আহমেদাবাদ, 20 এপ্রিল: 2002 সালের নরোদা গাম হত্যাকাণ্ডে বিজেপি বিধায়ক মায়া কোদনানি এবং বজরং দলের প্রাক্তন নেতা বাবু বজরঙ্গি-সহ সব অভিযুক্তকে বৃহস্পতিবার বেকসুর খালাস করল গুজরাতের বিশেষ আদালত ৷ 11 জনকে হত্যার অভিযোগ ছিল 69 জনের বিরুদ্ধে ৷ তাঁদের সবাইকে বেকসুর খালাস করেছে আদালত ৷
2002 সালের 28 ফেব্রুয়ারি আহমেদাবাদ শহরের নরোদা গাম এলাকায় সাম্প্রদায়িক হিংসায় প্রাণ গিয়েছিল 11 জনের ৷ তার ঠিক এক দিন আগে গোধরার ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডে অযোধ্যা থেকে ফেরা 58 জন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল ৷ তারই প্রতিবাদে 28 তারিখ বনধের ডাক দেওয়া হয়েছিল ৷ সেই দিনই হিংসার ঘটনায় মৃত্যু হয় 11 জনের ৷
উল্লেখ্য, মামলার সব অভিযুক্ত বর্তমানে জামিনে রয়েছেন । মামলার মোট 84 অভিযুক্তের মধ্যে 18 জনের মৃত্যু হয়েছে । বিচার চলাকালীন সরকার পক্ষের প্রায় 182 জন সাক্ষীর বক্তব্য পরীক্ষা করা হয় । ভারতীয় দণ্ডবিধির যে ধারাগুলির অধীনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা চলছিল সেগুলি হল, 302 (খুন), 307 (খুনের চেষ্টা), 143 (বেআইনি সমাবেশ), 147 (দাঙ্গা), 148 (মারাত্মক অস্ত্রে সজ্জিত দাঙ্গা), 120 (বি) ( অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র), এবং 153 (দাঙ্গার জন্য উস্কানি) । এ সব অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ।
বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) দ্বারা দাখিল করা চার্জশিটের উপর ভিত্তি করে বিশেষ বিচারক এসকে বাক্সি বৃহস্পতিবার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেন । 2002 সালের নয়টি বড় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মামলাগুলির মধ্যে নরোদা গামে গণহত্যা ছিল অন্যতম যার তদন্ত করছিল সিট এবং বিশেষ আদালতে এই মামলার শুনানি চলছিল । নরোদা গাম হত্যাকাণ্ডে 2010 সালে শুরু হওয়া 13 বছরের দীর্ঘ বিচারের সময় সরকার পক্ষ 187 জন এবং ডিফেন্স 57 জন সাক্ষীকে পরীক্ষা করে । ছয় বিচারক বিচারের সভাপতিত্ব করেছেন বলে জানিয়েছেন বিশেষ প্রসিকিউটর সুরেশ শাহ ।
2017 সালের সেপ্টেম্বরে, শীর্ষ বিজেপি নেতা (বর্তমানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) অমিত শাহ মায়া কোদনানির পক্ষে ডিফেন্সের সাক্ষী হিসেবে হাজির হন । তিনি যে নরোদা গামে যেখানে গণহত্যা হয়েছিল সেখানে নয়, সে দিন গুজরাতের বিধানসভায় উপস্থিত ছিলেন এবং পরে সোলা সিভিল হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন, তার প্রমাণ দেওয়ার জন্য অমিত শাহকে যাতে তলব করা হয়, আদালতের কাছে সেই অনুরোধ করেছিলেন 67 বছরের কোদনানি ৷
কোদনানি সাম্প্রদায়িক হিংসার সময় নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন গুজরাত সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন । নরোদা পটিয়া দাঙ্গা মামলায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে 28 বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল । নরোদা পটিয়ায় 97 জনকে হত্যা করা হয়েছিল । গুজরাত হাইকোর্ট পরে তাঁকে অব্যাহতি দেয় ।
আরও পড়ুন:গোধরা-পরবর্তী দাঙ্গায় অভিযুক্ত 22 জনকে বেকসুর খালাস করল আদালত