নয়াদিল্লি, 12 অগস্ট: পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে হাইকোর্টের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি) ৷ এনএইচআরসি-এর সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত ৷ রাজ্যের সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোটে সংবেদনশীল নির্বাচনী এলাকা চিহ্নিত করার জন্য এনএইচআরসি নিজেদের পর্যবেক্ষক মোতায়েন করার আর্জি জানিয়েছিল ৷ সেই আবেদনই শনিবার পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ৷
বিচারপতি বি ভি নাগারত্না এবং উজ্জ্বল ভূয়ানের বেঞ্চ জানিয়েছে, এনএইচআরসি-র হস্তক্ষেপ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীনতাকে প্রভাবিত করেছে। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে এনএইচআরসি-র দায়ের করা পিটিশনের এদিন শুনানি হয় বিচারপতি বি ভি নাগারত্নার ডিভিশন বেঞ্চ ৷ সেই শুনানিতেই এদিন জাতীয় মানবাধিকারের ভূমিকায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট ৷ বিচারপতি বি ভি নাগারত্নার ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানায়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশনা অবাধ ও সুষ্ঠু পঞ্চায়েত নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এক্তিয়ারে দখলদারি করছে ৷
এনএইচআরসি গত 12 জুন এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, পঞ্চায়েত ভোটের তদন্তে বিশেষ মানবাধিকার পর্যবেক্ষক হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছে ৷ ভোট কেন্দ্রীক হিংসার ঘটনাগুলির প্রাথমিক তদন্তও করে কমিশন ৷ একই সঙ্গে, ভোটের সময় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি লঙ্ঘন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমন সংবেদনশীল নির্বাচনী এলাকা চিহ্নিত করতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকেও নির্দেশ মানবাধিকার কমিশন ৷ কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টে প্রথমে সিঙ্গল বেঞ্চ এবং পরে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ এনএইচআরসি-র আপিল খারিজ করে দেয়। পাশাপাশি আদালত সাফ জানিয়ে দেয়, পঞ্চায়েত নির্বাচন পরিচালনার ক্ষমতা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এক্তিয়ারভুক্ত বিষয় ৷ সাংবিধানিক একটি সংস্থা নির্বাচন কমিশন ৷ তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে বাধ্য ৷
আরও পড়ুন: রাজদ্রোহর বদলে আসছে রাষ্ট্রদ্রোহ আইন, নয়া বিলে কঠোর সাজার প্রস্তাব
এদিন সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে জানায়, "মানবাধিকার রক্ষার আড়ালে এনএইচআরসি-র এই আদেশ জারি করা উচিত নয় ৷ কারণ উল্লিখিত নির্দেশটি অবাধ ও সুষ্ঠু পঞ্চায়েত নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশনের এক্তিয়ারভুক্ত বিষয় ৷" সেই এক্তিয়ারকে এনএইচআরসি লঙ্ঘন করতে চাইছে বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি ৷ একই সঙ্গে, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশে জানিয়েছে, "বিচার ব্যবস্থার সমান্তরাল আসন হিসাবে কাজ করতে পারে না।"