পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

Odisha Train Accident: ট্রেন দুর্ঘটনার পর স্কুলঘরে রাখা থরে থরে দেহ, টিভিতে দেখে ক্লাসে যাচ্ছে না ভীত পড়ুয়ারা - ভীত পড়ুয়ারা

ওড়িশার ট্রেন দুর্ঘটনার পর তাদেরই স্কুলঘরে থরে থরে রাখা ছিল দেহ ৷ টিভিতে এই দৃশ্য দেখার পর ভয়ে আর স্কুলমুখী হচ্ছে না বাহানাগা হাইস্কুলের পড়ুয়ারা ৷

Odisha Train Accident
Odisha Train Accident

By

Published : Jun 8, 2023, 7:32 PM IST

বালাসোর, 8 জুন: স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে খুদে পড়ুয়ারা ৷ ভীতিটা স্কুল, শিক্ষক বা পড়াশোনার প্রতি নয় ৷ মনে ভয় বাসা বেঁধেছে ওড়িশার ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার পর থেকে ৷ বাহানাগা বাজারের দুর্ঘটনায় শয়ে শয়ে মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার পর একের পর এক দেহ এনে রাখা হয়েছিল এই স্কুলেই ৷ কয়েক লহমায় বাহানাগা হাইস্কুল অস্থায়ী মর্গে পরিণত হয়েছিল ৷ যা টিভির পর্দায় দেখে শিউড়ে উঠেছিল স্কুলের ছাত্র-অভিভাবকরা ৷ যে ঘরগুলিতে এই ক'দিন সারি বেঁধে রাখা ছিল রাশি রাশি মৃতদেহ, সেই ঘরে আর পঠন-পাঠনে মন বসছে না পড়ুয়াদের ৷ চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়েছে স্কুল পরিচালন কমিটির ৷ এই স্কুল বিল্ডিং ভেঙে ফেলার আর্জি জানিয়ে রাজ্য সরকারের দ্বারস্থ হয়েছে তারা ৷

65 বছরের পুরনো বাহনাগা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা প্রমিলা সোয়াইন স্বীকার করে নিয়েছেন যে, "ছোট ছাত্ররা ভয় পাচ্ছে ৷" এই ভয় কাটাতে স্কুল কর্তৃপক্ষ আধ্যাত্মিক কোনও অনুষ্ঠান করা এবং কিছু নিয়ম আচার পালন করার পরিকল্পনা করেছে বলেও জানান তিনি । তিনি বলেন, স্কুলের কিছু সিনিয়র ছাত্র এবং এনসিসি ক্যাডেটরাও দুর্ঘটনার পর উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছিল ।

বালাসোরের জেলা কালেক্টর দত্তাত্রেয় ভাউসাহেব শিন্ডে স্কুল এবং গণশিক্ষা দফতরের নির্দেশে বৃহস্পতিবার ওই স্কুলে পরিদর্শনে যান ৷ তিনি বলেন, "আমি স্কুল পরিচালন কমিটির সদস্য, প্রধান শিক্ষিকা, অন্যান্য কর্মচারী এবং স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে দেখা করেছি । তাঁরা পুরনো ভবন ভেঙে নতুন করে সংস্কার করতে চান যাতে বাচ্চাদের ক্লাসে যেতে কোনও ভয় বা আশঙ্কা না থাকে ।"

আরও পড়ুন:স্বামীকে মৃত দেখিয়ে রেল দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ হাতানোর চেষ্টার অভিযোগ মহিলার বিরুদ্ধে

স্কুল কমিটির একজন সদস্য জেলা কালেক্টরকে বলেছেন যে, টিভিতে স্কুল ভবনে পড়ে থাকা মৃতদেহ দেখার পরে, শিশুরা তার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পড়েছে এবং 16 জুন পুনরায় খোলার পরে তারা আর স্কুলে আসতে চাইছে না । স্কুল খোলার আগে মৃতদেহগুলিকে ভুবনেশ্বরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে এবং স্কুল প্রাঙ্গণ সংক্রমণমুক্ত ও পরিষ্কার করা হয়েছে ৷ তবুও ছাত্র এবং অভিভাবকরা আতঙ্কিত অবস্থায় আছেন বলে জানিয়েছেন তিনি ৷

একজন ছাত্র বলেছে, "এটা ভুলে যাওয়া কঠিন যে, আমাদের স্কুল বিল্ডিংয়ে এতগুলি দেহ রাখা হয়েছিল ৷" এসএমসি প্রাথমিকভাবে এই উদ্দেশ্যে শুধুমাত্র তিনটি শ্রেণিকক্ষের অনুমতি দিয়েছিল । পরে জেলা প্রশাসন দেহ শনাক্তকরণের জন্য স্কুলের খোলা হল ব্যবহার করে । সুজিত সাহু নামে এক অভিভাবক বলেন, "আমাদের বাচ্চারা স্কুলে যেতে চাইছে না এবং তাদের মায়েরা এখন তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠাতে আগ্রহী নয় ৷" কিছু অভিভাবক তাঁদের সন্তানকে বাহানাগা উচ্চ বিদ্যালয়ে না পাঠিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের কথাও ভাবছেন ।

আরও পড়ুন:আইসিইউতে শুয়ে নেপালের ছেলে ! টিভির সাক্ষাৎকার মেলাল সন্তান ও বাবা-মাকে

এ দিকে, বালাসোরের জেলা শিক্ষা আধিকারিক (ডিইও) বিষ্ণুচরণ সুতার বুধবার এসএমসি এবং প্রাক্তন ছাত্রদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছেন ৷ শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা যাতে কোনও নেতিবাচক চিন্তাভাবনা পোষণ না করেন, সেই আর্জি জানান তিনি । তাঁর কথায়, "আমরা নিশ্চিত করব যে এই কারণে কোনও শিক্ষার্থী স্কুল থেকে যাতে বেরিয়ে না যায় ৷"

ট্রেন দুর্ঘটনার সময় স্কুল এবং স্থানীয় লোকজন উদ্ধার ও ত্রাণকাজে বিরাট অবদান রেখেছে বলে উল্লেখ করে ডিইও বলেন, বাহানাগাবাসী যে সাহসী তা ঘটনার সময় প্রমাণিত হয়েছে । জেলা কালেক্টর বলেছেন যে, তিনি এসএমসিকে তাদের কাঠামো ভেঙে ফেলার দাবি সম্পর্কে একটি প্রস্তাব পাশ করতে এবং সরকারের কাছে জমা দিতে বলেছেন ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details