মুম্বই, 3 জুলাই: ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি বা এনসিপি-র সংকট ক্রমশ বড় আকার নিচ্ছে ৷ একদিকে যখন বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা করছেন শরদ পাওয়াররা, তখন পালটা রাজনৈতিক চাল দেওয়া হল বিদ্রোহীদের তরফ থেকে ৷ সোমবার এনসিপি-র সাংসদ প্রফুল প্যাটেল জানিয়েছেন, এবার থেকে মহারাষ্ট্রে তাঁদের দলের সভাপতি হিসেবে বেছে নেওয়া হল সুনীল তাতকারেকে ৷ আর বিধানসভায় এনসিপি-র মুখ্য সচেতক হিসেবে অনিল ভাইদাস পাটিলকে বেছে নেওয়া হল ৷
প্রসঙ্গত, রবিবার দুপুরে এনসিপি-র বিদ্রোহের খবর সামনে আসে ৷ হঠাৎই মহারাষ্ট্রের রাজভবনে হাজির হয়ে মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের সরকারে সামিল হন এনসিপি বিধায়ক অজিত পাওয়ার ৷ তাঁকে উপ-মুখ্যমন্ত্রী করা হয় ৷ আরও আটজন এনসিপি বিধায়ককে মন্ত্রী করা হয় ৷ সেই তালিকায় সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ নাম ছগন ভুজবল ৷ শপথ গ্রহণের পরই অজিত পাওয়ার জানিয়েছিলেন যে তাঁরাই আসল এনসিপি ৷
বলা যেতে পারে সেই সূত্র ধরেই প্রফুল প্যাটেলের এই ঘোষণা ৷ একই সঙ্গে তিনি এ দিন জানিয়েছেন যে এনসিপি-র পরিষদীয় দল অজিত পাওয়ারকেই বিধানসভায় তাঁদের নেতা হিসেবে বেছে নিয়েছেন ৷ আর সেই তথ্য মহারাষ্ট্র বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন ৷
আরও পড়ুন:শিন্ডেকে গদিচ্যুুত করে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হবেন আজিত পাওয়ার, দাবি কংগ্রেস নেতার
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, মহারাষ্ট্রে এনসিপি-র সভাপতি ছিলেন জয়ন্ত পাটিল ৷ তাঁকে ওই পদ থেকে সরিয়ে সুনীল তাতকারেকে দায়িত্ব দেওয়া হল বলে জানিয়েছেন প্রফুল ৷ পাশাপাশি এটাও উল্লেখ করেছেন যে এখন থেকে মহারাষ্ট্রে এনসিপি-র সাংগঠনিক রদবদলের সব সিদ্ধান্ত সুনীলই নেবেন ৷
অন্যদিকে এনসিপি নেতা তথা মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার বলেন, ‘‘আমি মিডিয়া রিপোর্ট থেকে জানতে পেরেছি যে আমাদের 9 বিধায়কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে । এই প্রসঙ্গে, আমরা জয়ন্ত পাটিল ও জিতেন্দ্র আওহাদের বিধায়ক পদ খারিজ করার জন্য মহারাষ্ট্র বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে একটি আবেদন পাঠিয়েছি ।’’
এই যখন পরিস্থিতি, তখন উলটোদিকে শরদ পাওয়ার ঘোষণা করেন যে প্রফুল প্যাটেল ও সুনীল তাতকারের সদস্যপদ খারিজ করা হচ্ছে এনসিপি থেকে ৷ তার আগে যদিও শরদ-কন্যা তথা বর্তমানে এনসিপির জাতীয় কার্যকরী সভানেত্রী সুপ্রিয়া সুলে একটি চিঠি লেখেন বাবাকে ৷ সেখানে তিনি প্রফুল প্যাটেল ও সুনীল তাতকারের সাংসদ পদ খারিজ করা ও দলবিরোধী কাজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আরজি জানান ৷
আরও পড়ুন:সাম্প্রদায়িক বিভাজন রুখতে ঐক্যবদ্ধ শক্তি প্রয়োজন, পাওয়ারের নিশানায় বিজেপি
প্রফুল ও অজিতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এখনও না নেওয়া হলেও রবিবার রাজভবনে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য তিনজনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় ৷ এই তিনজন হলেন নরেন্দ্র রানে, বিজয় দেশমুখ ও শিবাজি রাও গার্জে ৷ তাঁরা দলে যে পদে ছিলেন, সেই পদও খারিজ করে দেওয়া হয় ৷ অনুগামীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও এটা নিয়ে চিন্তিত নন প্রফুলরা ৷ বরং তাঁরা শরদ পাওয়ারের আশীর্বাদ নিয়েই আগামিদিনে এগিয়ে যেতে চান বলে প্রফুল জানিয়েছেন ৷