পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

জাঠ-রাজ্যের আন্তর্জাতিক গীতা মহোৎসবে প্রস্ফুটিত বাংলার শিল্প-সংস্কৃতি, দেদার বিক্রি হচ্ছে ধানের তৈরি দেবীমূর্তি

International Geeta Mahotsav 2023: হরিয়ানায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক গীতা মহোৎসবে সকলের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বাংলার হস্তশিল্পের স্টল ৷ মেলার মাঠে সেখানেই সবচেয়ে বেশি ভিড় জমাচ্ছেন পর্যটকরা ৷ কোন জিনিস সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ? কারিগর থেকে শুরু করে পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলল ইটিভি ভারত ৷

Etv Bharat
Etv Bharat

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Dec 10, 2023, 1:40 PM IST

আন্তর্জাতিক গীতা মহোৎসবে বাংলার স্টল ঘুরে দেখল ইটিভি ভারত

কুরুক্ষেত্র (হরিয়ানা), 10 ডিসেম্বর: হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক গীতা মহোৎসব 2023 ৷ যেখানে নজর কাড়ছে বাংলার স্টল । আসলে আন্তর্জাতিক এই মেলায় দেশের বিভিন্ন জায়গার শিল্পীরা নিজেদের হস্তশিল্প নিয়ে পসরা সাজিয়েছেন ৷ বাদ পড়েনি বাংলাও। সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ বাংলার শিল্পীদের পসরাতেই ৷ সেখানকার ধান দিয়ে তৈরি দেবীমূর্তি টানছে সবাইকে ৷ এটি দেখতেই সকলে ভিড় জমাচ্ছেন বাংলার স্টলে ৷ বিক্রিও হচ্ছে দেদার ৷

আন্তর্জাতিক গীতা মহোৎসবে বাংলার স্টল

বাংলার ভাস্কর কৃষ্ণ সিং জানান, গত কয়েক দশক ধরে তিনি এরকম প্রতিমা তৈরি করছেন ৷ গত 15 বছর ধরে আন্তর্জাতিক গীতা মহোৎসবে আসছেন এবং তাঁর শিল্প প্রদর্শন করছেন । আগে লোহা, পাথর, মাটি ও কাঠ দিয়ে মূর্তি তৈরি করতেন ৷ কিন্তু সেগুলো অনেক পুরনো হয়ে গিয়েছে বলে ক্রেতাদের জন্য নতুন কিছু মূর্তি তৈরির কথা ভাবছেন । ধানের তৈরি দেবীমূর্তি 500 টাকা থেকে 700 টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে ৷ তবে তিনি মানুষের জন্য বাজারে আলাদা কিছু নিয়ে এসেছেন, যা লোকেরা খুব পছন্দ করছে ।

তাঁর কথায়,"মাটি বা অন্যান্য জিনিস দিয়ে প্রতিমা বানাতে সময় কম লাগে ৷ কিন্তু ধান দিয়ে প্রতিমা বানাতে সময় লাগে । দিনে মাত্র দুটি মূর্তি তৈরি করা যায় । প্রায় 6 থেকে 7 ঘণ্টায় একটি প্রতিমা তৈরি হয় । তাই একজন মানুষ দিনে মাত্র দুটি মূর্তি তৈরি করতে পারে । পোড়ামাটির প্রতিটি ধান ব্যবহার করে এই মূর্তিটিকে আকার দেওয়া হয়েছে । প্রতিমার সাজসজ্জাও করা হয়েছে ধান দিয়ে ।"

তিনি আরও জানান, এতে তাঁর পরিবারের সকল সদস্য তাঁকে সহযোগিতা করেন । প্রথমদিকে শুধু পোড়ামাটির প্রতিমা তৈরি করলেও এখন আরও অনেক কিছু থেকে প্রতিমা তৈরি করা শুরু করেছেন । তাঁর পরিবারে 10 জনেরও বেশি সদস্য রয়েছে ৷ তাঁরা সবাই বহু বছর ধরে প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন । এটা তাঁদের পূর্বপুরুষের কাজ ।

আন্তর্জাতিক গীতা মহোৎসবে বাংলার স্টল

গুরুত্বপূর্ণ দিক হল হরে রাম, হরে কৃষ্ণ, রাধে রাধে, চৈতন্য মহাপ্রভু এবং কৃষ্ণের খেলনা বিশেষভাবে পোড়ামাটির তৈরি । এই সমস্ত খেলনা আন্তর্জাতিক গীতা মহোৎসবের জন্য পশ্চিমবঙ্গ থেকে তৈরি করে আনা হয়েছে । সেই কারণে গীতা জয়ন্তীতে আসা পর্যটকরা তাঁর স্টলে এসেই তিমা দেখছেন ও কেনাকাটা করছেন ।

আন্তর্জাতিক গীতা মহোৎসবে বাংলার স্টল

তিনি আরও জানান, পোড়ামাটির পাশাপাশি একক কাঠ থেকেও দেবীমূর্তি তৈরি করেন । একক কাঠকে খুব শুভ বলে মনে করা হয় । এই কারণেই বেশিরভাগ বাড়িতে কাঠের তৈরি এই ছবি তোলা হয় এবং মাতৃদেবীর পূজা করা হয় । তাঁর বাবা গুরান সিং পশ্চিমবঙ্গ সরকার 1992 সালে রাজ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন । পুরস্কার পাওয়ার পরে তিনি সমগ্র রাজ্যে প্রচুর প্রশংসা করেছিলেন ৷ যার জন্য পরিবারের মনোবল বেড়ে যায় এবং পরিবারের সকল সদস্য মিলে এই কাজটিকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যায় ৷

আন্তর্জাতিক গীতা মহোৎসবে বাংলার স্টলে ভিড় জমাচ্ছেন পর্যটকরা

এবারের উৎসবে পোড়ামাটির কৃষ্ণের খেলনা, হরে রাম হরে কৃষ্ণ, রাধে-রাধে, গণেশ ও চৈতন্য মহাপ্রভুর দল তৈরি করে আনা হয়েছে । এছাড়াও খেলনার মাধ্যমে সমাজ থেকে হারিয়ে যাওয়া গ্রামের কারুকাজ দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে । তিনি এই উৎসবে আসার জন্য অপেক্ষা করেন কারণ এখানকার পর্যটকরা তার শিল্পকে অনেক পছন্দ করেন ।

আন্তর্জাতিক গীতা মহোৎসবে বাংলার স্টল

গত কয়েক দশক ধরে পশ্চিমবঙ্গ-সহ ভারতের সমস্ত বড় মেলায় কারুশিল্প প্রদর্শন করছেন । যাই হোক, তিনি করোনার পরে এই বছর আন্তর্জাতিক গীতা মহোৎসবে এসেছেন ৷ এক পর্যটক অনুরাধা জানান, প্রথম দর্শনেই তিনি এটি পছন্দ করেন ৷ তাই তিনি ধানের তৈরি এই মূর্তিটি কেনেন । আরেক পর্যটক ভারতীর কথায়,"উনি খুব ভালো প্রতিমা এনেছেন । দেব-দেবীর মূর্তি খুব ভালোভাবে তৈরি ৷ যার কারণে মানুষও তাঁর তৈরি মূর্তি কিনছেন ৷"

আন্তর্জাতিক গীতা মহোৎসবে বাংলার স্টল

আরও পড়ুন :

1 পিতৃপক্ষে গয়ায় ভিড় বাড়ছে বিদেশিদের, পিণ্ডদানে যোগ দিলেন জার্মানিরা

2নতুন প্রজন্মকে শাস্ত্রের জ্ঞান দিতে ডিসেম্বরে এক লক্ষ সাধুর গীতা পাঠ

3পটচিত্রের সম্ভারে রঙিন বর্ধমানের হস্তশিল্প মেলা

ABOUT THE AUTHOR

...view details