পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

সীতাকে চোখ ধাঁধানো কনক ভবন উপহার দেন কৈকেয়ী, আজও শোনা যায় নূপুরের ঝংকার - Kanak Bhavan History

Kanak Bhavan History : রাম মন্দির উদ্বোধনের প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে ৷ রাম মন্দির ছাড়াও এই শহরে আরও অনেক পৌরাণিক স্থান রয়েছে । সেগুলির মধ্যে অন্যতম কনক ভবন ৷

ETV  BHARAT
ETV BHARAT

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 11, 2024, 7:09 PM IST

অযোধ্যা, 11 জানুয়ারি:শ্রীরামের জন্মস্থান হিসেবেই পরিচিতি অযোধ্যার ৷ তবে খুব কম লোকই জানেন যে, এই শহরে রাম এবং সীতার একটি ব্যক্তিগত প্রাসাদও রয়েছে । এই প্রাসাদটি রাম জন্মভূমির উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত । কথিত আছে, বিয়ের পর অযোধ্যায় এলে পুত্রবধূ সীতাকে সেই প্রাসাদটি উপহার দেন রানি কৈকেয়ী ৷ এটি সীতা ও রামের ব্যক্তিগত প্রাসাদ ছিল । দ্বাপরে শ্রীকৃষ্ণ এই প্রাসাদের সংস্কার করেছিলেন বলে মনে করা হয় । পরে বিক্রমাদিত্য এই প্রাসাদটি পুনর্নির্মাণ করেন । এরপর ওরছা রাজ্যের রানি বৃষভানু কুনওয়ারিও এই প্রাসাদ মেরামত করিয়েছিলেন । আজও খুব সুন্দর এই প্রাসাদটি রক্ষণাবেক্ষণ করেন ওরছা রাজবংশের লোকেরা । প্রাসাদের গর্ভগৃহে রাম ও সীতার মূর্তি রয়েছে । ভবনের দেওয়াল থেকে এখনও শোনা যায় নূপুরের শব্দ ।

প্রাসাদে রাম-সীতার মূর্তি:বহুতল প্রাসাদ, বিশাল তার দরজা ৷ এই প্রাসাদের স্থাপত্য বুন্দেলখণ্ডের প্রাসাদের মতো । মনে করা হয়, ত্রেতাযুগে সীতা ও রামের বিয়ের পর এই প্রাসাদটি সীতাকে তাঁর শাশুড়ি কৈকেয়ী উপহার দিয়েছিলেন । প্রাসাদটি নিয়ে প্রচলিত রয়েছে নানা কাহিনী । কথিত আছে যে, এই প্রাসাদটি বেশ কয়েকবার পুনর্নির্মিত হয়েছে ।

প্রথমত, দ্বাপর যুগের প্রথম দিকে রামের পুত্র কুশ প্রাসাদটি মেরামত করিয়েছিলেন । পরে দ্বাপরে এই প্রাসাদটি ঋষভ দেব এবং তারপর শ্রীকৃষ্ণ সংস্কার করেন । কথিত আছে যে, এই প্রাসাদটি নবাব দ্বিতীয় সালারজংয়ের শাসনকালে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, যা পরে 1891 সালে বুন্দেলখণ্ডের টিকামগড়ের মহারাজা প্রতাপ সিং জু দেব এবং তাঁর স্ত্রী বৃষভানু কুনওয়ারি দ্বারা পুনর্নির্মাণ করা হয় । এখানে রাম ও মাতা সীতার তিন জোড়া মূর্তি স্থাপন করা হয়, যেগুলো যথাক্রমে শ্রীকৃষ্ণ, রাজা বিক্রমাদিত্য এবং রানি বৃষভানু কুমারী এনেছিলেন ।

কনক ভবনে এখনও পুজো হয়: এই প্রাসাদ সম্পর্কে সাধক তথা শ্রীরাম জন্মভূমি ন্যাস-এর সদস্য ড. রাম বিলাস বেদান্তী বলেন, বাল্মীকি রামায়ণ, স্কন্দ পুরাণ এবং পদ্ম পুরাণের গল্প অনুসারে, কৈকেয়ী রাতে স্বপ্ন দেখেন যে তিনি রাম ও সীতার জন্য একটি ঐশ্বরিক প্রাসাদ প্রস্তুত করে দিয়েছেন । বিয়ের পর রাম এলে, কৈকেয়ী রাম ও সীতাকে কনক ভবন উৎসর্গ করেন । আজও কনক ভবনে পুজো হয়, সেখানেই রাম-সীতার বাস বলে মনে করা হয় ৷ আজও নাকি সীতারামের ঐশ্বরিক আরাধনা হয় এর উপরের ছাদে । সবাই তা দেখতে পান না ৷ কিন্তু অযোধ্যার কয়েকজন শ্রদ্ধেয় সাধু সেখানে গিয়ে উপরের দৃশ্য দেখেছেন বলে শোনা যায় ।

কনক ভবনে এখনও পুজো হয়

দেওয়ালে কান পাতলে শব্দ আসে: সাধক জগৎগুরু রামানন্দাচার্য রামদিনেশাচার্য এ প্রসঙ্গে বলেন, "অযোধ্যায় যখন রাম জন্মভূমি নিয়ে বিবাদ চলছিল, তখন কৈকেয়ী মা এই সোনার প্রাসাদ উপহার দিয়েছিলেন। রাম ও সীতা এই প্রাসাদে থাকতেন । প্রাসাদে কেউ মনোযোগ দিয়ে দেওয়ালে কান পাতলে নাকি মেয়েদের পায়ের শব্দ শোনা যায় ৷ শোনা যায় নূপুরের ধ্বনি ৷ এই জায়গাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । এটাই বিশ্বাস করা হয় যে, আজও সীতারাম সেখানে বিরাজমান । ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যখন অযোধ্যায় আসেন, তখন তিনি এই মন্দিরের সংস্কারও করেছিলেন । আজও কারও মন যতই বিচলিত হোক না কেন, কনক ভবনে গিয়ে বসে থাকলে তাঁর মন শান্ত হয়ে যায় ৷

আরও পড়ুন:

  1. 'শ্রীরাম ধর্মনিরপেক্ষ নন...', আর কী বললেন পুরীর শংকরাচার্য ?
  2. রাম মন্দির উদ্বোধনের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান, কংগ্রেসের নিন্দায় সরব বিজেপি
  3. এখানে ভগবান রামের বড় দিদি মা শান্তাকে পুজো করা হয়, জানেন কোথায় এই মন্দির ?

ABOUT THE AUTHOR

...view details