পটনা, 16 নভেম্বর: ছটপুজো সূরেয দেবতার উপাসনার উৎসব ৷ যে দেবতা আলো দিয়ে বিশ্বকে আলোকিত করে এবং বিশ্ববাসীকে শক্তি ও জীবন দেন ৷ আসলে সূর্য দেবতাকে ধন্য়বাদ জানানোর জন্যই নিষ্টাভরে চারদিন ধরে পালিত হয় ছটপুজো ৷ এবার ছটপুজো পালিত হচ্ছে আজ থেকে ৷ চলবে 20 নভেম্বর পর্যন্ত ৷ সূর্য দেবতার পাশাপাশি এবং ষষ্ঠী মাতাকে উৎসর্গ করেও এই পুজো করা হয় ৷ খুব কঠিন ছটপুজোর নিয়মাবলী ৷ ছটপুজোর খুঁটিনাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন ইটিভি ভারতের প্রতিবেদনে ৷
সূর্যের মধ্যেই নিহিত প্রাণশক্তির উৎস। তাই সূর্যের উপাসনা হয় এদিন। সূর্য অনেক রোগের বিনাশ করে বলেও এই পুজোর বিশেষ গুরুত্ব। মতা রয়েছে। সূর্যের শুভ প্রভাবে ব্যক্তি স্বাস্থ্য, গতি এবং আত্মবিশ্বাস লাভ করে। কার্তিক মাসের শুক্লা চতুর্থী থেকে সপ্তমী পর্যন্ত পালিত হয় ছট। এই ব্রতে সূর্যই উপাস্য। সেই সঙ্গে পুজো হয় ছট্টি মাইয়ার। ছটলক্ষ্মীও বলা হয়। এই পুজোয় উপবাস একটা গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। দীর্ঘ 36 ঘণ্টা উপবাস করতে হয়।
17 নভেম্বর সূর্যোদয় (স্নান-খাওয়া): সকাল 06.08 মিনিট
18 নভেম্বর সূর্যোদয় (খরনা): সকাল 6.09 মিনিট
19 নভেম্বর সূর্যাস্ত (সন্ধ্যার্ঘ্য): বিকেল 5.00টা
20 নভেম্বর সূর্যোদয় (ঊষার্ঘ্য): সকাল 6.10 মিনিট
- ছটপুজোর নিয়ম:উত্তর ভারতের সবচেয়ে নিষ্ঠাভরে পালিত এই উৎসবের কিছু কঠোর নিয়ম মাথায় রাখতে হয় পালনকারীকে। ছটপুজো সূচনা হয় নাহায়-খায় পর্বের মধ্যে দিয়ে। প্রথম দিনে করলা, ছোলার ডাল ও ভাত নিবেদন করা গুরুত্বপূর্ণ। উপবাস যাঁরা রেখেছেন, তাঁরা নাহায়-খায়ের দিনে খাবারে তা গ্রহণ করা উচিত। এই খাবারটি প্রত্যেক উপবাসকারীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়। কম্বল বা মাদুর ব্যবহার না-করে চার দিন মাটিতে ঘুমানো শুভ বলে মনে করা হয়। পরিচ্ছন্নতা সর্বাগ্রে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে এই বিষয়ে কোনও ত্রুটি, তা যত সামান্যই হোক না-কেন, দেবীকে অসন্তুষ্ট করতে পারে। পুজোয় নৈবেদ্য় হিসেবে দেওয়া হয় কলা, (কাঁদি সহ) অন্যান্য ফল, ক্ষীর, গুড়, মিষ্টি, ঠেকুয়া ইত্যাদি ৷
- বৈজ্ঞানিক তথ্যসূত্র:এর ধর্মীয় তাৎপর্যের বাইরে, ছটকে বৈজ্ঞানিকভাবেও বিবেচনা করা হয়। ষষ্ঠী তিথিতে একটি জ্যোতির্বিজ্ঞানী ঘটনার সঙ্গে সারিবদ্ধ হয়, যখন সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি পৃথিবীপৃষ্ঠে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণে জমা হয়। এই ঘটনার বিরূপ প্রভাব থেকে রক্ষা করার জন্য পালিত, ছট ধর্মীয় এবং বৈজ্ঞানিক উভয় ক্ষেত্রেই একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে ৷
- পৌরাণিক উল্লেখ:কথিত আছে, রামচন্দ্র লঙ্কা বিজয় করে ফিরে এসে, অযোধ্যায় পুজো করেন কুলদেবতা সূর্যের। ছটপুজোর সময়ই এই পুজো করা হয় বলে বিশ্বাস। অস্তগামী সূর্যকে ষষ্ঠীর দিন পুজো করা হয়। সেদিন নৈবেদ্য হিসেবে দুধ অর্পণ করা হয়। ব্রতের শেষদিন অর্থাৎ সপ্তমী তিথিতে ফের জলাশয়ে গিয়ে উদীয়মান সূর্যকে বন্দনা করা হয়। ছট পুজোয় কোনও মূর্তি উপাসনা করা হয় না। উদীয়মান সূর্যকে গঙ্গার তীরে গিয়ে বন্দনা করা হয়। তবে এখন অনেকে মূর্তি নির্মাণও করেন। পারিবারিক সুখ সমৃদ্ধি ও বাড়ির ছোটদের মঙ্গলকামনায় ছটের পুজো করা হয় ৷
আরও পড়ুন:
- বিশ্ব ডায়াবেটিস-ডে'তে পালিত হয় রসগোল্লা দিবসও, যেন মিষ্টি-মধুর দ্বন্দ্ব; কী বলছেন চিকিৎসক
- বিশ্ব সহানুভূতি দিবসে চারিত্রিক শিক্ষার ভিত্তি হোক উদারতা
- সামনেই বিয়ে! ব্রাইডাল মেহেন্দির রং গাঢ় ও দীর্ঘস্থায়ী রাখুন এভাবে