গোটা দেশজুড়ে পেট্রোপণ্যের চড়া দাম সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে । এ বছর পেট্রল এবং ডিজেলের দাম সব মিলিয়ে 24 দফায় বৃদ্ধি পেয়েছে । অভাবনীয়ভাবে, গতকালের আগে এর মূল্য পরপর 12 দিন ধরে টানা বৃদ্ধি পেয়েছে ।
কোভিড–19 প্যানডেমিকের ছেড়ে যাওয়া অর্থনৈতিক ডামাডোলের প্রেক্ষাপটে পেট্রোপণে্যর চড়া দাম মানুষের দুর্দশা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে । এই মূল্যবৃদ্ধি সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকটকে আরও জটিল করে তুলছে । মূল্য কমিয়ে আনা ছাড়া আর কোনও জবাবে যে মানুষ সন্তুষ্ট হবেন না, সে কথা স্বীকার করে নিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বাহি্যকভাবে জানিয়েছেন যে, তিনি এই বিষয়ে ‘ধর্মসংকট’-এ ভুগছেন । তিনি আরও বলেছেন যে, পেট্রোপণে্যর দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সংযুক্ত, কাজেই মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা তাঁর হাতে নেই । তিনি বলেছেন যে যুক্তিযুক্তভাবে মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে রাজ্য এবং কেন্দ্রের উচিত নিজেদের মধে্য আলোচনা করা ।
কেন্দ্র সরকার 2017 সালে পেট্রোলের মূল্য দৈনিক হারে পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সবুজ সংকেত দিয়েছিল । যদিও আন্তর্জাতিক বাজারের ওঠাপড়ার নিরিখে বিচার করলে, তাকে অর্ধসত্যই বলা যেতে পারে । গতবছর অতিমারীর জেরে চাহিদায় ঘাটতি দেখা দেওয়ায় অপরিশোধিত তেলের মূল্য দ্রুত হারে হ্রাস পেয়েছিল । কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের তরফে অন্তঃশুল্ক চাপানোয় পেট্রোলের মূল্য কমিয়ে আনার পরিবর্তে আরও বেশি বাড়ানো হয় ।
কোভিড–19 এর আগে, কেন্দ্রীয় সরকার পেট্রলের উপর অন্তঃশুল্ক ধার্য করেছিল 19 টাকা 98 পয়সা । করোনার সময় অন্তঃশুল্ক বাড়িয়ে 32 টাকা 98 পয়সা করে দেওয়া হয় । একইরকমভাবে ডিজেলের উপর অন্তঃশুল্ক 15 টাকা 83 পয়সা থেকে বাড়িয়ে 31 টাকা 83 পয়সা করে দেওয়া হয় । অন্তঃশুল্ক চাপানোর ক্ষেত্রে রাজ্যগুলিও তাদের প্রভাব খাটিয়েছে ।
দেশবাসীকে এমনিতেই অনেক বেশি খরচ করতে হয় কারণ দেশে অপরিশোধিত তেলের 89 শতাংশই বাইরে থেকে আমদানি করা হয় । অনুরূপভাবে, দেশের যতটা এলপিজি প্রয়োজন, তারও 53 শতাংশ আসে বিদেশ থেকে । সাধারণ মানুষ সেটা বোঝে । কিন্তু ইতিমধ্যেই দেশে যে অর্থনৈতিক সংকট চলছে, তার প্রেক্ষিতে তাদের সঙ্গে হওয়া বঞ্চনাকেই মানুষ এক্ষেত্রে ত্রুটি বলে গণ্য করছে ।