোর দেওয়া হয়েছে ।

২০১৯ সালের জানুয়ারিতে, কেন্দ্র সমস্ত রাজ্য সরকারকে প্রিপেড এবং স্মার্ট মিটার বসানোর নির্দেশ দেয় । কিন্তু সেই নির্দেশের ভিত্তিতে এখনও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি । নতুন নিয়মে বিলিংয়ে স্বচ্ছতা, প্রিপেড মিটার এবং প্রবীণদের ক্ষেত্রে বাড়িতে পরিষেবা পৌঁছে দিতে বলা হয়েছে । সফলভাবে প্রয়োগ করা গেলে সবাই একে স্বাগত জানাবেন ।

দেশ কতটা উন্নত হল, তা বোঝা যায় মাথাপিছু বিদ্যুত খরচ দিয়ে । যেখানে চিনের জন প্রতি বিদ্যুৎ খরচ 4,000 কিলোওয়াট, সেখানে অ্যামেরিকা, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, তাইওয়ান ও অন্য দেশে তা 10 হাজার কিলোওয়াটেরও বেশি । এই বছরের শুরুর দিকে ভারতে জনপ্রতি বিদ্যুৎ খরচ 1,000 কিলোওয়াটে দাঁড়িয়েছিল । বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন আমাদের দেশে এতটাই সাধারণ ব্যাপার, যে গুজরাত, অন্ধ্রপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রের মতো উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ থাকা রাজ্যেও অনেক জায়গা রয়েছে, যেখানে দিনের মাত্র অর্ধেক সময় বিদ্যুৎ থাকে ।

দিল্লির কেজরিওয়াল সরকারের মতো, কিছু রাজ্য সরকারের বিদ্যুতে ছাড়ের প্রতিশ্রুতির জেরে বণ্টন সংস্থাগুলো আর্থিক টানাটানির মধ্যে রয়েছে । রাজনৈতিক মাইলেজের জন্য এধরনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়ে থাকে ।

বণ্টন সংস্থাগুলোর বকেয়া 2012-13 সালেই 3 লাখ কোটি টাকায় পৌঁছে যায় । পরের ছ’বছরের মধ্যে তা 4.8 লাখ কোটি ছাড়িয়ে গেছে । এটা ঘটছে, কারণ নেতারা আর্থিক বোঝার দায় না নিয়ে শুধু মানুষকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলেছেন । গ্রাহকদের জন্য 24 ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের পক্ষে সওয়াল করে কেন্দ্র বলেছে, কৃষিক্ষেত্রে বিদ্যুৎ সরবরাহের সময়সীমা নির্ধারণ করবে রাজ্যস্তরের নিয়ন্ত্রক কমিশন । তাহলে শিল্পে বিদ্যুৎ সরবরাহের কী হবে?

আরও পড়ুন : লোকসানে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা, কেন্দ্রের কাছে 1,022 কোটি টাকা ঋণ রাজ্যের

এক্ষেত্রে ইউএনডিপি-র সেই কথাটা মনে রাখা ভালো, যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের অভাবই উৎপাদন কমে যাওয়া এবং কর্মসংস্থান সংকোচনের কারণ, যার জেরে বহু সামাজিক-অর্থনৈতিক সমস্যার তৈরি হয় । দেশ তখনই উজ্জ্বল অগ্রগতির পথে এগোবে, যখন সংস্কারের মাধ্যমে সমস্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী সংস্থা ও ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিত করা যাবে ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details