তিরুবন্তপুরম,18 নভেম্বর: রাজ্যপাল থাকার সময় জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar) এবং মুখ্যংমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে সংঘাত প্রায়শই প্রকাশ্যে চলে আসত । একে অপরকে আক্রমণও করতেন নিয়ম করে । ধনখড় দাবি করতেন, রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে আবার মমতা থেকে শুরু করে তৃণমলের সব নেতা-নেত্রীরাই অভিযোগ করতেন রাজ্যপাল (অধুনা প্রাক্তন) কাজ করেন বিজেপির হয়ে ।
জগদীপ ধনখড় উপরাষ্ট্রপতি হওয়ার পর অস্থায়ী রাজ্যপাল হন লা গণেশন । তাঁর সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের সংঘাত বাঁধেনি । বরং তাঁর পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । এমনই আবহে স্থায়ী বাসিন্দা পেল বাংলার রাজভবন । পশ্চিমবঙ্গের নয়া সাংবিধানিক প্রধান হলেন সিভি আনন্দ বোস । আইএএস অফিসার হিসেবে কাজ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও (New Bengal Guv had worked with Miodi govt in past) । শুধু তাই নয় সবার জন্য পাকা বাড়ি তৈরির যে লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে মোদি সরকার সেটাও প্রথম তাঁর মাথাতেই এসেছিল । আইএএস হিসেবে কেরলের কাজ করার সময় আটের দশকের মাঝামাঝি মুখ্যমন্ত্রী কে করুণাকরণকেও একই পরামর্শ দিয়েছিলেন বাংলার নয়া রাজ্যপাল। পরে মোদি সরকারও সেই পথেই হাঁটে । আর তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে সিভি আনন্দ বোস হলেন 'ম্যান অফ আইডিয়াজ' ।
আরও পড়ুন:পশ্চিমবঙ্গের নয়া রাজ্যপাল হলেন সিভি আনন্দ বোস
রাজ্যপাল হওয়ার পর 71 বছর বয়সি প্রাক্তন আমলা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন । পাশাপাশি বলেছেন, "আমি সংবিধান মেনেই দায়িত্ব পালন করব । লক্ষ্মণরেখা মেনে নির্বাচিত সরকার এবং বিরোধীদের সঙ্গে কাজ করব ।" তাঁকে ইতিমধ্য়েই স্বাগত জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তিনি টুইটারে লিখেছেন, "বাংলার রাজ্যপাল পদে সিভি আনন্দ বোসের নিয়োগকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি ৷" প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষও ৷ বঙ্গ বিজেপির এই প্রাক্তন সভাপতি বলেন "রাজ্যপাল হিসেবে ডঃ সিভি আনন্দ বোস খুব যোগ্য একজন ব্যক্তি । তিনি তাঁর কর্মজীবনে সমস্ত স্তরের কাজ করেছেন এবং খুব দক্ষ ভাবেই তিনি সবকটি দায়িত্ব পালন করেছেন । কেরালায় সমাজ এবং সাধারণ মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্প চালু করেছেন । তাই স্বাভাবিকভাবে একজন যোগ্য ব্যক্তি রাজ্যপাল হিসেবে রাজ্যে আসছেন । যদিও তিনি নিজে কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন, তবে পশ্চিমবঙ্গে এখন যে ডামাডোল পরিস্থিতি চলছে সেই ক্ষেত্রে উনি রাজ্যপাল হিসেবে আসাটা ইতিবাচক হবে বলেই আমার মনে হয় ।" তৃণমূলের তরফে এখনও কোনও সরকারি প্রতিক্রিয়া আসেনি । সবমিলিয়ে শেষমেশ এই নয়া রাজ্যপালের সঙ্গে মমতা বন্দোপ্যাধায়ের সরকারের সম্পর্কের সমীকরণ কী হয় সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল ।