আগরতলা, 21 অক্টোবর : পড়শি রাজ্যে ভাল ভাবেই নিজেদের উপস্থিতির জানান দেওয়া গিয়েছে ৷ এ বার ত্রিপুরাজয়ের লক্ষ্যে পুরোদমে কাজে নেমে পড়ল তৃণমূল এবং তাদের নির্বাচনী কাজকর্মের দায়িত্বে থাকা ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাক ৷ বৃহস্পতিবার থেকে রাজ্যে ‘ত্রিপুরার জন্য তৃণমূল’ নামের 12 দিনের জনসংযোগ কর্মসূচি শুরু করল তারা ৷ এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা পৌঁছে দেওয়া হবে ৷
বাংলায় অভূতপূর্ব সাফল্যের পর 2022-এর গোয়া এবং 2023-এর ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে জোড়াফুল ফোটানোর চেষ্টায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং টিম পিকে জুটি ৷ এর মধ্যে গোয়ার চেয়ে আপাতত ত্রিপুরাতেই খানিকটা হলেও ভিত মজবুত করতে পেরেছে তৃণমূল ৷ সেখানে ‘বাংলা নিজের মেয়েকে চায়’ স্লোগান যে খাটবে না, তা-ও অনুধাবন করতে পেরেছে তারা ৷ সেই কারণেই, বিজেপি থেকে আশিস দাসের মতো নেতাকে দলে টানা হয়েছে ।
আরও পড়ুন:Mamata Banerjee : বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে চলতি মাসেই গোয়া যেতে পারেন মমতা
কংগ্রেস থেকেও দলে দলে লোকজন তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন । যদিও মমতাকে সামনে রেখেই ত্রিপুরায় ক্ষমতাদখলের লড়াইয়ে নামছে তৃণমূল, তবে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের আগে যে ভাবে পিকে-র রণকৌশল ধরেই এগিয়েছিল তৃণমূল, ত্রিপুরাতেও তার অন্যথা হবে না । আগামী 12 দিন ধরে ‘ত্রিপুরার জন্য তৃণমূল’ কর্মসূচি চলবে সেখানে । তার আওতায় সেখানকার 8টি জেলা, 58টি ব্লক এবং 20টি শহরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে যাবেন দলবীয় নেতৃত্ব । ক্ষমতায় এলে কী ভাবে তৃণমূল কাজ করবে, তা বোঝানো হবে সাধারণ মানুষকে । রাজ্যের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য, রাজ্য যুব কমিটি এবং স্থানীয় নেতারা তিন ভাগে ভাগ হয়ে 31 অক্টোবর পর্যন্ত এই জনসংযোগ কর্মসূচি চালাবেন ।
এর আগে, গেরুয়া দাপটে বাংলায় যখন কার্যত কোণঠাসা তৃণমূল, সেই সময় বিজেপি-র মতো তারকা-সম্বলিত প্রচারে না গিয়ে, একেবারে মাটির কাছাকাছি থেকে সাধারণের কাছে পৌঁছে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন পিকে । তার জন্য, তিনটি পর্যায়ে রণকৌশল তৈরি করেন তিনি ৷ প্রথম পর্যায়ে ছিল ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি, যার আওতায় নিজেদের অভাব অভিযোগ সরাসরি মমতার কাছে পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন বাংলার মানুষ ৷ দ্বিতীয় পর্যায়ে ছিল ‘বাংলার গর্ব’ কর্মসূচি ৷ এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে মমতা সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মসূচি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয় ৷ আর সর্বশেষে ছিল মুখে মুখে ‘বাংলা নিজের মেয়েকে চায়’ স্লোগান ছড়িয়ে দেওয়া ৷ ত্রিপুরায় কাকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ করে এগোবে তৃণমূল, তা যদিও এখনও ঠিক হয়নি, তবে বিপ্লবের মোকাবিলা করতে ভূমিপুত্রকেই যে তারা তুলে ধরবে, তা সন্দেহাতীত ৷
আরও পড়ুন:Farmers' Protest : এ ভাবে রাস্তা আটকে রাখা যায় না, কৃষক আন্দোলন নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট
বাংলায় বিজেপি-র প্রবল আস্ফালন সত্ত্বেও যে ভাবে বিপুল সমর্থন নিয়ে তৃতীয় বার ক্ষমতায় ফিরেছেন মমতা, তাতে জাতীয় রাজনীতিতেও তৃণমূলের অবস্থান নিয়ে নতুন সমীকরণের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে ৷ চাইলে একমাত্র তৃণমূলই বিজেপি-কে উৎখাত করতে পারে, মানুষের মনে এমন একটা ধারণা তৈরি করতে তৃণমূলের তরফেও চেষ্টায় কোনও ত্রুটি নেই ৷ ত্রিপুরায় তাদের এই ফর্মুলা কাজে লাগে কি না, এখন সেটাই দেখার ৷ তবে দীর্ঘ বাম শাসনের পর বিজেপি-র রাজত্বে ত্রিপুরার অবনতি বই উন্নতি হয়নি বলে দাবি তৃণমূলের ৷ তাই সেখানে জোড়াফুল ফোটানো নিয়ে আত্মবিশ্বাসী তারা ৷
