মালাপ্পুরম (কেরালা), 11 সেপ্টেম্বর : উত্তর কেরালার মাপ্পিলা মুসলিমরা ব্রিটিশ ও জমিদারদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালীন আন্দোলন শুরু করেছিলেন ৷ যা ইতিহাসে মালাবার বিদ্রোহ নামে পরিচিত ৷ মহাত্মা গান্ধি ও জাতীয় নেতারা এই বিদ্রোহকে সমর্থন করেন ৷ তার পর অসহযোগ আন্দোলনের সঙ্গে এই আন্দোলন যুক্ত হয় ৷ কিছুদিন পরই এই আন্দোলন রক্তক্ষয়ী হয়ে ওঠে ৷ পরে সাম্প্রদায়িকও হয়ে যায় ৷
আরও পড়ুন :Mohan Bhagwat : এদেশে হিন্দু-মুসলমানের পূর্বপুরুষ একই, ব্রিটিশরা এসে ভুল বুঝিয়েছে; দাবি ভাগবতের
ব্রিটিশদের পক্ষে এই আন্দোলন দমন করা একেবারেই সহজ ছিল না ৷ কিন্তু 1921 সালের শেষের দিকে এই আন্দোলন থামাতে তারা সমর্থ হয় ৷ বন্দিদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যখন ব্রিটিশরা নিয়ে যাচ্ছিল, তখন এমন একটি ঘটনা ঘটে, যা এই আন্দোলনে গভীর দাগ ফেলে দেয় ৷ যা ওয়াগন ট্র্যাজেডি নামে পরিচিত ৷ ব্রিটিশ শাসনে ভারতীয় বিদ্রোহীদের উপর হওয়া সেই নৃশংস অত্যাচারের এটা 100 তম বছর ৷
মালাবার বিদ্রোহের একেবারে শেষের দিকে মালাপ্পুরনম-পালাক্কড় জেলার সীমায় পুলামানটল সেতু সেতু ধ্বংস করে দেওয়ার অভিযোগে 100 জন বিদ্রোহীকে আটক করে ব্রিটিশরা ৷ 1921 সালের 20 নভেম্বর মালাপ্পুরমের তিরুর রেল স্টেশন থেকে কর্নাটকের বেলারি কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় বন্ধ ওয়াগনে করে ৷
আরও পড়ুন :Independence Special : ব্রিটিশদের কঠিন লড়াইয়ে মুখে ফেলেছিলেন আথারগড়ের রাজা এবং জমিদাররা
কোনোলি আহমেদ হাজি, ওই ঘটনায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন ৷ 1981 সালে তাঁর সেই ভয়ানক স্মৃতির কাহিনি ‘ওয়াগন ট্র্যাজেডি’ হিসেবে প্রকাশিত হয় ৷ সেখানে তিনি জানান, বালিশে তুলো ভরার মতো বন্দিদের ওয়াগনে প্রবেশ করানো হয় ৷ অনেক বন্দি কার্যত এক পায়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন ৷ বন্দুক দিয়ে সেনার তরফে বন্দিদের ভিতরে ঠেলে দেওয়া হয় ৷ আর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয় ৷ যাত্রা শুরু হওয়ার পরই ওয়াগনের ভিতরটা পুরো গ্যাস চেম্বার হয়ে যায় ৷
এর পর কী হল ? তাও বর্ণনা করেছিলেন আহমেদ হাজি ৷ তিনি জানান, ভিতরে আলো ও বাতাস প্রবেশের কোনও জায়গা ছিল না, তাই দমবন্ধকর পরিস্থিতির জেরে বন্দিরা চিৎকার শুরু করেন ৷ অনেকে তৃষ্ণার্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন ৷ অনেকে অসাড়ে মল-মূত্র ত্যাগ করে ফেলেন ৷ এমনকী, তৃষ্ণা মেটাতে তাঁরা ঘাম ও মূত্র পান করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন ৷
আরও পড়ুন :Independence Special : ব্রিটিশদের চোখে চোখ রেখে লড়েছিলেন রামগড়ের রানি অবন্তী বাঈ