জয়পুর, 12 অক্টোবর: নয়া সংশোধনী বিবাহ নথিভুক্তকরণ বিল নিয়ে বিতর্কের মধ্যে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত । জানিয়ে দিলেন, কোনও ভাবেই বাল্য বিবাহকে স্বীকৃতি দেবে না তাঁর সরকার । বিতর্কিত বিলটি নতুন করে পর্যালোচনা করে দেখা হবে এবং তা চালু করা একান্ত প্রয়োজন মনে হলে, তবেই সেটি আইনে পরিণত করার পথে এগোবেন বলেও সাফ জানিয়ে দিলেন তিনি ।
এই নয়া বিবাহ বিল নিয়ে প্রায় এক মাস ধরে শাসকদল কংগ্রেস এবং বিরোধীদের মধ্যে টানাপড়েন চলছে রাজস্থানে । মঙ্গলবার তা নিয়ে মুখ খোলেন গেহলত । সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাকারে বলেন, ‘‘রাজস্থানকে নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে ৷ রাজ্য বিধানসভায় বিবাহ নথিভুক্তকরণ নিয়ে একটি বিল পাশ হয়েছে ৷ পরবর্তী কালে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য সুপ্রিম কোর্টই সমস্ত বিবাহ নথিভুক্তকরণের নির্দেশ দিয়েছিল ৷ সেই মতোই বিল পাশ করানো হয় ৷ তাতেই বিতর্ক ৷ বলা হচ্ছে, ওই বিলে বাল্য বিবাহের পক্ষে সওয়াল করছে ৷’’
বিতর্কের মুখে পড়ে বিলটি নিয়ে তাঁর সরকার দ্বিতীয় বার ভাবনাচিন্তা করছে বলেও জানান রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ৷ তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাজ্যপালের কাছ থেকে বিলটি ফেরত চেয়ে পাঠিয়েছি ৷ সেটি ফের পর্যালোচনা করে দেখব আমরা ৷ তার পর প্রয়োজন মনে হলে, তবেই এগোব ৷ রাজস্থানে বাল্য বিবাহ রুখতে বদ্ধপরিকর আমরা ৷ এ নিয়ে কোনও ভাবেই আপস করা হবে না ৷’’
আরও পড়ুন: COVAXIN for Children: 2-18 বছর বয়সীদের জন্য কোভ্যাকসিনে ছাড়পত্র দিতে ডিসিজিআই’কে সুপারিশ এসইসি'র
গত 17 সেপ্টেম্বর রাজস্থান বিধানসভায় বাধ্যতামূলক বিবাহ নথিভুক্তকরণ (সংশোধনী) বিল 2021 পেশ হয় ৷ বিরোধীরা বেঁকে বসলেও, ধ্বনিভোটে বিলটি পাশ হয়ে যায় ৷ 2009 সালের আইনটিতে নারী-পুরুষ, উভয়ের বিবাহের ন্যূনতম বয়স 21 বছরে বেঁধে দেওয়া হয়েছিল ৷ বিবাহ নথিভুক্তকরণও বাধ্যতামূলক করার কথা বলা হয়েছিল তাতে ৷
নয়া বিলটিতেও নথিভুক্তকরণ বাধ্যতামূলক করা হয় ৷ কিন্তু ছেলেদের বিবাহের ন্যূনতম বয়স 21 রাখা হলেও, মেয়েদের ক্ষেত্রে তা 18 বলে উল্লেখ করা হয় ৷ শুধু তাই নয়, 21 বছরের কম বয়সি কোনও ছেলে এবং 18-র কম বয়সি কোনও মেয়ের বিবাহ হয়ে থাকলে, বিবাহের দিন থেকে 30 দিনের মধ্যে তাঁদের মা-বাবা তথা অভিভাবককে বিবাহ নথিভুক্ত করতে হবে বলে সুপারিশ করা হয় তাতে ৷ আগে জেলা স্তরের দফতরে গিয়ে বিবাহ নথিভুক্ত করতে হলেও সংশোধনী বিলে, ব্লক স্তরেই তা করা সম্ভব হবে বলেও সুপারিশ করা হয় ৷
সেই নিয়েই সমালোচনার ঝড় ওঠে ৷ বিরোধী রাজনীতিকরা যেমন গেহলত সরকারের বিরুদ্ধে বাল্য বিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার অভিযোগ তোলেন, তেমনই রাজ্যের মহিলা এবং শিশু নিরাপত্ত কমিশনও সরকারের সমালোচনায় সরব হয় ৷ সেই পরিস্থিতিতেই বিলটি নিয়ে পিছু হটল গেহলত সরকার ৷ এর আগেও যদিও গেহলত সরকার সাফাই দেয় যে, নয়া বিলটি আইনে পরিণত হলে বাল্য বিবাহ রোখা আরও বেশি সম্ভব হবে ৷ তাদের যুক্তি ছিল, বিবাহ নথিভুক্ত করতে গেলেই পাত্র-পাত্রীর বয়স সামনে এসে যাবে ৷ তাতেই এ নিয়ে আইনি পদক্ষেপ করা আরও বেশি সহজ হয়ে উঠবে সরকারের পক্ষে ৷
আরও পড়ুন: Gujarat BJP : মোদি-শাহের গুজরাতে 100 আসনে নতুন প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা বিজেপির