উত্তরকাশী, 22 নভেম্বর: আজ সিল্কিয়ারা টানেলে আটকে থাকা শ্রমিকদের 11তম দিন ৷ শ্রমিকদের উদ্ধারে এবার টানেলটি উল্লম্বভাবে খোঁড়ার চেষ্টা করা হবে বলে জানা গিয়েছে ৷ এরই মধ্যে আশার কথা শোনালেন এনডিআরএফ-এর সেকন্ড ইন কম্যান্ড রবি এস বাধানি ৷
তিনি বলেন, "উদ্ধারকার্য ভালোভাবেই চলছে ৷ অনুভূমিকভাবে ড্রিলিং করা হচ্ছে ৷ আমি যতটুকু খবর পেয়েছি, তাতে আমরা ওই আটকে থাকা শ্রমিকদের খুব কাছেই আছি ৷ তবে ঠিক কবে তা হবে, সেই সময়ের কথা এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না ৷ আর এই কাজে সময় লাগবে ৷"
তিনি আরও জানিয়েছেন, আটকে থাকা শ্রমিকরা ভালো আছেন ৷ তাঁরা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথাও বলেছেন ৷ তাঁদের মনের জোর এখনও অটুট আছে ৷ বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন বা বিআরও কমান্ডার বিবেক শ্রীবাস্তব এদিন বলেন, "সিল্কইয়ারার কাছে প্রয়োজনীয় যন্ত্রগুলি পৌঁছে গিয়েছে ৷ সেখানে ড্রিলিং করার কাজও শুরু হয়েছে ৷ বারকোটের দিক থেকে খোঁড়াখুঁড়ির কাজও আজই শুরু হবে ৷"
এদিকে আন্তর্জাতিক টানেল বিশেষজ্ঞ আর্নল্ড ডিক্স বুধবার সকালে বলেন, "আমি শুধু চাই, আটকে থাকা 41 জন শ্রমিক বাড়ি ফিরুক, তাঁদের পরিবারের কাছে ফিরে যাক ৷" তবে কবে তা সম্ভব হবে, তা ঠিক বলতে পারেননি তিনি ৷ মঙ্গলবার টানেলের মধ্যে দিয়ে 6 ইঞ্চির একটি পাইপ বসানো হয়েছে ৷ সেই পাইপের মাধ্যমে এন্ডোস্কোপিক ক্যামেরা পাঠিয়ে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছে ৷ সোমবার রাতে ওই শ্রমিকদের গরম খিচুড়ি, ডাল দেওয়া হয়েছিল ৷ মঙ্গলবার রাতে 41 জন শ্রমিককে ভেজ পোলাও, মটর পনির, মাখন লাগানো চাপাটি দেওয়া হয় ৷
12 নভেম্বর ভোরে উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীতে নির্মীয়মান টানেলে ধস নামে ৷ টানেলের কিছুটা অংশ ভেঙে আটকে পড়েন শ্রমিকেরা ৷ সেই সময় পুলিশের হেড কনস্টেবল সুরেশ কুমারই প্রথম ব্যক্তি যিনি উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারায় নির্মীয়মান টানেলে পৌঁছেছিলেন ৷ উত্তরাখণ্ডের ধারাসু তানার গেনওয়ালা পুলিশ পোস্টে গত দেড় বছর ধরে কাজ করছেন তিনি ৷ এই থানা থেকে সিল্কিয়ারা টানেলের দূরত্ব 10 কিমি ৷ সংবাদসংস্থার কাছে তিনি জানান, সাইটে থাকা ইঞ্জিনিয়ার তাঁকে ফোন করে নির্মীয়মান টানেলে ধস নামার খবরটি দেন ৷ তারপর পুলিশর পক্ষ থেকে তিনিই প্রথম সাড়া দিয়েছিলেন ৷
পৌরি গাড়ওয়ালের বাসিন্দা সুরেশ কুমার বলেন, "তখন সকাল 8টা হবে ৷ আমি স্নান করছিলাম ৷ ফোনে খবরটা পেলাম ৷ সঙ্গে সঙ্গে আমার সঙ্গে একটি অধস্তন কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাই ৷" হেড কনস্টেবল গত মাসে টানেলটির অবস্থা দেখতে গিয়েছিলেন ৷ তখন সব ঠিকঠাকই ছিল ৷
এ নিয়ে কুমারের কথায়, "টানেলের মধ্যে 2 কিমি পর্যন্ত খোঁড়া হয়েছিল ৷ কাজকর্ম বেশ ভালোই চলছিল ৷ এরকমটা যে হবে, তা কখনও ভাবতে পারিনি ৷" তবে একই সঙ্গে তাঁর আক্ষেপ, টানেল ধসের ঘটনাটি ঘটেছিল ভোর 5.30টা নাগাদ ৷ আর পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে খবরটা পৌঁছতে কিছুটা দেরি হয়ে গিয়েছিল ৷ ঘটনাস্থলে গিয়ে হেড কনস্টেবল সুরেশ কুমার কী দেখলেন ? আমি দেখলাম টানেলের মধ্যে 200 মিটার পর্যন্ত শুধু ধ্বংসস্তূপ ৷ ভিতরে যাওয়ার রাস্তাটাই বন্ধ করে দিয়েছে ৷ আমি থানায় আমার শীর্ষ কর্তাদের খবর দিলাম ৷ তড়িঘড়ি উদ্ধারকারী দল টানেলে পৌঁছে গিয়েছিল ৷
আরও পড়ুন:
- 'মা ভালো আছি, চিন্তা করো না', আশ্বস্ত করলেন সিল্কিয়ারার টানেলে আটকে পড়া বাংলার শ্রমিক
- প্রকাশ্যে সিল্কিয়ারা টানেলে আটকে থাকা 41 জন শ্রমিকের ছবি-ভিডিয়ো
- সিল্কিয়ারা টানেলে 10 দিন! সোমবার রাতে গরম খিচুড়ি-ডাল পেলেন আটকে থাকা শ্রমিকরা