নয়াদিল্লি, 22 ডিসেম্বর : উন্নয়নকে কখনওই রাজনীতির চোখ দিয়ে দেখা উচিত নয়। যখন দেশের উন্নতির প্রসঙ্গ সামনে আসে, তখন মতাদর্শগত পার্থক্যকে দ্বিতীয় সারিতে রেখে দিতে হয়। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠানে একথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
প্রধানমন্ত্রীর কথায়, দেশ বর্তমানে এমন একটা পথে এগিয়ে চলেছে, যেখানে ধর্মের ভেদাভেদ সরিয়ে রেখে প্রত্যেকের জন্য সাংবিধানিক অধিকার ও ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করা যাচ্ছে। কোনও সম্প্রদায়কেই দূরে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। ধর্মীয় পক্ষপাতিত্ব সরিয়ে রেখেই সরকারের যোজনাগুলিকে গরিবদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, "যে ধর্মেই আমরা জন্মগ্রহণ করি না কেন, আমাদের আশা আকাঙ্খা কীভাবে জাতীয় লক্ষ্যের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে, সেটাই দেখতে হবে। সমাজে মতাদর্শগত ভেদাভেদ থাকতেই পারে। কিন্তু যখন দেশের উন্নয়নের প্রসঙ্গ আসে, তখন বাকি সবকিছু দ্বিতীয় সারিতে চলে যাওয়া উচিত।"
এই প্রসঙ্গে মোদি আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় বা এএমইউ-র উদাহরণ টেনে আনেন। এএমইউ-র অনেকে যে স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিয়েছিলেন, সেই কথা তোলেন মোদি। তাঁর দাবি, মতাদর্শগত পার্থক্য থাকলেও স্বাধীনতার জন্য তা সরিয়ে রেখেছিল এএমইউ-এর পড়ুয়ারা। মোদি বলেন, "স্বাধীনতা সংগ্রামের মতো নতুন ভারত গড়ে তুলতে আমরা আবার এক হয়ে কাজ করব।"
আর দেশের উন্নয়নকে রাজনীতির চোখ দিয়ে দেখা উচিত নয় বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, "গত শতাব্দীতে বহু সময় মত পার্থক্যের জন্য কেটে গিয়েছে। আর সময় নষ্ট করা উচিত নয়।" এএমইউ-র যে পড়ুয়ারা হস্টেলে থাকেন, তাঁদের কাছে প্রধানমন্ত্রীর আবেদন, তাঁরা অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সম্বন্ধে গবেষণা করুন। যাঁদের নাম জানা যায় না, সেই স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নাম প্রচারের আলোয় নিয়ে আসুন। পরের বছর স্বাধীনতার 75 বছর। সেই উপলক্ষে এটা করা উচিত বলে প্রধানমন্ত্রী মত।
এদিনের অনুষ্ঠানে মোদি মুসলিম মেয়েদের স্কুল ছাড়ার ঘটনা কমে যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন। পাশাপাশি তিন তালাক রদের কথাও উল্লেখ করেন।
1920 সালের 1 ডিসেম্বর মুহাম্মাদান অ্যাংলো-ওরিয়েন্টাল কলেজকে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যায়ে পরিণত করা হয়। এর পর ওই বছর 17 ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্বোধন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষে ভিডিয়ো লিঙ্কের মাধ্যমে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। তার আগে শতবর্ষের স্মারক হিসেবে একটি ডাকটিকিটও তিনি প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন:খুন হওয়ার 28 বছর পর বিচার পেলেন সিস্টার অভয়া
গত পাঁচ দশকে এই প্রথমবার কোনও প্রধানমন্ত্রী এএমইউ-তে প্রধান অতিথি হলেন। এর আগে 1964 সালে লাল বাহাদুর শাস্ত্রী এএমইউ-র একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন। তার আগে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু চারবার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন।