নয়াদিল্লি, 11 নভেম্বর : চিনের হাতে ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকা জবরদখল হয়ে গিয়েছে বলে অনেক আগেই অভিযোগ করেছিলেন রাহুল গান্ধি ৷ কয়েকদিন আগেই অরুণাচল প্রদেশে চিনের তৈরি গ্রাম নিয়ে পেন্টাগন রিপোর্ট দেওয়ায় নড়েচড়ে বসল ভারত সরকার ৷ বৃহস্পতিবার বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, ভারতের মাটিতে চিনের অনৈতিক কার্যকলাপ কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না ৷
বিদেশ মন্ত্রকের প্রবক্তা অরিন্দম বাগচি বলেন, "আমরা মার্কিন কংগ্রেসে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রতিবেদনটি নোট করেছি ৷ যাতে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে সঙ্গে ভারত-চিন সীমান্ত এলাকায় বিশেষ করে পূর্ব সেক্টরে চিনের তরফে নির্মাণকাজের কথা উল্লেখ করা হয়েছে ৷" এই বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "এই ইস্যুতে বছরের শুরুর দিকে মিডিয়াতেও রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিল। যেমনটি আমরা বলেছিলাম যে চিন গত কয়েক বছর ধরে সীমান্ত এলাকায় নির্মাণকাজ শুরু করেছে ৷ যার মধ্যে কয়েক দশক ধরে বেআইনিভাবে দখল করা এলাকাগুলিও রয়েছে ৷"
বাগচি আরও বলেন, "ভারত নিজের ভূ-খণ্ডে এই ধরনের অবৈধ দখলদারিত্ব স্বীকার করেনি বা চিনের অযৌক্তিক দাবি মেনে নেয়নি। সরকার সর্বদা কূটনৈতিক উপায়ে এই ধরনের কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং ভবিষ্যতে তা অব্যাহত রাখবে ৷"
পেন্টাগনের রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর ভারতীয় সীমান্তে চিনের আগ্রাসন নিয়ে মোদি সরকারকে একহাত নেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি ৷ চুপ করিয়ে দেওয়ার পালা শুরু হয় বিজেপি-র তরফে । কিন্তু চিনা আগ্রাসনে ভারতের মাটি বেদখল হয়ে গিয়েছে বলে এ বার জানায় আমেরিকা । তাদের প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) পেরিয়ে ভারতের অরুণাচল প্রদেশে আস্ত গ্রাম গড়ে ফেলেছে ড্রাগন । তাতেই এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তাঁর সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে নতুন করে সরব হয়েছে কংগ্রেস । সত্য লুকিয়ে, জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করে, গোটা দেশকে অন্ধকারে রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে দাবি তাদের ।
পেন্টাগনের রিপোর্ট উদ্ধৃত করে গত শনিবার দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা । তিনি বলেছিলেন, "আমেরিকার কংগ্রেসে পেন্টাগন যে বার্ষিক রিপোর্ট জমা দিয়েছে, তাতে ভারতের মাটি বেদখল হয়ে যাওয়ার দাবিতে সিলমোহর পড়েছে ৷ ওই রিপোর্টে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে যে, অরুণাচল প্রদেশে সাড়ে 4 কিলোমিটার ভিতরে আমাদের এলাকায় ঢুকে এসেছে চিন ৷ সেখানে রীতিমতো গ্রাম গড়ে তুলেছে তারা, যার দ্বৈত ব্যবহার হচ্ছে ৷ সাধারণ মানুষ যেমন সেখানে বাস করছেন, তেমনই নবনির্মিত বাড়িগুলিকে সেনা ছাউনি হিসেবেও ব্যবহার করা হচ্ছে ৷"
আরও পড়ুন : অরুণাচলে আস্ত গ্রাম চিনের, পেন্টাগনের রিপোর্ট তুলে সরব কংগ্রেস
গত বছর লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনা বাহিনীর সঙ্গে ভারতীয় সেনার সংঘর্ষের পর থেকেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন এলাকায় চিনা আগ্রাসন নিয়ে উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছিল ৷ প্যাংগং হ্রদ, দেপসাং, উষ্ণপ্রবণ-সহ বেশ কিছু এলাকায় চিনা বাহিনী ঢুকে এসেছে বলে সেই সময় দাবি করেছিল কংগ্রেস ৷ রাহুল গান্ধি এ নিয়ে নরেন্দ্র মোদিকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছিলেন ৷