খাবার অর্ডার করতে হয় ইশারায় জব্বলপুর, 6 সেপ্টেম্বর:জব্বলপুরের রানিতাল চকে একটি রেস্তোরাঁ তৈরি করেছেন অক্ষয় সোনি ৷ নাম, পোহা অ্যান্ড শেডস ৷ নাম শুনেই বোঝা যায় যে, এখানে রকমারী ও বাহারী পোহা পরিবেশন করা হয় গ্রাহকদের ৷ তবে রেস্তোরাঁটির বিশেষত্ব অন্য জায়গায় ৷ এখানে কিছু খেতে গেলে অর্ডার করতে হবে ইশারায় ৷ কারণ রেস্তোরাঁর সব কর্মীই মূক ও বধির ৷ তাঁরা শুধু বোঝেন হাত-মুখ নেড়ে বলা ইশারার ভাষা ৷
জব্বলপুরের বাসিন্দা অক্ষয়ের বাবা রাকেশ সোনি ও মা জয়বন্তী দু'জনেই বাকশক্তি ও শ্রবণশক্তিহীন ৷ তাই ছোট থেকে এ ধরনের বিশেষ ভাবে সক্ষম মানুষদের জন্য কিছু করার স্বপ্ন দেখতেন অক্ষয় ৷ তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেছেন ৷ পড়াশোনা শেষ করার পর একটি বেসরকারি সংস্থায় কিছুদিন কাজ করলেও তাতে মন বসেনি ৷ এরপরই তিনি বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য কাজ করা একটি সংস্থায় যোগ দেন ৷ সেখানকার প্রায় 1500 আবাসিক কানে শুনতে পান না, কথাও বলতে পারেন না ৷ তাঁদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য পাঠালেও বেশিরভাগেরই ভাগ্যে ভালো চাকরি জোটেনি ৷ যদিও অক্ষয়ের বাবা প্রতিরক্ষামন্ত্রকের একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন ৷
এরপরই এই মানুষগুলোর জন্য নিজে হাতে কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন অক্ষয় ৷ তখনই তিনি নয় জন মূক ও বধির মানুষকে নিয়ে রানিতালে খুলে ফেলেন রেস্তোরাঁ ৷ এখানে সব কাজই হয় ইশারায় ৷ চা তৈরির কাজ দেওয়া হয়েছে ক্ষেমকরণকে । এর আগে তিনি একটি বেসরকারি বহুজাতিক কোম্পানিতে প্যাকেজিংয়ের কাজ করতেন ৷ তিনি প্রশিক্ষণের সময় চা বানানো শিখেছিলেন । আজ সেই প্রশিক্ষণই কাজে এসেছে এবং চমৎকার চা বানাচ্ছেন ক্ষেমকরণ । এই দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হলেন হিনা ফাতিমা । এক জায়গায় চাকরি ছেড়ে দিয়ে তিনি এখানে যোগ দেন ৷ এই দলের অন্যতম সদস্য হলেন মণিকা রাজাক । এই রেস্তোরাঁয় কাজ করা প্রতিটি কর্মী এখন একটা পরিবারের মতো ৷ সবাই এখানে কাজ করে খুবই খুশি ৷
আরও পড়ুন:12 মিনিট অন্তর পরিষেবা, এই শীতেই গঙ্গার তলায় ছুটবে মেট্রো
অক্ষয় জানিয়েছেন, তাঁর রেস্তোরাঁয় বিভিন্ন প্রদেশের পোহা তৈরি করা হয় ৷ প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে এখানে ব্যবহার করা হয় ধাতব প্লেট, বাঁশের ট্রে। অক্ষয় বলেছেন যে, এই রেস্তোরাঁর সমস্ত কর্মীকে বেতন দিয়ে রাখা হয়েছে, যদি তাঁর এই প্রচেষ্টা সফল হয়, তবে তিনি এটিকে নিয়ে একটি কোঅপারেটিভ তৈরি করবেন ৷ এই রেস্তোরাঁয় মাত্র নয়জন কাজ পেয়েছেন ৷ এখনও শত শত মূক ও বধির মানুষ কাজের সন্ধানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন । তাই তাঁদের সাহায্যের জন্য অক্ষয় সরকারের সাহায্যপ্রার্থী ৷