তেনকাসি (তামিলনাড়ু), 23 নভেম্বর: 55 বছর ধরে যা ছিল অজানা, ইন্টারনেট (Internet) আর গুগলের (Google) সৌজন্যে তারই খোঁজ পাওয়া গেল নিমেষে ! 55 বছর পর ভিনদেশে গিয়ে বাবার কবর 'আবিষ্কার' করলেন তাঁর প্রৌঢ় ছেলে ! তামিলনাড়ুর (Tamil Nadu) তেনকাসির একটি গ্রামের বাসিন্দা তিরুমারান একটা সময় শিক্ষকতা করতেন ৷ বর্তমানে অবসর নিয়েছেন ৷ তাঁর একটি অনাথ আশ্রমও রয়েছে ৷ সেখানকার আবাসিকের সংখ্যা 70-এরও বেশি ৷
তিরুমারানের বাবা রামচন্দ্রন পুঙ্গুন্দ্রন এবং মা রাধাভাইও শিক্ষকতা করতেন ৷ তবে, তাঁদের কর্মক্ষেত্র ছিল মালয়েশিয়া (Malaysia) ৷ পরবর্তীতে সেখানেই মৃত্যু হয় রামচন্দ্রনের ৷ তিরুমারান তখন নেহাতই শিশু ৷ বয়স মাত্র 6 মাস ৷ এরপর 3 বছর বয়স পর্যন্ত মালয়েশিয়াতেই ছিলেন তিরুমারান ৷ পরবর্তীতে দেশে ফেরেন তিনি ৷ তিরুমারান যখন কলেজে পড়তেন, তখন তাঁর মায়েরও মৃত্যু হয় ৷
আরও পড়ুন:আয়কর ভবনের ভিতরেই চাকরি প্রতারণা চক্র ! গ্রেফতার মহিলা
তিরুমারানের একটাই আক্ষেপ ছিল, তিনি কোনও দিন তাঁর বাবার কবর চাক্ষুস করেননি ৷ বরং তাঁর আশঙ্কা ছিল, এত বছরে হয়তো সেই কবর নষ্ট হয়ে গিয়েছে ! সেই ভুল ভাঙাল গুগল ! সৌজন্য়ে তিরুমারানের অনাথ আশ্রমেরই এক ছাত্র ৷ সেই ছাত্রই তাদের মাষ্টারমশাইকে জানায়, গুগলের সাহায্যে তাঁর বাবার কবর খুঁজে বের করা সম্ভব ! এবং সেটা সে করেও দেখায় ৷ ইন্টারনেটের মাধ্যমে মালয়েশিয়ার যে অঞ্চলে তিরুমারানের পরিবার থাকত, সেখানকার কবরস্থানগুলির খোঁজ শুরু হয় ৷ তাতেই মেলে সাফল্য ৷ তিরুমারান শুধুমাত্র সেই কবরস্থান নয়, ছবি ও নাম-সহ তাঁর বাবার কবরটিই খুঁজে পান ! এরপরই তড়িঘড়ি মালয়েশিয়া পাড়ি দেন তিরুমারান ৷ পৌঁছে যান সেই কবরস্থানে, যেখানে আজও চিরঘুমে শায়িত রয়েছেন তাঁর বাবা !
এদিকে, এই ঘটনার কথা পৌঁছে গিয়েছে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনের (MK Stalin) কানেও ৷ তিনি তিরুমারানকে তাঁর এই 'আবিষ্কারের' জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন ৷ একটি টুইটে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, "অনুভূতি দিয়ে মানুষ তৈরি হয় ৷ আর আমাদের সারা জীবনটাই আদতে ভালোবাসার খোঁজে থাকা একটি যাত্রা ৷" একইসঙ্গে সমাজের জন্য তিরুমারান যে কাজ করে চলেছেন, তাকেও কুর্ণিশ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
এই প্রসঙ্গে তিরুমারানের বক্তব্য হল, "আমার বাবা বাঁচার জন্যই মালয়েশিয়া গিয়েছিলেন ৷ কলেজের পড়াশোনা শেষ করে মালয়েশিয়ায় গিয়ে শিক্ষকতা করেন ৷ কিন্তু, সেখানে তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন এবং মারা যান ৷ তার কয়েক বছর পর আমি আর আমার মা দেশে ফিরে আসি ৷ আমি কোনও দিন আমার বাবাকে দেখিনি ৷ জীবনে একবার অন্তত আমি আমার বাবার কবরে যেতে চেয়েছিলাম ৷ গুগলের সৌজন্যে আমার সেই আশা পূর্ণ হল ৷"