বারাবাঁকি (উত্তরপ্রদেশ), 23 মার্চ: প্রবীণ মহিলাদের খুন করে তাঁদের মৃতদেহের সঙ্গে সহবাস ! পুলিশের দাবি, একাধিক প্রবীণার সঙ্গে এই পৈশাচিক কাণ্ড ঘটিয়েছেন দুই যুবক ! ইতিমধ্যেই তাঁদের দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে (Police arrest Two Men for Serial Killings) ৷ প্রায় দু'মাসের ব্যবধানে অমরিন্দর এবং সুরিন্দর নামে এই দুই অভিযুক্তকে পাকড়াও করা হয় ৷ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত 23 জানুয়ারি খুন ও ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হন অমরিন্দর ৷ তাঁর সঙ্গী সুরিন্দরকে গ্রেফতার করা হয় বুধবার (22 মার্চ, 2023) রাতে ৷ ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তরপ্রদেশের বারাবাঁকিতে (Barabanki Serial Killers Arrest) ৷
মৃতদেহের সঙ্গে সহবাস ! বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে বলে নেক্রোফিলিয়া । 2005-06 নাগাদ এই ঘটনাতেই শিউড়ে উঠেছিল দেশবাসী । নয়াদিল্লিতে একের পর এক হত্যার ঘটনা কিনারা করতে হিমশিম খেয়ে গিয়েছিল পুলিশ-প্রশাসন । পরে নিঠারি কাণ্ডের রহস্যভেদ হওয়ায় চমকে ওঠেন সকলে । অনেকেই এই ঘটনার সঙ্গে নিঠারি কাণ্ডের (Nithari Serial Murders) মিল খুঁজে পাচ্ছেন ৷ সেই ঘটনায় মূলত নাবালক-নাবালিকা এবং তরুণীদের বলি হতে হয়েছিল ৷ আক্রান্তদের ধর্ষণ, তারপর খুন এবং খুনের পর মৃতদেহের সঙ্গে সহবাস, এমনকী, নিহতদের দেহাংশ খাওয়ারও অভিযোগ উঠেছিল দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ! পরে তারা দোষী প্রমাণিত হয় ৷
পুলিশের দাবি, গত 23 জানুয়ারি উত্তরপ্রদেশের হুনহুনা গ্রামে এক প্রবীণ মহিলাকে খুনের ছক কষেন অমরিন্দর ও সুরিন্দর ! কিন্তু, তাঁদের সেই চেষ্টা বিফলে যায় ৷ বিপদের আঁচ পেয়েই চিৎকার শুরু দেন ভুক্তভোগী মহিলা ৷ তাঁর চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা ৷ তাঁরা অমরিন্দরকে ধরে ফেলেন ৷ কিন্তু, সুরিন্দর পালিয়ে যান ৷ পরবর্তীতে অমরিন্দরকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় ৷ অবশেষে সুরিন্দরের নাগাল মেলায় স্বস্তি ফিরেছে পুলিশ মহলে ৷ খুশি এলাকার বাসিন্দারাও ৷
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, রামসনেহি থানায় ধৃত অমরিন্দরের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই তিনটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ৷ ঘটনার তদন্তকারী আধিকারিক এই প্রসঙ্গে বলেন, "তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি, শেষ একমাসের মধ্যে (অমরিন্দর ধরা পড়ার আগে পর্যন্ত) এই খুনি জুটি অন্তত দুই প্রবীণ মহিলাকে খুন করেছেন ৷ আমাদের মনে হচ্ছে, এটি সিরিয়াল কিলিং বা ধারাবাহিক খুনের মামলা ৷ অভিযুক্তরা অন্তত দুই মহিলাকে খুন করেছেন ! আরও একজনকে খুন করার চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা ৷ কিন্তু, তাতে ব্যর্থ হন ৷ অমরিন্দর জেরায় জানিয়েছেন, সুযোগ পেলে তিনি ও সুরিন্দর ফের ওই মহিলাকে মারার চেষ্টা করতেন !"
সুরিন্দরকে গ্রেফতারের পর ইতিমধ্য়েই একপ্রস্থ জেরা করেছে পুলিশ ৷ তাতে নিজেদের 'মোডাস অপারেন্ডি' বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্য়া করেছেন ওই যুবক ৷ তিনি জানিয়েছেন, তাঁরা মূলত নির্জন স্থানে বয়স্ক মহিলাদের নিশানা করতেন ৷ প্রথমে ওই মহিলাদের খুন করতেন ৷ তারপর তাঁদের মৃতদেহের সঙ্গে সহবাস করতেন দুই কীর্তিমান ! আক্রান্তদের দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও ধৃতদের বক্তব্যের স্বপক্ষে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে ৷
আরও পড়ুন:সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ, মহিলা আইনজীবীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে মৃত্যু নিশ্চিত করতে ছোড়া হল পাথর