গুমলা (ঝাড়খণ্ড), 6 এপ্রিল: বাসে সওয়ার তিন যাত্রী ৷ সঙ্গে চার-চারটি ঢাউস এবং একটি ছোট আকারের ব্যাগ ৷ আর সেই ব্য়াগেই ভরতি ছিল নগদ ! সব মিলিয়ে পরিমাণ 7 কোটি টাকারও বেশি ! কিন্তু, সেই বিপুল অর্থ নিয়ে আর গন্তব্যে পৌঁছানো হল না তিন মূর্তির ! তার আগেই পুলিশের হাতে বমাল ধরা পড়ে গেলেন একজন ! গত মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটে ঝাড়খণ্ডের গুমলায় ৷ পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি প্রকাশ্যে আনা হয় বুধবার ৷ ঘটনায় ধৃত ব্যক্তির নাম মহম্মদ ফরিদ ৷ তাঁর দুই সঙ্গী হলেন মহম্মদ কাইফ এবং বিশাল কুমার ৷ যদিও, শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, এই দু'জনকে পুলিশ পাকড়াও করতে পারেনি ৷ তার আগেই ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেন দুই অভিযুক্ত ৷ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনই আদতে ওড়িশার রৌরকেলার বাসিন্দা ৷
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, অভিযুক্ত তিনজন দিল্লি থেকে ফিরছিলেন ৷ গন্তব্য ছিল ওড়িশা ৷ কিন্তু, সোজা পথে না ফিরে নানা মুলুক ঘুরে, এ বাস, ও বাস পালটে 'ঘরে' ফিরছিলেন তাঁরা ! পুলিশের হাত থেকে বাঁচতেই এত কসরত করা হচ্ছিল ৷ কিন্তু, তাতেও শেষরক্ষা হল না ৷ এই বিপুল পরিমাণ নগদ উদ্ধার হওয়ার পরই আয়কর বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে গুমলা পুলিশ ৷ বুধবার বিকেলে গুমলায় আসেন আয়কর বিভাগের পাঁচজন প্রতিনিধি ৷ পুলিশের কাছ থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে আলাদাভাবে ঘটনার তদন্ত শুরু করেন তাঁরা ৷
পুলিশ জানিয়েছে, একটি সাধারণ বাসে চড়ে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে যাচ্ছিলেন মহম্মদ ফরিদ ও তাঁর সঙ্গীরা ৷ এটাই ছিল তাঁদের যাত্রার অন্তিম পর্যায় ৷ রৌরকেলা পৌঁছতে ঝাড়খণ্ডের লোহার ডাঙা থেকে বাসে উঠেছিলেন তাঁরা ৷ কিন্তু, তাঁদের সফরের খবর আগে থেকেই পৌঁছে যায় পুলিশের কাছে ৷ গুমলার পুলিশ সুপার এহতেশাম ওয়াকুয়ারিব নিজে সংশ্লিষ্ট রুটে নাকাতল্লাশির বন্দোবস্ত করেন ৷ তাতেই 'মাছ জালে পড়ে' ! সংশ্লিষ্ট বাসে উঠে তল্লাশি চালানোর সময় পাঁচটি ব্যাগ দেখে সন্দেহ পুলিশকর্মীদের ৷ সেই ব্য়াগ খুলতেই চোখ কপালে ওঠে তাঁদের ৷ সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় মহম্মদ ফরিদকে ৷ কিন্তু, তাঁর দুই সঙ্গী পালিয়ে যেতে সক্ষম হন ৷ তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ ৷
আরও পড়ুন:লালুর পরিবারে ইডি'র অভিযান, উদ্ধার 1 কোটি নগদ ও বিপুল সোনা
এদিকে, গুমলায় পৌঁছানোর পরই স্থানীয় থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেন আয়কর আধিকারিকরা ৷ পরবর্তীতে পুলিশ সুপার ও মহকুমাশাসকের উপস্থিতিতে ধৃত মহম্মদ ফরিদকে জেরা করেন তাঁরা ৷ উদ্ধার হওয়া টাকা যাতে আপাতত স্থানীয় কোনও সরকারি ব্যাংকে রাখা যায়, তা নিয়ে কথাবার্তা চলছে ৷ জানা গিয়েছে, উদ্ধার হওয়া টাকার সবটুকুই রয়েছে 2 হাজারের নোটে ৷ কিন্তু, কোথা দিয়ে এই বিপুল অর্থ এল, আর কেনই বা সেগুলি ওড়িশা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সেই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত পুলিশ বা আয়কর বিভাগ কোনও তথ্য দেয়নি ৷