ভোপাল, 3 ডিসেম্বর: বিজেপির সবচেয়ে দীর্ঘকালীন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান মধ্যপ্রদেশে দলের অত্যাশ্চর্য জয়ের নায়ক হিসাবে কার্যত রবিবার উঠে এসেছেন ৷ 64 বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ মধ্যপ্রদেশে বিজেপির পক্ষে ছক ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য 'লাডলি বেহনা'-এর মতো গেম-চেঞ্জার স্কিম চালু করে বিরোধীদের ধরাশয়ী করতে চেয়েছিলেন ৷ আর তাতে যে তিনি সফল তা এদিনের ভোটের ফল থেকেই স্পষ্ট ৷ যদিও তাঁর দল শেষ পর্যন্ত মামাকে মুখ্যমন্ত্রী মুখ হিসাবে রাজ্যে উপস্থাপন করা থেকে বিরতই ছিল।
2020 সালের মার্চে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং তাঁর অনুগত বিধায়করা দল ছেড়ে বেরিয়ে আসলে রাজ্যে কমলনাথের নেতৃত্বে কংগ্রেস সরকার পতন ঘটে ৷ আর এরপরই শিবরাজ চৌহানের দল বিজেপি 2018 সালে ভোটে হেরে গেলেও, ফের সরকার গঠন করে ৷ এরপর অবশ্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁকে চতুর্থ মেয়াদের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসায় ৷ তবে বিজেপি প্রধানত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখকে ব্যবহার করেই 17 নভেম্বরের বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল ৷ যদিও শিবরাজ চৌহান প্রার্থীদের ভিড়ের মধ্যে রাজ্যের শীর্ষ প্রশাসনিক পদের জন্য শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেই রয়েছেন।
2005 সালে 46 বছর বয়সে প্রথম মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন শিবরাজ সিং চৌহান ৷ তাঁর 'মাটির ছেলে' ইমেজ নিয়ে আন্তরিকভাবে কাজ করে, মৃদুভাষী এই নেতা সহজেই কৃষক, গ্রামীণ এলাকা, মহিলা এবং তরুণদের আর্থ-সামাজিক উদ্বেগের সঙ্গে নিজেকে দ্রুত মিশিয়ে ফেলতে পারেন ৷ মার্চ মাসে লাডলি বেহেনা স্কিম চালু করেছিলেন শিবরাজ ৷ মহিলাদের 1250 টাকা মাসিক আর্থিক সহায়তা প্রদান করা শুরু হয় ৷ এপরে চলতি নির্বাচনের আগে এই টাকার পরিমাণ বাড়িয়ে 3000 টাকা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
নির্বাচনী প্রচারে এই প্রকল্পের কথা বলতে গিয়ে শিবরাজ চৌহান দেহাতি শৈলীতে মন্তব্য বলেছিলেন, "এটি পরিবারের মহিলাদের মর্যাদা বাড়িয়েছে ৷ এখন তো শাশুড়িরাও পুত্রবধূদের ঘি দিয়ে রুটি দেয় ৷ এই প্রকল্পটি মহিলাদের স্বনির্ভর করে তুলেছে।" একই সঙ্গে তাঁর দাবি, স্কিমটি দলকে যে প্রচুর উপকার দিয়েছে ৷ 2018 সালে মহিলা ভোটারদের ভোটদানের হার ছিল 74.22 শতাংশ, যা 2023 সালে বেড়ে 76.25-এ দাঁড়িয়েছে ৷ মনে করা হয় যে, মহিলারা বিপুল সংখ্যক বিজেপির পক্ষেই এবার ভোট দিয়েছেন একমাত্র এই লাডলি বহেনা স্কিমের জন্য ৷ এই বছর মোট 230 টি বিধানসভা আসনের মধ্যে 182টি আসনেই মহিলা ভোটারদের ভোটদানের হার বেড়েছে।