নিউইয়র্ক, 3 ফেব্রুয়ারি: আমেরিকার লগ্নি-গবেষণাকারী সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ (Hindenburg Research) । নাথান অ্যান্ডারসন প্রতিষ্ঠিত সংস্থার রিপোর্ট (Hindenburg Research Report) প্রকাশিত হওয়ার পরেই পড়তে থাকে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার । হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, নিজেদের শেয়ারের দর কারচুপি করে বেশি দেখিয়েছে আদানি গোষ্ঠী (Adani Group) ।
ওই রিপোর্টের সমালোচনা করে আদানি গোষ্ঠী ৷ তার উত্তরে লগ্নি নিয়ে গবেষণা করা ওই সংস্থার কটাক্ষ, জাতীয়তাবাদের আড়ালে জালিয়াতি ঢাকা যায় না (Hindenburg slams Adani Group) ৷ সংস্থার দাবি, আদানি গ্রুপের প্রাক্তন সিনিয়র এক্সিকিউটিভদের সঙ্গে আলোচনা, প্রায় কয়েক হাজার নথির পর্যালোচনা, দু'বছরের টানা গবেষণার ফল এই রিপোর্ট । ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্স অনুযায়ী, হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টের কারণে আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানির সংস্থার শেয়ার দর 47 বিলিয়ন ডলার কমে গিয়েছে ।
হিন্ডেনবার্গ কী ?হিন্ডেনবার্গ সংস্থার দাবি, তারা 'ফরেন্সিক আর্থিক গবেষণায়' বিশেষজ্ঞ । সাধারণ মানুষের পরিভাষায়, এই সংস্থা ব্যবসায়িক জগতে দুর্নীতি বা জালিয়াতির সন্ধান করে । যেমন আর্থিক অনিয়ম, খারাপ ব্যবস্থাপনা । 2020 সালে নিকোলা রিপোর্ট, 2021 সালে ক্লোভার হেল্থ রিপোর্টে দুই সংস্থাকে নাকানিচোবানি খাইয়েছিল হিন্ডেনবার্গ । যার ফলস্বরূপ, বিশ্ব বাজারে ক্রমশ কোণঠাসা হয়েছিল দুই সংস্থা ।
এক রিপোর্টেই আঁধারে আদানি হিন্ডেনবার্গের কী লাভ ? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্য করে এমন কোম্পানির লগ্নি-গবেষণা করে তারা । তাদের দাবি, ভারতের বাইরে বিভিন্ন বিনিয়োগে আদানি গ্রুপ কারচুপির আশ্রয় নিয়েছে । এক্ষেত্রে এই রিপোর্ট সামনে আসার পর থেকেই আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন গ্রুপের শেয়ার ক্রমশ পড়ছে । যদি হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টের ফলে কোনও সংস্থার স্টক বা বন্ডের দামে পতন হয়, তবে সংস্থা সেই শেয়ার থেকে লাভ করে । যদিও হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে, সেই রিপোর্টের সত্যতা যাচাই না-করেই স্টকের দাম কমিয়ে দেওয়ার জন্য সমালোচিত হয়েছেন স্টেকহোল্ডাররা ।
আরেক বিতর্কে আদানি: অন্যদিকে, হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের পাশাপাশি শুক্রবার প্রকাশ্যে এসেছে মুডি'স ইনভেস্টর সার্ভিসের রিপোর্ট । আদানি গোষ্ঠীর অধীনস্থ বিভিন্ন সংস্থার শেয়ার, মার্কেট ভ্যালু এবং ভবিষ্যতে স্টক মার্কেটে সেগুলির কী অবস্থান হতে পারে, তা নিয়ে যাবতীয় তথ্যসম্বলিত একটি রিপোর্ট এনেছে মুডি'স । তাতে দাবি করা হয়েছে, হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের পর যেভাবে আদানিদের বিভিন্ন শেয়ারের পতন দেখা যাচ্ছে, তা সংস্থার ভবিষ্যতের পক্ষেও চিন্তার (Financial Flexibility of Adani Group) ।
ওই নয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, অর্থনীতির ভাষায় এই অবস্থাকে বলা হয় অ্যাডভার্স ডেভেলপমেন্ট বা প্রতিকূল উন্নয়ন । এই মুহূর্তে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ প্রকাশ্যে আসার পর আদানি গোষ্ঠীর স্টক ভ্যালুতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে । গোষ্ঠীর অধীনস্থ বিভিন্ন সংস্থার কাঁধে ঋণের বোঝাও রয়েছে । ফলে আগামী 1-2 বছরে মূলধন বাড়িয়ে অধিক শেয়ার কেনার প্রক্রিয়া থমকে সম্ভবত গেল ।
আরও পড়ুন: আদানি ইস্যুতে যৌথ সংসদীয় কমিটি বা আদালতের নজরদারিতে তদন্তের দাবি বিরোধীদের