নয়াদিল্লি, 10 এপ্রিল:প্রতিবেশীর বাড়িতে আয়োজিত পারিবারিক অনুষ্ঠানে সামিল হতে গিয়ে চরম পরিণতির শিকার হতে হল এক অন্তঃসত্ত্বাকে ৷ গুলিবিদ্ধ ওই বধূ প্রথমে হারান নিজের গর্ভস্থ সন্তানকে ৷ তারপর হারাতে হয় নিজের প্রাণ ! উত্তর দিল্লির এই ঘটনায় অভিযুক্তদের ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করে হাজতে পাঠানো হয়েছে ৷ অন্যদিকে, মৃতদেহের ময়নাতদন্তের পর মহিলার শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছে তাঁর পরিবার ৷
এই ঘটনার সূত্রপাত হয় গত 2 এপ্রিল ৷ উত্তর দিল্লির সিরাসপুরের বাসিন্দা একটি পরিবারে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল ৷ ওই পরিবারে সম্প্রতি নতুন সদস্যের জন্ম হয় ৷ সেই উপলক্ষেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ৷ প্রতিবেশীরা, বিশেষ করে আশপাশের বাড়ির মহিলারা এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে আসেন ৷ তাঁদের মধ্যেই ছিলেন আটমাসের এক অন্তঃসত্ত্বা ৷ 2 এপ্রিল ওই অনুষ্ঠান বাড়িতে বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয় ৷ চলে হোম, যজ্ঞ ৷ অভিযোগ, সেই সময়েই এক ব্যক্তি অতি উচ্ছ্বাসে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছুড়তে শুরু করেন ! মোট দু'রাউন্ড গুলি ছোড়েন তিনি ৷ তার মধ্যে একটি গুলি বাড়ির ছাদে লেগে নীচে নেমে আসে এবং সোজা ওই অন্তঃসত্ত্বা মহিলার শরীরে ঢুকে যায় !
এই ঘটনায় অনুষ্ঠান বাড়িতে হুলুস্থূল পড়ে যায় ৷ উৎসবের আনন্দ মুহূর্তে বদলে যায় ভয় ও আতঙ্কে ৷ আক্রান্ত মহিলাকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ কিন্তু, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর ওই মহিলার প্রবল রক্তক্ষরণ হচ্ছিল ৷ ফলে তাঁর সন্তানকে বাঁচাতে পারেননি চিকিৎসকরা ৷ মহিলার প্রাণ বাঁচাতে প্রাথমিকভাবে তাঁর গর্ভপাত করতে হয় ৷ কিন্তু, তাতেও শেষরক্ষা হয়নি ৷ টানা সাতদিন হাসপাতালে যমে-মানুষে টানাটানির পর রবিবার রাতে (9 এপ্রিল, 2023) মৃত্যু হয় ওই বধূর ৷
আরও পড়ুন:বেগুসরাইতে নাবালিকার যৌন নির্যাতন ও খুনের অভিযোগ
এই ঘটনায় পুলিশ অনিচ্ছাকৃত খুন-সহ আরও একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে ৷ তবে, এটি সত্যিই দুর্ঘটনা বা অনিচ্ছাকৃত খুন না কি এর পিছনে কোনও রহস্য রয়েছে, তাও খতিয়ে দেখা হয়েছে ৷ ঘটনায় অভিযুক্তদের ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে ৷ যে ব্যক্তি গুলি চালিয়েছিলেন, তাঁর কাণ্ডজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ৷ এলাকাবাসীর একাংশ প্রশ্ন তুলছেন, উৎসব, অনুষ্ঠানে আগ্নেয়াস্ত্রের কী প্রয়োজন ? শূন্যে গুলি ছোড়ার মতো অপদার্থতা নিয়েও ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ৷ তাঁদের বক্তব্য, এটি যদি দুর্ঘটনাও হয়, তাহলেও দোষীদের কঠোরতম শাস্তি হওয়া উচিত ৷ কারণ, এই ঘটনায় একইসঙ্গে নির্মমভাবে দু'টি প্রাণ কেড়ে নেওয়া হয়েছে ৷ এক্ষেত্রে দোষীর কঠোর শাস্তি না হলে সমমনস্ক বাকিদের শিক্ষা হবে না ৷