নয়াদিল্লি, 15 জুলাই :যে আইনের মাধ্যমে মহাত্মা গান্ধি-সহ অন্য স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ‘চুপ’ করিয়ে রাখত ব্রিটিশ শাসকরা, সেই আইন স্বাধীন ভারতে কেন বলবৎ থাকবে ? বৃহস্পতিবার এই প্রশ্নই তুলল সুপ্রিম কোর্ট ৷ স্বাধীনতার পর 70 বছরেরও বেশি সময় কেটে গেলেও কেন দেশদ্রোহ সংক্রান্ত এই আইন বাতিল করল না কেন্দ্রীয় সরকার ? এদিন এই প্রশ্নও তুলেছে শীর্ষ আদালত ৷
সুপ্রিম কোর্টে এই সংক্রান্ত একটি মামলা করা হয় ৷ সেখানে দেশদ্রোহ বিরোধী এই আইনের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করা হয় ৷ সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই এদিনের শুনানি হয় দেশের প্রধান বিচারপতি এন বি রামান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে ৷ শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এই আইনের ‘অপব্যবহার’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ৷ এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে নোটিস পাঠিয়েছেন ৷ এই আইনে জামিন অযোগ্য় ধারায় গ্রেফতার করা হয় ৷ আর দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ সাজা হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ৷
আরও পড়ুন :সংসদীয় কমিটির বৈঠক সেরে সোজা ককপিটে মোদির দলের সাংসদ
প্রধান বিচারপতির সঙ্গে এই মামলার শুনানির বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি এ এস বোপান্না এবং ঋষিকেশ রায় ৷ তাঁদের পর্যবেক্ষণ, এই আইনের যথেচ্ছ অপব্যবহার হচ্ছে ৷ একই সঙ্গে তথ্য প্রযুক্তি আইনের 66এ ধারারও অপব্যবহার হচ্ছে ৷ যে আইনকে আগেই বাতিল করেছিল শীর্ষ আদালত ৷ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘‘এটাকে একজন কাঠমিস্ত্রির সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে ৷ যাঁকে একটা কাঠ কাটতে বলা হয়েছিল ৷ কিন্তু তিনি গোটা জঙ্গলই সাফ করে দিলেন ৷’’
প্রধান বিচারপতির মতে, কারও কথা যদি ভালো না লাগে, তাহলে এই আইন অনেকেই ব্যবহার করতে চাইবেন ৷ তাই স্বাধীনতার এত বছর পরও কেন কেন্দ্র এই নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি, সেই প্রশ্নই তুলেছেন তিনি ৷ তবে এই নিয়ে যে কোনও রাজ্য সরকারকে দায়ী করা হচ্ছে না, সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ৷ আদালত জানিয়েছে, যে প্রতিষ্ঠানের হাতে এই আইনের ব্যবহারের দায়িত্ব রয়েছে, তারাই এর অপব্যবহার করছে ৷ প্রত্যন্ত গ্রামে কোনও পুলিশ আধিকারিক যদি কোনও ব্যক্তিকে বিপাকে ফেলতে চায় ৷ তাহলে তিনি এই আইন ব্যবহারের সুযোগ নিতে পারেন ৷