পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

2015 সালেই করোনা নিয়ে গবেষণা ! জৈব অস্ত্র তৈরি করছিল চিন ? - 2015 সালেই করোনা নিয়ে গবেষণা

সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার এক সংবাদমাধ্যমে চিনা সেনার বিজ্ঞানীদের মধ্যে হাড় হিম করা আলোচনা ফাঁস হয়েছে ৷ সেখানে করোনা ভাইরাসকে বায়োলজিক্যাল অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার কথা হচ্ছে ৷ তাঁরা আলোচনা করছেন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিষয়ে ৷ বলছেন, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ যদি হয়, তা হবে বায়োলজিক্যাল অস্ত্রের উপর ৷ আর এই গোটা বিষয়টির আলোচনা হচ্ছে 2015 সালে ৷ অর্থাৎ, করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার চার বছর আগে ৷

2015 সালেই করোনা নিয়ে গবেষণা
ছবি

By

Published : May 14, 2021, 8:31 PM IST

Updated : May 14, 2021, 9:51 PM IST

নয়াদিল্লি, 14 মে : করোনার ভয়ে কাঁপছে গোটা দেশ ৷ চারিদিকে মৃত্যু মিছিল ৷ হাসপাতালে বেড নেই ৷ বেড থাকলে অক্সিজেন নেই ৷ হাঁসফাঁস করছেন করোনা রোগীরা একটু অক্সিজেনের জন্য ৷ হাসপাতালগুলি যেন হয়ে উঠছে এক একটা মৃত্যুপুরী ৷ লড়াই ক্রমেই কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে ৷ শ্মশানে ভিড় বাড়ছে ৷ জ্বলছে গণচিতা ৷ চারিদিকে স্বজনহারানোর আর্তনাদ ৷

বছর দেড়েক আগের কথা ৷ চিন দেশে প্রথম হদিশ মিলেছিল ৷ কিন্তু, সেই চিন আজ করোনার ধাক্কা সামলে উঠেছে ৷ আজ সব কিছু স্বাভাবিক শি চিনপিংয়ের দেশে ৷ মাস্ক... শারীরিক দূরত্ব... সবই যেন এখন গল্পকথা ইউহানে ৷ স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, চিন কী এমন করল, কী ভাবে করোনাকে ভ্যানিস করে দিল তারা ?

চিনের ইউহান শহর এক স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে এসেছে

সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার এক সংবাদমাধ্যমে বেশ কিছু রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে ৷ দেখলে গা শিউরে উঠবেই ৷ চিনা সেনার বিজ্ঞানীদের মধ্যে হাড় হিম করা আলোচনা ফাঁস হয়েছে ৷ সংবাদসংস্থা এএনআই-সহ বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সেই খবর ছাপা হয়েছে ৷ সেখানে করোনা ভাইরাসকে বায়োলজিক্যাল অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার কথা হচ্ছে ৷ তাঁরা আলোচনা করছেন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিষয়ে ৷ বলছেন, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ যদি হয়, তা হবে বায়োলজিক্যাল অস্ত্রের উপর ৷ আর এই গোটা বিষয়টির আলোচনা হচ্ছে 2015 সালে ৷ অর্থাৎ, করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার চার বছর আগে ৷ জেনেটিক অস্ত্রের এক নতুন যুগ হিসেবে বলা হচ্ছে করোনা ভাইরাসকে ৷

অস্ট্রেলিয়ার ওই সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে যে তথ্য ফাঁস করা হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে 2015 সালে বসে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানীরা এবং চিনের শীর্ষ স্বাস্থ্য আধিকারিকরা একটি গবেষণাপত্র তৈরি করছিলেন ৷ গবেষণাপত্রটির নাম, "দা আনন্যাচরাল অরিজিন অফ সার্স অ্যান্ড নিউ স্পিসিস অফ ম্যান-মেড ভাইরাসেস অ্যাজ় জেনেটিক বায়ো-ওয়েপনস" ৷ গবেষণাপত্রের নাম থেকেই স্পষ্ট, বিষয়টি কীসের ইঙ্গিত দিচ্ছে ৷

ইউহানের এই ল্যাবরেটরিতেই করোনা নিয়ে গবেষণা চলছিল বলে অভিযোগ

আরও পড়ুন : করোনায় সামান্য স্বস্তি ; দেশে দৈনিক সংক্রমণ কমে 3.43 লাখ, মৃত 4000

2015 সালে করোনা বিশ্বের ধারেকাছেও ছিল না ৷ সেই সময় দাঁড়িয়ে করোনা সংক্রান্ত গবেষণাপত্র তৈরি করছিলেন চিনের বিজ্ঞানীরা ও শীর্ষ স্বাস্থ্য আধিকারিকরা !

চিনের এক অপথ্যালমোলজিস্ট ও ভাইরোলজিস্ট লি-মেঙ্গ ইয়ান দাবি করছেন, সার্স কোভ-2 ভাইরাস ইউহানের কোনও মাংসের বাজার থেকে নয়, তৈরি হয়েছিল চিনা সরকারের এক ল্যাবরেটরি থেকে ৷ তাঁর দাবি, চিনা সেনার মেজর জেনেরাল ডেজ়ং শু-এর নেতৃত্ব একদল ভাইরোলজিস্ট ও বৈজ্ঞানিক একটি আদর্শ ও সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জেনেটিক অস্ত্রের বর্ণনা দিয়েছেন ৷

সেখানে বলা হয়েছে, এটি এমনভাবে তৈরি করা হবে যা প্রাকৃতিকভাবে যেসব রোগজীবাণু রয়েছে তা থেকে পৃথক করা যাবে না । যদি কোনওসময় কোনওরকম জৈব অস্ত্রের অভিযোগ ওঠেও তবে তা উড়িয়ে দেওয়া যাবে সহজেই ৷ এর ব্যবহার শুধুমাত্র যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, অসামরিক ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যাবে ৷ বিরোধী দেশগুলির উপর ভীতি সঞ্চার করে আঞ্চলিক বা আন্তর্জাতিক আঙিনায় রাজনৈতিক এবং কৌশলগত সুবিধা অর্জন করা যাবে ।

বিরোধী দেশগুলির উপর ভীতি সঞ্চার করতেই কি করোনাকে ব্যবহার করতে চেয়েছিল চিন ?

এই ফাঁস হওয়া তথ্যে চিনা বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনা ভাইরাস জৈব অস্ত্রের এক নতুন যুগে সূচনা করতে পারে ৷ কারণ তাঁদের বিশ্বাস ছিল, এই ভাইরাসটি মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে সংক্রমণ ছড়াতে পারে ৷ ঠিক যেমনটা এখন চলছে । সেখানে আরও বলা হচ্ছে, যে ভাইরাসটি যদি অস্ত্র হিসাবে ব্যবহৃত হয়, তবে এটি পুরো বিশ্বে এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা রাখে যাতে এটি নিয়ন্ত্রণ করা খুব কঠিন হয়ে পড়ে । 2015 সালে চিনা বিজ্ঞানীরা যেমন ভেবেছিলেন, এখন ঠিক তেমনটাই ঘটে চলেছে ৷

করোনাকে জৈব অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা ছিল চিনের ?

আরও পড়ুন : করোনায় মৃতের দেহে পেসমেকার আছে ? শ্মশানে দিতে হবে মুচলেকা

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ যদি কখনও হয়, তবে তা হবে জৈব অস্ত্রের উপর ভিত্তি করেই ৷ 2015 সালে যে বিজ্ঞানীরা ওই গবেষণাপত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাঁরা এমনটাই বিশ্বাস করেছিলেন । কারণ তাঁরা মনে করেছেন, প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রাসায়নিক এবং পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার দেখেছে গোটা বিশ্ব ৷ এখন অনেক শক্তিধর দেশ সেইসব রাসায়নিক ও পারমাণবিক অস্ত্রের মোকাবিলায় আধুনিক প্রযুক্তি তৈরি করে নিয়েছে । সুতরাং তাঁদের মনে হয়েছিল, জৈব অস্ত্রই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের একমাত্র হাতিয়ার হতে পারে ৷

অর্থাৎ, এই ফাঁস হওয়া তথ্য যদি সত্যি হয় তাহলে, 2015 সালেই চিন বুঝে গিয়েছিল যে যদি তাকে অন্য দেশগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে হয়, তবে কোনও একটি ভাইরাসটিকে অস্ত্র হিসাবে তৈরি করতে হবে ৷ কারণ বিশ্বের কোনও দেশের কাছে ভাইরাস থেকে বাঁচার প্রযুক্তি নেই । সেখানে আরও দাবি করা হয়েছে, করোনা ভাইরাসকে 6 বছর আগেও যুদ্ধে ব্যবহার করা যেতে পারত ৷

করোনাকে কি জৈব অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা ছিল চিনের ?

চিনা সরকারের মুখপত্র গ্লোবাল টাইমস অবশ্য এই ধরনের দাবিকে সম্পূর্ণ নাকচ করেছে ৷ কিন্তু তারপরেও একাধিক প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে ৷ কারণ, যখনই করোনার উৎস সন্ধানের চেষ্টা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা অন্যান্য আন্তর্জাতিক মহল, তখনই বাধা দিয়েছে বেজিং ৷ যদি ইউহানের মাংসের দোকান থেকেই করোনা ছড়িয়ে থাকে, তাহলে এত বাধা কিসের জন্য ? তাহলে যে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, চিনের ল্যাবরেটরি থেকে ভুলবশত ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার... সেটাই কি সত্যি ? সেই কারণেই কি তদন্তে ভয় পাচ্ছে চিন ?

আরও পড়ুন : 5 দিনে 790 জন উপসর্গহীনের মৃত্যু কর্নাটকে, আপনি সুরক্ষিত তো?

অস্ট্রেলিয়ার ওই সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ফাঁস হওয়া তথ্যে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার নাগালেও রয়েছে ৷ এই সব প্রশ্নগুলি যখন দানা বাধতে শুরু করছে, তখন বিষয়টির তদন্তে নেমেছিল মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাও ৷ আর সেই সময়েই এই চাঞ্চল্যকর তথ্য তাঁদের হাতে এসেছে বলে দাবি করা হচ্ছে ৷ এই ফাঁস হওয়া গবেষণাপত্রটি যদি সত্যি হয়, তাহলে গোটা বিশ্বে যে মৃত্যুমিছিল চলছে, সেই লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু নয়, খুন হয়েছে ৷ আর এই গণহত্যার দায় চিনের ৷

অস্ট্রেলিয়ার স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউটের এগজ়িকিউটিভ ডিরেক্টর পিটার জেনিংস এক স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলছেন, "আমার মনে হয় চিনের বিজ্ঞানীরা করোনার বিভিন্ন স্ট্রেনের সামরিক ব্যবহার পরিকল্পনা করেছিলেন ৷ তেমনটা হলে এটাও ভীষণভাবে সম্ভব যে গোটা বিশ্বে যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে, তা সামরিক ব্যবহারের জন্য তৈরি করা ওই প্যাথোজেনেরই কিছুটা ভুল করে বেরিয়ে যাওয়ার ফলেই হয়েছে ৷"

Last Updated : May 14, 2021, 9:51 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details