ইম্ফল, 18 জুন: মণিপুরের পরিস্থিতি অশান্ত ৷ কেন্দ্র এবং রাজ্য দুই তরফের থেকেই একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হলেও লাভের লাভ কিছুই হয়নি ৷ স্থিতিশীলতার পরিবর্তে হিংসা অব্যাহত রয়েছে রাজ্যে ৷ কিন্তু মণিপুরে হিংসা থামানোর কোনও বার্তা দেননি প্রধানমন্ত্রী ৷ 'মন কি বাত'-এও উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নীরব থাকায় এবার ক্ষোভ উগরে দিলেন রাজ্যের মানুষ ৷ প্রধানমন্ত্রীর নীরবতার প্রতিবাদে রবিবার রাজ্যের মানুষ রেডিয়ো ভাঙলেন দেদার।
অল ইন্ডিয়া রেডিয়োয় সম্প্রচারিত হয় প্রধানমন্ত্রী মোদির 'মন কি বাত'-এর প্রতিটি পর্বই ৷ একটি মাসিক রেডিয়োর অনুষ্ঠান যেখানে প্রধানমন্ত্রী একাধিক বিষয়ে দেশের নাগরিকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন ৷ এমনকী বেশ কিছু জ্বলন্ত ইস্যু নিয়েও নিজের অভিমত প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী ৷ কিন্তু এক মাসেরও বেশি সময় ধরে যেখানে জাতিগত হিংসায় জর্জরিত মণিপুর, আশ্চর্যজনকভাবে এদিন সম্প্রচারিত সর্বশেষ 'মন কি বাত' পর্বে তার কোনও উল্লেখ পাওয়া গেল না। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী এখনও উত্তর-পূর্ব রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে একটিও মন্তব্য করেননি, যেখানে কুকি এবং মেইতি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ এবং হিংসার ঘটনায় 100 জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে ৷ একই সঙ্গে, এই একমাসে রাজ্যের কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি ধ্বংস হয়েছে। যদিও তারপরও প্রধানমন্ত্রীর তরফে আসেনি কোনও বার্তা ৷
রবিবার টুইটারে সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের শেয়ার করা একটি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে যে, পুরুষ এবং মহিলারা পশ্চিম ইম্ফলে রাস্তার মাঝে আছড়ে রেডিয়ো ভেঙে ফেলছেন ৷ এরপর ভাঙা টুকরোগুলিতে পা দিয়ে লাথিও মারছেন ৷ শুধু তাই নয়, রেডিয়ো ভাঙার সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রীর 'মন কি বাত'-এর বিরুদ্ধে স্লোগানও দিতেও দেখা যায় তাদের ৷ আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ টুইটে লিখেছেন, "মণিপুরের মানুষ মোদিকে তাদের মন কি বাত বলতে চেয়েছেন!"
আরও পড়ুন:মণিপুর ইস্যুতে 'মৌন' মোদি, 'মন কি বাত' নিয়ে কটাক্ষ কংগ্রেসের
ইতিমধ্যেই দেশের অ-বিজেপি বিরোধী দলগুলি এই বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ রবিবার টুইটে লিখেছেন, "আরও একটি মন কি বাত হল, কিন্তু মণিপুর নিয়ে মৌন থাকলেন প্রধানমন্ত্রী ৷ প্রধানমন্ত্রী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ভারতের দুর্দান্ত ক্ষমতার জন্য নিজের পিঠ নিজেই পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন ৷ কিন্তু সম্পূর্ণ মানবসৃষ্ট একটি বিপর্যয় সম্পর্কে তিনি নীরব ৷ প্রকৃতপক্ষে প্ররোচিত মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি মণিপুর। এখনও তাঁর (প্রধানমন্ত্রী) তরফ থেকে শান্তির কোনও আবেদন আসেনি। প্রধানমন্ত্রী কি আদৌ মণিপুরের বিষয় নিয়ে ভাবিত, সেটাই আসল প্রশ্ন।" অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসও প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করে বলেছে যে, এখন 'মণিপুর কি বাত'-এর সময়। তৃণমূলের সাংসদ মহুয়া মৈত্র একটি টুইটে লিখেছেন, "মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যথেষ্ট মন কি বাত হয়েছে, এখন মণিপুর কি বাতের সময়।"