আথারগড়, 5 সেপ্টেম্বর : প্রায় দুশো বছর ভারত ব্রিটিশদের অধীনে ছিল ৷ তাদের অত্যাচার এবং নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন এদেশের মানুষ । সেই সময় ব্রিটিশরা 1857 সালের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ-সহ প্রায় প্রতিটি বিদ্রোহই দমন করতে সক্ষম হয়েছিল । তবে আথারগড়ের উপজাতিদের দমন করতে ব্রিটিশদের বেশ বেগ পেতে হয়েছিল ৷ এই লড়াইয়ের প্রধান নায়ক ছিলেন সম্বলপুরের রাজা সুরেন্দ্র সাই, সোনাখানের জমিদার বীর নারায়ণ সিং এবং পৃথ্বীরাজ চৌহানের বংশধরেরা ৷ এখানকার জমিদারদের মধ্যে কিছু ছিলেন গণ্ড এবং অধিকাংশ ছিল বিঞ্জোয়ার ৷ (Some of the zamindars were Gonds and most were Binjhwars) বনজ সম্পদ আথারগড়ের বাসিন্দাদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ছিল । এখানকার জমিও ছিল খুব ঊর্বর । বর্তমান পূর্ব ছত্তিশগড় এবং পশ্চিম ওড়িশা সেই সময়ের আথারগড়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল ।
1757 সালে ভারতীয়রা আত্মনিয়ন্ত্রণের জন্য পলাশীর যুদ্ধে (battle of Plassey) লড়েছিল ৷ এই যুদ্ধেরই ফলাফল 1818 সালে ব্রিটিশদের বাংলার অবিসংবাদিত শাসক বানিয়েছিল ৷ সেই সময়ের মধ্যেই ব্রিটিশরা আথারগড় ছাড়া ভারতের প্রায় সমস্ত অঞ্চল দখল করে ফেলেছিল ৷ ব্রিটিশরা এই অঞ্চল দখলের আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছিল ৷ সম্বলপুরের সিংহাসনে সুরেন্দ্র সাইয়ের জায়গায় প্রয়াত রাজা মহারাজ সাইয়ের স্ত্রী রানি মোহন কুমারিকে বসানো হয়েছিল । এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছিলেন আথারগড়ের রাজা এবং জমিদাররা ৷ সেই বিরোধিতার জন্য সুরেন্দ্র সাই, তাঁর ভাই উদান্ত সিং এবং কাকা বলরাম সিংকে গ্রেফতার করে হাজারিবাগ জেলে বন্দি করা হয়েছিল ।
সুরেন্দ্র সাই এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের গ্রেফতারের পরও বিদ্রোহ অব্যাহত থাকে । 1856 সালে দুর্ভিক্ষের সময় সোনাখানের বিঞ্ঝোয়ার জমিদার নারায়ণ সিং গুদামের তালা ভেঙে গ্রামবাসীর মধ্যে খাদ্যশস্য বিতরণ করেছিলেন ৷ এই ঘটনার পর তাঁকেও গ্রেফতার করে রায়পুর কারাগারে বন্দি করা হয় । কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই নারায়ণ সিং পালাতে সক্ষম হন এবং 1857 সালের 30 জুলাই ভারতীয় সেনা হাজারিবাগ কারাগারের দরজা ভেঙে সুরেন্দ্র সাই এবং তাঁর সঙ্গীদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করে । পালিয়ে তাঁরা সারানগড়ের রাজা সংগ্রাম সিংয়ের প্রাসাদে আশ্রয় নেন ৷