দিল্লি, 14 ফেব্রুয়ারি: আজ 14 ফেব্রুয়ারি। ভালোবাসার দিন। তবে বছর দুই আগে ভালোবাসার রঙে রঙিন এই দিনটাকেই রক্তস্নাত হতে হয়েছিল। নিমেষে ভালোবাসার আনন্দ হাওয়ায় মিলিয়ে গিয়ে দেশজুড়ে উঠেছিল কান্নার রোল। পুলওয়ামায় পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের আত্মঘাতী হামলা কেড়ে নিয়েছিল 40টি তরতাজা বীর সৈনিককে। শহিদ জওয়ানদের মৃত্যুর জবাব দিয়েছে দিল্লি। সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে পাকিস্তানের মাটিয়ে ঢুকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে জঙ্গিশিবির। তবে কোনও প্রলেপই যথেষ্ট নয় দেশের সেই সাংঘাতিক বিপর্যয়ের ক্ষতে। সে জন্যই ভ্যালেন্টাইনস ডে-র আবহেও ভারতীয় সেনার সেই বলিদানকে ভোলেনি দেশ। দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় শহিদ জওয়ানদের কুর্নিশ জানিয়েছে নেটিজেন।
2019 সালের 14 ফেব্রুয়ারি। চেনা ছকেই ভালোবাসার হোলিতে রেঙেছিল দেশ। হঠাত্ই ঘটে ছন্দপতন। খবর আসে, জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলায় সিআরপিএফ-এর কনভয়ে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে জঙ্গিরা। 2,500 জওয়ানকে নিয়ে জম্মু থেকে শ্রীনগর যাচ্ছিল সিআরপিএফ-এর 78টি বাস। সেই সময় বোমাবোঝাই গাড়ি নিয়ে বাহিনীর কনভয়ের মাঝে ঢুকে পড়ে আদিল আহমেদ নামে আত্মঘাতী বিস্ফোরক। আচমকা তীব্র বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। মুহূর্তে নিথর হয়ে যায় 40টা প্রাণ। আহত হন বহু জওয়ান।
এই ঘটনার পর চুপ করে থাকেনি দিল্লি। দিনকয়েক বাদেই পাকিস্তানের মাটিতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়ে বালাকোটে জইশ শিবির গুঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় বাহিনী। পুলওয়ামার ঘটনার পর কূটনৈতিকভাবেও পাকিস্তানের উপর তীব্র চাপ সৃষ্টি করে দিল্লি। পাকিস্তানের মোস্ট ফেভারড নেশনের তকমা কেড়ে নেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক মহলেও বারবার এই নিয়ে সরব হয়ে পাকিস্তানকে কোণঠাসা করে ভারত।
2020 সালে প্রথম বর্ষপূর্তিতে পুলওয়ামার সিআরপিএফ প্রশিক্ষণ শিবিরের লেথপোরা ক্যাম্পে শহিদ 40 জন জওয়ানের নাম ও ছবি দিয়ে তৈরি হওয়া সমাধির উদ্বোধন করা হয়। পুলওয়ামার হামলায় শহিদ সিআরপিএফ-এর এএসআই মোহন লালকে এ বছরের সাধারণতন্ত্র দিবসে মরণোত্তর প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল ফর গ্যালান্ট্রি পুরস্কারে সম্মানীত করা হয়েছে। 2019 সালে আইডি বোঝাই গাড়িটি চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন মোহন লাল। তিনি তত্ক্ষণাত্ ওই গাড়ির চালককে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। তারপরই কনভয়ের অন্য বাসে ধাক্কা মারে আত্মঘাতী বিস্ফোরক।