উত্তরকাশী, 18 নভেম্বর: টানেলের মধ্যে থেকে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ শুরু হয়েছে ৷ উত্তরকাশীতে সিল্কইয়ারায় টানেলে কাজ করছে দিল্লি থেকে আনা আমেরিকার ড্রিল মেশিন ৷ সেটি ধ্বংসস্তূপের 24 মিটার পর্যন্ত পৌঁছেতে পেরেছে ৷ তবে আরও একটি ড্রিল মেশিন আনা হয়েছে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর থেকে ৷ প্রায় 20 টন ওজনের এই বিশালাকায় ড্রিল মেশিনটি দেরাদুনে নিয়ে এসেছে ভারতীয় বায়ু সেনার সি-16 বিমান ৷
শুক্রবার সন্ধ্যায় ভারতীয় বায়ুসেনা সোশাল মিডিয়ায় জানায়, "টানেলে উদ্ধারকার্য চলছে ৷ তাতে সাহায্য করছে ভারতীয় বায়ুসেনা ৷ এবার আইএএফ সি-17 বিমান প্রায় 20 টন ওজনের একটি বিশাল যন্ত্র ইন্দোর থেকে দেরাদুনে নিয়ে যাবে ৷" গত রবিবার ভোর 4টে নাগাদ উত্তরকাশীর সিল্কইয়ারায় নির্মীয়মান টানেলে ধস নামে ৷ টানেলের মধ্যেই আটকে পড়েন প্রায় 40 জন শ্রমিক ৷ তারপর থেকে উদ্ধারকার্য শুরু হলেও 144 ঘণ্টা পার হয়ে গিয়েছে ৷ এখনও টানেলেই রয়েছেন তাঁরা ৷
উদ্ধারকার্যের হালহকিকত:
5 দিনেরও বেশি সময় ধরে এই উদ্ধারের কাজ চলছে ৷ 60 মিটার বিস্তৃত ওই ধ্বংসস্তূপ থেকে শ্রমিকদের বের করে আনতে বেশ কয়েকটি স্টিলের পাইপ বসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে ৷ 6 মিটার দীর্ঘ ওই পাইপগুলির ব্যাস 800 থেকে 900 মিমি ৷ শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ধ্বংসস্তূপের 24 মিটার অর্থাৎ অর্ধেকেরও কম দূরত্ব খুঁড়তে পেরেছে আমেরিকার 25 টন ওজনের ড্রিল মেশিনটি ৷ জানা গিয়েছে, এদিন পঞ্চম পাইপটি বসানো হয়েছে ৷ এর পাশাপাশি প্রায় 20 টন ওজনের আরও একটি ড্রিল মেশিন পৌঁছল টানেলে ৷
এই টানেলটি নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে জাতীয় সড়ক নির্মাণ উন্নয়ন নিগম বা এনএইচআইডিসি ৷ এই সংস্থাটি জানায়, আমেরিকার ড্রিল মেশিনটি ঠিকঠাক কাজ করছে ৷ তা সত্ত্বেও ইন্দোর থেকে আরও একটি ড্রিল মেশিন আনা হয়েছে ৷ আমেরিকার ড্রিল মেশিনটি কাজ না-করলে ইন্দোর থেকে আনা ড্রিল মেশিন দিয়ে কাজ করা যাবে ৷ বৃহস্পতিবার সকালে আমেরিকার ড্রিল মেশিনটি দিয়ে কাজ শুরু হয়েছে ৷
আমেরিকার এই অতিকায় ড্রিল মেশিনটি দিয়ে প্রতি ঘণ্টায় 4-5 মিটার পর্যন্ত খোঁড়া যাবে বলে মনে করা হয়েছিল ৷ তবে বাস্তবে এক ঘণ্টায় এক মিটারেরও কম দূরত্ব যেতে পারছে মেশিনটি ৷ সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রমিকদের সঙ্গে অনবরত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে ৷
উদ্ধারকার্য কোন পথে ?
এই বিষয়ে এনএইচআইডিসির ডিরেক্টর অংশু মনীষ খালকো বলেন, "প্রথমে পাইপগুলিকে ওয়েল্ডিং করে তারপর সেগুলিকে ওই ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দিয়ে ঠেলে ভিতরে বসানোর কাজটা করা হচ্ছে ৷ ড্রিল মেশিনটি ডিজেল দিয়ে চালাতে হয় ৷ এই ধ্বংসস্তূপ খোঁড়ার কাজটি করতে গিয়ে মেশিন থেকে প্রচুর ধোঁয়া বেরিয়ে আসছে ৷ টানেলটি বন্ধ জায়গায় ৷ সেখানে ড্রিল মেশিন চালানোর ফলে কম্পন তৈরি হচ্ছে ৷ এর তাতে মাঝে মধ্যেই কাজটা থেমে যাচ্ছে ৷ এতে সময় লাগছে ৷" তবে আমেরিকার মেশিনটি ঠিকঠাক কাজ করছে বলে আশ্বস্ত করেছেন এই আধিকারিকও ৷ এদিকে, আটকে পড়া শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা টানেলে আসছেন ৷ ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দিয়ে একটি পাইপ বসিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে ৷ ওই পাইপের মধ্যে দিয়ে শ্রমিকদের আত্মীয়-পরিজনরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে পারছেন ৷
আরও পড়ুন:
- উত্তরকাশীতে টানেল দুর্ঘটনায় আটকে অন্তত 40 শ্রমিক! উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী
- পঞ্চম দিনে নতুন জ্যাক ও পুশ আর্থ অগার মেশিন দিয়ে চলছে উদ্ধারকার্য
- উত্তরকাশীর টানেলে আটকে পড়া শ্রমিকদের বাঁচাতে আরও 21 মিটার গভীরে উদ্ধারকারী দল