রাজৌরি (জম্মু ও কাশ্মীর), 5 মে: জম্মু ও কাশ্মীরের রাজৌরিতে তল্লাশি অভিযানের সময় ফের সেনার উপর সন্ত্রাসী হামলা ৷ শক্তিশালী বিস্ফোরণে পাঁচ সেনা জওয়ান শহিদ হয়েছেন ৷ আহত আরও এক জওয়ানকে চিকিৎসার জন্য কমান্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৷ নর্দান কমান্ডের তরফে হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
জম্মু ও কাশ্মীরের রাজৌরি জেলার কান্দি এলাকায় জঙ্গি ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে নতুন করে শুক্রবার সংঘর্ষ শুরু হয়েছে ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, এটি জম্মু ও কাশ্মীরে এত দিনের মধ্যে সেনা-জঙ্গির মধ্যে তৃতীয় এনকাউন্টার। জম্মু পুলিশের অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর মুকেশ সিং জানিয়েছেন, এদিনের সেনা-জঙ্গির মধ্যে গুলির লড়াই অব্যাহত ৷ পাশাপাশি বেশ কয়েকজন জঙ্গির খোঁজে যৌথ বাহিনীর তল্লাশির সময় এই বিস্ফোরণ ঘটে ৷ পুলিশ এবং যৌথ বাহিনী এলাকাটি ঘিরে রেখেছে বলেও জানান এডিজি।
পুলিশ সূত্রে খবর, রাজৌরিতে জঙ্গিদের উপস্থিতি সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়ার পরই নিরাপত্তা বাহিনী এলাকাটি ঘিরে তল্লাশি শুরু করে ৷ সেই সময়ই এই জঙ্গিদের সঙ্গে সেনার সংঘর্ষ শুরু হয় বলে মনে করছে রাজ্য পুলিশ। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, "যৌথ অভিযানের সময়, রাজৌরির কান্দি বনে যৌথ বাহিনীর উপরে সন্ত্রাসীরা একটি বিস্ফোরক ডিভাইস ব্যবহার করে ৷ তার জেরেই পাঁচ জওয়ান শহিদ হয়েছেন ৷"
সেই সঙ্গে সেনার তরফে জানানো হয়, ফের বাহিনীর উপর প্রতিশোধ নিতে পারে জঙ্গিরা যার জেরে আশপাশের এলাকাতেও অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে ৷ এনকাউন্টারের জায়গাতেও জওয়ানদের যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ অন্যদিকে, আহত জওয়ানকে উধমপুরের কমান্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে খবর। সেনা মুখপাত্র জানিয়েছেন, প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, একদল সন্ত্রাসী এলাকায় আটকে আছে। সেই সঙ্গে, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীতেও বেশ কয়েকজনের হতাহতের সম্ভাবনা আছে বলে দাবি সেনার। পাশাপাশি অপারেশন এখনও চলছে বলে জানিয়েছে সেনা। তবে নিরাপত্তার খাতিরে এখনই বিশদ তথ্য নিশ্চিত করতে নারাজ সেনা ৷
সেনাবাহিনীর হোয়াইট নাইট কর্পসের এক মুখপাত্র বলেন, "সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে ৷ কান্দি বন, রাজৌরিতে নির্দিষ্ট অনুসন্ধান এদিন শুরু করে সেনা ৷ তার জেরেই সন্ত্রাসবাদীরা ওই এলাকায় আটকে পড়েছে ৷ তাদেরও বেশ কয়েকজনের আহত বা নিহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৷" বৃহস্পতিবার ভোররাতে উত্তর কাশ্মীরের জম্মু ও কাশ্মীরের বারামুল্লা জেলায় নিরাপত্তা বাহিনী এবং জঙ্গিদের মধ্যে সংঘর্ষে দুই লস্কর-ই-তৈয়বা জঙ্গি নিহত হওয়ার একদিন পর এই এনকাউন্টার ঘটে।
পুলিশ নিহত জঙ্গিদের ইতিমধ্যেই শনাক্ত করেছে বলে খবর ৷ শাকির মজিদ নাজার এবং হানান আহমেদ সেহ দক্ষিণ কাশ্মীরের শোপিয়ান জেলার বাসিন্দা বলে দাবি পুলিশের। পুলিশ সূত্রে খবর, এরা দু'জনেই চলতি বছরের মার্চে জঙ্গি গোষ্ঠীতে যোগ দেয়। বারামুল্লা জেলার ওয়ানিগাও এলাকায় জঙ্গিরা লুকিয়ে আছে এই তথ্যের ভিত্তিতে নিরাপত্তা বাহিনী ঘিরে অভিযান শুরু করার পরই সংঘর্ষ শুরু হয়।
এর আগে, বুধবার, উত্তর কাশ্মীরের জম্মু ও কাশ্মীরের কুপওয়ারা জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আরও একটি সংঘর্ষে দুই জঙ্গি নিহত হয়। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের মুখপাত্র জানান, বুধবার সকালে কুপওয়ারা জেলার পিচনাদ মাচিল এলাকার কাছে জঙ্গি এবং নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। উভয় পক্ষের মধ্যেই তীব্র গুলির লড়াই শুরু হয় ৷ যার জেরে দুই জঙ্গি নিকেশ হয়েছে।