নয়াদিল্লি, 24 মার্চ: বিজেপি'র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিরোধী মঞ্চে যে ফাটল তৈরি হয়েছিল, রাহুল গান্ধির সদস্য পদ খারিজের সিদ্ধান্ত কি সেই ফাটলই ফের জোড়া লাগিয়ে দিল ! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, এমকে স্ট্যালিন, কে চন্দ্রশেখর রাওরা এতদিন যে চেষ্টা করছিলেন, এক সিদ্ধান্তে কি সেই চেষ্টাকেই সফল করে দিলেন নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহরা ? রাহুল গান্ধির পদ খারিজের পর এই জল্পনাই এখন ঘোরাফেরা করছে রাজনৈতিক মহলে (opposition parties back Rahul Gandhi) ৷
কোনও ইস্যুতে বিরোধী নেতাদের একজোট হয়ে কেন্দ্রকে চিঠি লেখার বিষয়টি এদেশে নতুন নয় ৷ সম্প্রতি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ইডি ও সিবিআই এর মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির অপব্যবহারের অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন দেশের আটটি বিরোধী দলের নেতারা ৷ তবে সেই চিঠিতেও লক্ষ্য করা গিয়েছিল বিরোধীদের ফাটল ৷ চিঠিতে কংগ্রেস, সিপিএম, ডিএমকে-এর মতো বিরোধী দলগুলির সাক্ষর ছিল না ৷ কিন্তু শুক্রবার তার ব্যতিক্রম ঘটল ৷ রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ খারিজের ঘটনা সেই ব্যবধান ঘুঁচিয়ে একমঞ্চে এনে দিল গোটা বিরোধী শিবিরকে ৷ যে ঘটনায় দেশের গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক পোঁতা হল বলে অভিযোগ উঠছে, সেই ঘটনাই কার্যত নয়া প্রাণ সঞ্চার করল বিরোধীদের জোট-অক্ষে (opposition attack on Narendra Modi) ৷
মানহানি মামলায় রাহুল গান্ধি দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরদিনই, শুক্রবার লোকসভা থেকে তাঁর সাংসদ পদ খারিজের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্পিকার ওম বিড়লা ৷ বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব অর্থাৎ নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহদের পরামর্শেই এই কাজ করেছেন স্পিকার ৷ ফলে ফের সরাসরি বিরোধীদের নিশানায় চলে এসেছে পদ্ম শিবির ও নরেন্দ্র মোদি ৷ এখানেই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে রাহুলের বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত তবে কি বকলমে বিরোধীদের পোক্ত জোট গঠনে অনুঘটকের কাজ করল ? নিজেদের প্রতিপক্ষ হিসেবে বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ হতে কি সাহায্য করলেন মোদি-শাহ জুটি !
বস্তুত এদিন যাবতীয় দূরত্ব সরিয়ে রেখে যেভাবে রাহুল গান্ধির পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অরবিন্দ কেজরিওয়ালরা তা সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যায়নি ৷ নরেন্দ্র মোদি সরকার বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সেই অভিযোগ আগেই উঠেছিল ৷ রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ খারিজ সরাসরি সংসদের অন্দরে তাঁর বক্তব্য থামিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে বলে অভিযোগ কংগ্রেস ৷ এই ইস্যুতে কংগ্রেসের পাশে দাঁড়িয়ে চড়া সুরে বিজেপি'কে আক্রমণ করেছে তৃণমূল, আপ, ডিএমকে, সিপিএম, এনসিপি, আরজেডি, বিআরএস-এর মতো দলগুলি ৷ বিবৃতি দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, এমকে স্ট্যালিন, কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের মতো বিরোধী পক্ষের মুখ্যমন্ত্রীরা (Rahul Gandhi MP post disqualified) ৷