আগ্রা, 20 নভেম্বর: শাশুড়ি ও পুত্রবধূর অম্লমধুর সম্পর্ক নতুন কিছু নয় ৷ বিবাদের অন্যতম কারণ অনেক ক্ষেত্রেই হয় বউমার পোশাক ৷ বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায়, বর্তমান যুগের আধুনিক পুত্রবধূর হালফ্যাশনের পোশাককে ভালো চোখে দেখেন না আগেকার দিনের শাশুড়ি মা ৷ সেখান থেকেই হয় সমস্যার সূত্রপাত ৷ তবে আগ্রার এক পরিবারে একেবারে উলটপুরাণ ৷ সেখানে শাশুড়ি-বউমার বিবাদের কারণ সম্পূর্ণ উলটো ৷ জিনস-টপ পরা আধুনিক শাশুড়ি তাঁর পুত্রবধূর মাথায় ঘোমটা দেওয়ার অভ্যেস একেবারেই পছন্দ করেন না ৷ পুত্রবধূর অভিযোগ, শাশুড়ি তাঁকে শাড়ি ছেড়ে জিনস পরার জন্য জোরাজুরি করেন এবং তা না-পরলে মারধরও করেন ৷ এই পরিস্থিতি সহ্য করতে না পেরে ওই পুত্রবধূ পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন ৷
আগ্রা পুলিশ লাইনে আয়োজিত পারিবারিক পরামর্শ কেন্দ্রের সাহায্য নেন ওই পুত্রবধূ । সেখানকার কাউন্সেলর উভয় পক্ষের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে শোনেন । তবে বিষয়টির নিষ্পত্তি না হওয়ায় পরবর্তী তারিখ দেওয়া হয়েছে ৷
ঘটনাটি হরিপর্বত থানা এলাকার । দেড় বছর আগে হরিপর্বত থানা এলাকার এক যুবকের সঙ্গে ইতমাদপুর থানা এলাকার এক তরুণীর বিয়ে হয় । ওই যুবক একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন । স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদের বিষয়টি পুলিশের কাছে পৌঁছলে পুলিশ তাঁদের পারিবারিক পরামর্শ কেন্দ্রে পাঠায় । রবিবার স্বামী, স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা পুলিশ লাইনে পারিবারিক কেন্দ্রে পৌঁছন । সেখানে তাঁদের থেকে বিবাদের কারণ শুনে হতবাক হয়ে যান কাউন্সেলর ৷
পুত্রবধূ কাউন্সেলরকে বলেন যে, "আমি গ্রামীণ পরিবেশে বড় হয়েছি । সেখানে বিয়ের পর শাড়ি পরা হয়, তাই আমিও শাড়ি পরতে পছন্দ করি । কিন্তু, শাশুড়ি আমার শাড়ি পরা পছন্দ করেন না । শাড়ি পরার জন্য আমাকে নিয়ে ঠাট্টা করেন । ঝগড়া করেন । তিনি আমাকে জিনস এবং টপ পরতে বলেন ৷ অথচ, আমি জিনস এবং টপ পরতে পছন্দ করি না । আমি আমার শাশুড়িকে জিনস পরতে নিষেধ করেছি । এ নিয়েও শাশুড়ির সঙ্গে ঝগড়া হয় । আমি যখনই আমার স্বামীকে এ বিষয়ে বলি, তিনিও তাঁর মায়ের পক্ষ নেন । তিনিও আমাকে জিনস টপ পরতে বলেন । এই নিয়ে প্রতিবাদ করলে স্বামী আমাকে মারধর করেন ।"
এ বিষয়ে কাউন্সেলর অভিযোগকারী মহিলার স্বামীর সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, স্ত্রী তাঁর মায়ের কথা শোনেন না । এমনকি তাঁরা যে পোশাক পরতে বলেন, সেটাও পরেন না ৷ এ নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্কাতর্কি হয় । নিত্যদিনের ঝগড়া-বিবাদে তিনি বিরক্ত বলে জানান ওই মহিলার স্বামী ।
পারিবারিক কাউন্সেলিং সেন্টারের নোডাল এসিপি সুকন্যা শর্মা বলেন যে, স্বামী-স্ত্রী, শাশুড়ি ও পুত্রবধূ এবং পারিবারিক সমস্যার ক্ষেত্রে কাউন্সেলিং সেন্টারে আসা লোকেদের বিরোধ মিটমাট করার চেষ্টা করা হয় । রবিবার সামনে এল এমন ঘটনা যা আগে শোনেননি তিনি ৷ পুত্রবধূর শাড়ি পরা নিয়ে শাশুড়ির আপত্তির ঘটনা ৷ উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা সম্ভব হয়নি । তাই আগামী তারিখে তাঁদের ডাকা হয়েছে বলে জানান নোডাল এসিপি ৷
আরও পড়ুন:
- 6 বছরের সমস্যা মিটল মাত্র 20 দিনে, শ্বশুরের ডেথ সার্টিফিকেট পেলেন পুত্রবধূ
- হুগলিতে থেকেও মন পড়ে কাতারে, এমবাপেদের জন্য রাত জাগছেন চন্দননগরের ফরাসি পুত্রবধূ