নয়াদিল্লি, 24 সেপ্টেম্বর :রাজধানীর রোহিণী আদালতের মধ্যেই খুন করা হয়েছে গ্যাংস্টার জিতেন্দ্র ওরফে গোগীকে ৷ অভিযোগ, এই ঘটনায় জড়িত সুনীল ওরফে টিল্লু ৷ কিন্তু কেন এই ঘটনা ঘটল ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে যে দুই গ্যাংস্টার গোগী ও টিল্লুর মধ্যে লড়াই আজকের নয় ৷ দীর্ঘদিন ধরে চলছে এই লড়াই ৷ গত এক দশকে এই লড়াইয়ের জেরে দুই পক্ষের অন্তত 20 জন নিহত হয়েছেন ৷
আরও পড়ুন :Delhi Rohini court : দিল্লির রোহিণী কোর্টে এলোপাথাড়ি গুলি, নিহত অন্তত তিন
পুলিশ সূত্রে খবর, টিল্লু তাজপুর গ্রামের বাসিন্দা ৷ ওই গ্যাংওয়ারকে মূলত নেতৃত্ব দেয় টিল্লু ৷ সে দীর্ঘদিন ধরে জেলে বন্দি ৷ তার বিপক্ষে থাকা গোগীও দীর্ঘদিন জেলবন্দি ছিল ৷ কিন্তু পরে পালিয়ে যায় ৷ তবে 2020 সালে দিল্লি পুলিশের কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স টিম তাকে আবার গ্রেফতার করে ৷
এর আগে 2016 সালে পানিপুথের পুলিশ অবৈধ অস্ত্র-সহ তাকে গ্রেফতার করেছিল ৷ কিন্তু কয়েকমাস পরে সে পুলিশি হেফাজত থেকে পালিয়ে যায় ৷ তার পর গোগীর দল টিল্লুর অনেক ছেলেদের খুন করে ৷ গোগীকে ধরিয়ে দিতে পারলে 8 লক্ষ টাকার পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছিল ৷ দিল্লি পুলিশের মোস্ট ওয়ান্টেড এই দুষ্কৃতীকে ছ’মাসের চেষ্টায় গ্রেফতার করা হয় ৷
আরও পড়ুন :punjab terror suspects arrested : তিন সন্দেহভাজন জঙ্গিকে গ্রেফতার করল পঞ্জাব পুলিশ
পুলিশ জানিয়েছে, তাজপুরের বাসিন্দা টিল্লুর আসল নাম সুনীল মান ৷ তার পাশের গ্রামেই বাড়ি জিতেন্দ্রর ৷ আগে তারা ভাল বন্ধু ছিল ৷ সর্বত্র তাদের একসঙ্গেই দেখা যেত ৷ কিন্তু 2012 সালে একটি কলেজের ভোটকে কেন্দ্র করে তাদের বন্ধুত্ব বদলে যায় শত্রুতায় ৷ তারা দু‘জন প্রতিপক্ষ হয়ে পড়ে ৷ সেখান থেকেই মারামারির সূত্রপাত ৷
তখন জিতেন্দ্র ও তার দলবদল টিল্লুর দলের কুণালকে ব্যাপক মারধর করে ৷ তার পর থেকে শুরু হয় দুই পক্ষের লড়াই ৷ তাতেই গত একদশকে নিহত হয়েছে 20 জন ৷
আরও পড়ুন :Himachal heavy rain : প্রবল বর্ষণে হিমাচল প্রদেশে মৃত 10, ক্ষতি হাজার কোটি
এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে যে অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, সেগুলি হল-
- 2015 সালের 21 জানুয়ারি আদর্শনগরে টিল্লুর সঙ্গী রাজুকে খুন করা হয় ৷
- 2015 সালের 23 ফেব্রুয়ারি টিল্লুর গ্যং অরুণ কমান্ডোকে হত্যা করে ৷ সেই ঘটনায় মনজিৎ নামের একজনও মারা যায় ৷
- টিল্লুর দল সোনিপতের নিরঞ্জন মাস্টারকে খুন করে ৷ নিরঞ্জন গোগীর দলের লোক ছিল ৷
- নিরঞ্জন মাস্টারের খুনের বদলা নেয় গোগী ৷ হত্যা করা হয় সুমিত নামে একজনকে ৷ সুমিত ছিল টিল্লুর বিশেষ সহযোগী বিকাশ আলুর ভাই ৷ সুমিতকে আলিপুর নামে একটি জায়গায় খুন করা হয় ৷
- এর পর গোগী টিল্লুর দলের দেবেন্দ্র প্রধানকে খুন করে ৷ এই ঘটনার বদলা নিয়ে গোগীর দলের আইনি বিষয় দেখা অঙ্কিতকে খুন করা হয় ৷
- গোগীর গ্যাং স্বরূপনগরে খুন করে দীপক ওরফে বান্টিকে ৷
- গোগী হর্ষিতা দাহিয়া নামে এক গায়িকাকে খুন করে ৷ তিনি একটি খুনের ঘটনায় সাক্ষী ছিলেন ৷
- গোগীর গ্যাং প্রশান্ত বিহারে রবি ভরদ্বাজ ওরফে বান্টিকে খুন করে ৷
- 2018 সালের 16 মার্চ টিল্লুর সহযোগী অমিত দাবং পীতমপুরায় মোনু নেপালিকে হত্যা করে ৷ সেখানে ব্যাপক গুলি চালানো হয় ৷
- 2018 সালের 18 জুন বুড়ারি এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গুলির লড়াই হয় ৷ তাতে দু’জন দুষ্কৃতী মারা যায় ৷ তাছাড়া এক মহিলা-সহ দু’জন সাধারণ মানুষ নিহত হন ৷