পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

দক্ষ শ্রমিকরাই পারে দেশের উন্নয়নকে মজবুত করতে - এনডিএ সরকার

মাত্র 27 লাখ মানুষের দেশ লিথুয়ানিয়া থেকে 33 কোটি জনসংখ্যার দেশ অ্যামেরিকা পর্যন্ত বিশ্বের সব উন্নত দেশই এখন মানব উন্নয়নের সূচক হিসাবে দক্ষতার উন্নয়নকে গুরুত্ব দিচ্ছে ।

দক্ষতার উন্নয়ন
দক্ষতার উন্নয়ন

By

Published : Dec 19, 2020, 7:01 AM IST

হায়দরাবাদ, 19 ডিসেম্বর : মানব উন্নয়ন সূচক ইউএনডিপি-তে পিছিয়ে 131তম স্থানে পৌঁছাল ভারত । মোট 189টি দেশের মধ্যে 129তম স্থানে থেকে এই সূচকে ভারতের উপরে রয়েছে ভুটান । তুলনামূলক তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে ইউএনডিপি-র এই সূচক । 15 বছর বা তার বেশি বয়সি এবং ইন্টারমিডিয়েট বা তার থেকে বেশি শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা ব্যক্তিদের দক্ষ শ্রমিক বলে ইউনেসকো । এই মানের নিরিখে জাপান, বেলারুস, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, লিথুয়ানিয়া এবং রাশিয়ার ট্র্যাক রেকর্ড অসাধারণ । ইউনেসকো-র সংজ্ঞা অনুসারে এই সব দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় 95 শতাংশ মানুষই দক্ষ শ্রমিক । মাত্র 27 লাখ মানুষের দেশ লিথুয়ানিয়া থেকে 33 কোটি জনসংখ্যার দেশ অ্যামেরিকা পর্যন্ত বিশ্বের সব উন্নত দেশই এখন মানব উন্নয়নের সূচক হিসাবে দক্ষতার উন্নয়নকে গুরুত্ব দিচ্ছে ।

আরও পড়ুন : নিজের হার্ট ভাল রাখুন

ভারতের ক্ষেত্রে দুর্ভাগ্যের কারণের শিকরটা অনেকটাই গভীরে নিহীত রয়েছে । এ দেশের প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে মাত্র একজন দক্ষ শ্রমিক । বহু সমীক্ষার রিপোর্টে এটা দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট যে আমাদের দেশের যুবকরা চাকরির ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে । এই সব সমীক্ষা থেকে আরও দেখা গিয়েছে যে মোট জনসংখ্যার তুলনায় আমাদের দেশের দক্ষ শ্রমিকের সংখ্যা খুবই কম । নিয়োগযোগ্য প্রার্থীর সংখ্যার নিরিখে আমরা সেই সব দেশের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছি যারা ধারে, ভারে কোনও দিক থেকেই আমাদের দেশের কাছাকাছি নয় । জনসংখ্যার দিক থেকেই হোক বা ভৌগলিক আয়তন, এই সব দেশ কোনও অবস্থাতেই ভারতের সঙ্গে তুলনীয় নয় । আর এখান থেকেই প্রমাণিত যে নীতি এবং পরিকল্পনার দিক থেকে ঠিক কতটা পরিবর্তন আমাদের দেশে জরুরি । যেখানে আমাদের দেশের 97 শতাংশ শিশু প্রাইমারি স্কুলে ভরতি হয়, তাদের মধ্যে মাত্র 70 শতাংশ মধ্যম পর্যায়ের স্কুল পর্যন্ত পৌঁছায় । তার মধ্যে আবার মাত্র 26 শতাংশ উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত পৌঁছায় । এই তথ্য থেকেই স্পষ্ট যে, আমাদের দেশের তরুণ প্রজন্মের দক্ষতা উন্নয়ন বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে । একই সঙ্গে ব্যাহত হচ্ছে তাদের সঠিক শিক্ষা এবং জীবনযাপন । ইউএনডিপি অবশ্য আগেই জানিয়েছে যে তাদের কাছে চিন সম্বন্ধীয় তথ্য নেই । তবে কিছু সময় আগে একটা খবর প্রকাশিত হয়েছিল যে সে দেশের সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুল পাশ করা তরুণদের অর্ধেকের বেশি পেশাদার হিসাবে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করছেন । জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে চিনের ঠিক পরেই রয়েছে ভারত । সে দেশের জনসংখ্যা 138 কোটি । আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার 62 শতাংশের বয়স 15 থেকে 59 বছরের মধ্যে । এই মুহূর্তে দেশের অর্ধেকেরও বেশি মানুষের বয়স 25 বছরের কম । উন্নতির দিক থেকে ভারতের পিঁছিয়ে পড়ার প্রধান কারণই হল এই বিপুল সংখ্যক তরুণ রক্তকে সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে না পারা । বহু ক্ষেত্রেই বহু সংস্থার কর্তাদের বলতে শোনা যায় যে তারা যথেষ্ট সংখ্যক দক্ষ শ্রমিক পাচ্ছেন না । এর ঠিক বিপরীত ছবিটা দেখা যায় যখন স্নাতকোত্তর কোনও তরুণ একেবারে সাধারণ মানের কোনও কাজের জন্য আবেদন করেন ।

আরও পড়ুন : যানজট ঠেকাতে বন্দরে নয়া প্রযুক্তি

2022 সালের মধ্যে 40 কোটি দক্ষ শ্রমিক তৈরি করার লক্ষ্য সামনে রেখে কেন্দ্রের এনডিএ সরকার ‘স্কিল ইন্ডিয়া’ প্রকল্প চালু করেছে । সেই লক্ষ্য অবশ্য এখনও পর্যন্ত অনেকটাই দূরে । এমনকি অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, ওড়িশা এবং তামিলনাডুর সঙ্গে তুলনা করলে হিমাচল প্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ বা সিকিমে এই প্রকল্পের আওতায় সুযোগ পাওয়া তরুণের সংখ্যা একেবারেই নগন্য । কোভিড এবং তার জেরে তৈরি হওয়া ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে দেশের কোটি কোটি মানুষ দারিদ্র সীমার নীচে নেমে গিয়েছেন । সেন্টার ফর মনিটারিং ইন্ডিয়ান ইকনমি (সিএমআইই) তাদের এক রিপোর্টে জানিয়েছে যে গ্রামীণ ভারতে নয় শতাংশ এবং শহুরে ভারতে 11 শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে বেকারত্বের হার । বিশেষজ্ঞরা বলছেন, 2025 সালের মধ্যে কোটি কোটি নতুন চাকরির ক্ষেত্রে একেবারে নতুন ধরনের দক্ষতার প্রয়োজন হবে । একেবারে আমূল বদলে যাবে কাজের চরিত্র । মনে করা হচ্ছে, 2030 সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে বেকারের সংখ্যা বেড়ে হবে 80 কোটি যার মধ্যে একটা বড় এংশ থাকবে ভারত থেকেই । এই চক্রব্যূহ থেকে দেশকে বাঁচাতে প্রয়োজন দক্ষতার মান উন্নয়নে নতুন দিকে নজর দেওয়া । প্রয়োজন চাকরির ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দেওয়ারও ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details