বালাসোর, 2 জুন: ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে হাওড়া-করমণ্ডল এক্সপ্রেস। ওড়িশার বাহাঙ্গা স্টেশনের কাছে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মালবাহী গাড়িতে ধাক্কা চেন্নাইগামী এই এক্সপ্রেসের । দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে এক্সপ্রেসের বেশ কয়েকটি কামরা । প্রথম তিনটি কামরা ছাড়া সবকটি কামরাই লাইন থেকে ছিটকে পড়ে। ঘটনার ভয়াবহতায় মৃতের সংখ্যা বাড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে । ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে উদ্ধারকারী দল । চালু করা হয়েছে হেল্পলাইন নম্বর । জানা গিয়েছে, শালিমার স্টেশন থেকে শুক্রবার দুপুরে ছেড়েছিল 12841 আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস। প্রশ্ন উঠেছে রেল গাফিলতি নিয়েও । একই সময়ে একই লাইনে দুটি গাড়ি কি করে চলে আসে তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন । এর আগেও এমন ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা রেলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল । ফিরে দেখা সেই সব ট্রেন দুর্ঘটনাগুলি ।
1. জুন 6, 1981 - বিহার রেল দুর্ঘটনা - বিহারের সহরসার কাছে বাঘমতি নদীতে পড়ে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন। দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন আনুমানিক 500 থেকে 800 জন যাত্রী । এটি ভারতে তথা বিশ্বের সবচেয়ে ভয়নাক ট্রেন দুর্ঘটনাগুলির মধ্যে একটি। এই দিন প্রচন্ড বৃষ্টির কারণে ট্রেনের চালক এমনিতেই পরিষ্কার দেখতে পারছিলেন না । জানা গিয়েছিল, ব্রীজের উপর একটি মহিষ চলে আসায় আচমকাই ব্রেক মারতে ট্রেনটি নদীতে পড়ে যায়।
2. অগস্ট 20, 1995- ফিরোজাবাদ রেল দুর্ঘটনা - উত্তর প্রদেশের ফিরোজাবাদের কাছে দিল্লিগামী পুরুষোত্তম এক্সপ্রেস লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা কালিন্দী এক্সপ্রেসে ধাক্কা মারে । এই দুর্ঘটনায় প্রায় 350 জন যাত্রী প্রাণ হারিয়েছিলেন । জানা গিয়েছিল, লাইনে ত্রুটির কারণে দাঁড়িয়েছিল কালিন্দী এক্সপ্রেস । অন্যদিকে, পুরুষোত্তম এক্সপ্রেসকে সেই লাইনে ঢোকার ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হয়েছিল কন্ট্রোল রুম থেকে । দ্রুত গতিতে আসা পুরুষোত্তম এক্সপ্রেস এরপরেই ধাক্কা মারে দাঁড়িয়ে থাকা কালিন্দী এক্সপ্রেসে ।
3. অগস্ট 2, 1999- আওয়াধ-আসাম এক্সপ্রেস ও ব্রহ্মপুত্র মেল-এর সংঘর্ষ -উত্তর সীমান্ত রেলওয়ে কাটিহার বিভাগের গাইসালে আওয়াধ-আসাম এক্সপ্রেস এবং ব্রহ্মপুত্র মেইলের সংঘর্ষে 268 জন নিহত এবং 359 জন আহত হয়েছিলেন। ব্রহ্মপুত্র মেইল ভারতীয় সেনা ও সার্ভিসম্যানদের নিয়ে আসাম থেকে সীমান্তের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল । অন্যদিকে, আওয়াধ-আসাম এক্সপ্রেস পাড়ি দিয়েছিল গুয়াহাটির উদ্দেশ্যে । ট্রেনটি গুয়াহাটির কাছে গইসল স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিল । অন্যদিকে সিগনালিংয়ের সমস্যার কারণে একই লাইনে চলে আসে ব্রহ্মপুত্র মেইল । দুর্ঘটনার ভয়াবহতা এমনই ছিল যে আওয়াধ-আসাম ট্রেনের ইঞ্জিনটি অনেক দূরে ছিটকে পড়েছিল । এমনকি দুটি ট্রেনের যাত্রীরা লোকালয় থেকে অনেক দূরে ছিটকে পড়েছিলেন ।
প্রশ্ন উঠেছে রেল গাফিলতি নিয়েও । একই সময়ে একই লাইনে দুটি গাড়ি কি করে চলে আসে তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন । এর আগেও এমন ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা রেলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল ।